জীবিতকে
তুষ্ট করার মতো সময়
আমার নেই,
মৃতকে
ভালোবাসার সময় আমার অনন্তকাল।
তাই
হয়ত মায়ের গন্ধ, মায়ের উত্তাপ সবই নিকষ অন্ধকারে
কেবল একটা শব্দ হয়ে
জাপটে ধরেছে আমায়।
মা বলত আমায়--
"--আমি
আসব তোর কাছে। ঠিক
আসব, দেখিস।
আর যদি না আসি,
বুঝবি আত্মা আসতে পারে না।
তারা
স্মৃতির খামে লেগে থাকে
জলছবি হয়ে।"
আমি
বিশ্বাস করতাম মা'র কথা।
মা তো কখনও মিথ্যা
কথা বলত না।
মায়ের
মুখে রাগ মেশান খুশি
দেখেই বুঝতাম মায়ের শরীর মন কখন
কখন ঘরের আঙ্গন ছাড়িয়ে
চলে যেত জগতের আনন্দ
যজ্ঞে।
সবাই
খুব অবাক হয়েছিল দেখে,
যে যতটা ভেঙে পড়ার
কথা আমার তার তুলনায়
আমি যেন অনেক বেশি
শক্ত।
আসলে,
মা'র ওই সান্ত্বনাটাই
ছিল আমার শক্তি।
মাতৃগর্ভ
থেকে যখন উলঙ্গ ভূমিষ্ট
হয়েছিলাম নিজেকে অগ্নিশুদ্ধ করে ফিরিয়ে এনেছিলাম
তোমার চরণে।
জানতাম, মা যখন বলেছে
ঠিক আসবে।
আমাদের
আবার দেখা হবে, কথা
হবেই।
অন্ধকারে
অস্পষ্ট অনুভব করতাম মায়ের গোপন হাসি মুখ।
মা তো আমাকে 'আসি'
বলেও গেল না। তা
কেমন করে হয়?
আমাদের
অভিমানও চুপ করে শুয়ে
থাকতো মাটির গোপনে।
রাতের
পর রাত জেগে থেকেছি
আমি।
যদি
মা আসে!
মা তো ! এসে যদি
দেখে আমি ঘুমিয়ে আছি,
হয়তো ডাকবে না। চলে যাবে।
খুব
ইচ্ছে করতো দু'হাত ভরে ভাসিয়ে
দিতে চরাচরের সমস্ত পাপ, অতৃপ্ত মায়া
তোমার চরণে।
জীবনের
গানে কান্না জমলে মা আসতো
আঁচল নিয়ে পাখিদের গান
হয়ে।
আজ একা একা ভিজে
যাওয়া অন্ধকারে আমি ভাবছি
তোমায় কি কোনোদিনও দিয়েছি
আমি আমার সকল শূন্য
করে ?
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন