কিশোর ছেলেটির হাতে মোটর
সাইকেলটি তুলে দিয়েই পরম আনন্দে চোখের অশ্রু মুছলেন মিসেস শাহ। ছেলেটার কত দিনের
চাওয়া একটা মোটর সাইকেল! মিস্টার শাহ নিজেও খুবই আনন্দিত।
“টাকা পয়সা আল্লাহপাক আমাকে যতেষ্ট দিয়েছেন, তোকে একটা মটর সাইকেল কিনে দেয়া কোন ব্যপারই না! সাবধানে চালাবি বাবা” বলেই মিস্টার শাহ ছেলের হাতে চাবি তুলে দেয়।
গভীর আনন্দে ছেলে বাবা মাকে কদমবুছি করল। ছেলের চোখে-মুখে সে কি আনন্দ!
তীব্রগতিতে সামনে মোটর
সাইকেল আসতে দেখে জালুর হাত কাঁপছে। পুরানো ভাঙ্গা সাইকেলের পিছনে ২ ক্যান ভর্তি
দুধ। মিষ্টির দোকানে সে দুধ সাপ্লাই দেয়। হালকা বাতাশও আছে। সরু রাস্তা।
“আই এ্যাম সরি... আই এ্যাম সরি.. আই এ্যাম সরি..” বলেই মিঃ ও মিসেস শাহের ছেলে মোটর সাইকেল নিয়ে দ্রুত চলে গেল!
মোটর সাইকেলের বাম্পারের আঘাতে সাইকেলটি উল্টে গিয়ে ক্যান ভর্তি দুধ মাটিতে মিশে গেছে। টাল হয়ে গেছে সাইকেলের পিছনের চাকা। এখন ঘরে বা বাজারে ফেরাই ভিষন কষ্টের! জালু অপলক চোখে মোটর সাইকেল দিগন্তে মিশে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকল।
মিসেস শাহ ভিষন ব্যস্ত।
ছেলের মোটর সাইকেল কেনা উপলক্ষে একটা পার্টি আয়োজন করা হয়েছে। ছেলের বন্ধুরা
এসেছে। বেশ আয়োজন করতে হয়েছে।
“আন্টি চিকেন ফ্রাই এবং তেহারীটা খুবই চমৎকার হয়েছে।” এক বন্ধু বলে উঠল।
“দই, রসমালাই এবং প্যারা সন্দেশ আছে কিন্তু! একটু কম করে খা” আরেক বন্ধু বলল।
“না
না না তোমরা যত খুশী খাও কোন সমস্যা নেই।” মিসেস শাহ বলে উঠলেন।
জালু ভাঙ্গা সাইকেল নিয়ে
বাড়ি ফিরেছে।
“চাউল
কিনতে পার নাই, সমস্যা নাই। তোমার যে কোন
ক্ষতি হয় নাই এটাই আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া।” জালুর স্ত্রী বলল।
“ছেলে
মেয়ে ও মাকে এখন কি খেতে দিব?”
জালু
জানতে চায়।
“চিন্তা
করো না। পশের বাড়ি থেকে দুই কেজি চাউল ধার করে নিয়ে আসি”
জালুর স্ত্রী চাউল ধার
করতে যায়। কালকে কিস্তি আছে,
সাইকেলটাও
মেরামত করতে হবে! চিন্তা করতে করতে জালু তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন