কলকাতার কালী - অভিষেক ঘোষ

 


 

 

অতিমারী-আক্রান্ত শীতের শহরে সে দাঁড়িয়ে

এলো চুলে, খোলা পিঠে সবটুকু মড়া রোদ

শুষে নেয়, শত-শত ইমারত অক্লেশে ছাড়িয়ে !

 

তার রক্তস্নাত খড়্গ, মেখে নেয় সমস্ত শ্রবণীয় স্পর্শ

সারা গায়ে তার, উল্লসিত শহরের মায়াবী নিয়ন-প্রতিফলন

হতমান, বন্ধ্যা সময়ের কর্মহীন নাগরিক

কোলাহল ভুলে বিস্ময়ে চেয়ে থাকে

চেয়ে চেয়ে দেখে এক উলঙ্গ বিভীষিকা-কে

তার পদতলে নীল পৌরুষ, রূধির করতলে,

গাঢ় কৃষ্ণবর্ণ বক্ষে, মুন্ডমালা রক্ত-রঙে জ্বলে !

 

সে মেয়ের চাহনিতে কসমিক-রাগ,

সান্ধ্য শাঁখে জানায় যারা নম্র অনুরাগ,

তাদের প্রতি দৃষ্টিপাতে সেই কালো মেয়ের -

দু-চোখে গড়িয়ে আসে, পুরাণ-মথিত জল

তৃষিত মানুষ প্রসারিত করে, বিপন্ন করতল

 

আমার তখন...

বুকের মধ্যে আকাশ - বিয়োগ দলছুট মেঘ,

মাথার ভিতরে মাল্টিপ্লায়েড শত উদ্বেগ,

যোগেতে ভাগেতে প্রাপ্তির খাতা শূন্য যখন,

সাবস্টিটিউট লাভের হদিশে নেশাতুর মন !

 

সেই নারী তখন,

তার কালো, কঠোর দুই হাতে,

তৈরি করে প্রশস্ত এক ব্ল্যাক হোল,

আমি.. আমার শহর, আমার মন-খারাপ

লজ্জা-ভয়, সবটুকু নিয়ে সেই প্লাজমা-স্বরূপা 

কবন্ধ অন্ধকারে প্রবেশ করি

সেই মেয়ে, তখন খড়্গ আর কাটা মুন্ডু ফেলে,

প্রচন্ড হিপনোটিক উল্লাসে চার হাতে হাততালি দিলে

সভ্যতার পঁয়ষট্টি ডেসিবেলের মেকি অভিমান 

খান-খান হয়ে যায়

 

 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন