মাঝরাতে ডোর বেলটা বেজে উঠতেই নড়ে উঠল ডঃ নীহার। একটু
গড়িমসি করতেই আবার বেল। ওফ্! রাতেও নিস্তার নেই। ডাক্তারদের
এই এক বিড়ম্বনা। উঠে
দরজার কাছে গিয়ে প্রশ্ন করল,
- কে?
- কাকু, আমি নীলাশ্ম।
- তুই? এত রাত্রে?
নীলাশ্ম, ডঃ নীহারের আসুস্থ দাদা নীলমণির ছেলে। মুমূর্ষু দাদার কথাটাই প্রথম মাথায়
এল। দাদার কিছু হল? নাকি অন্য কারও এমার্জেন্সি? মনটা ঘেঁটে গেল। কোন
অপরিচিত অনাত্মীয় এলে এত অস্থির অস্থির লাগে না।
দরজা খুলতেই একটা বড় বোকে হাতে হাসি মুখে নীল,
-হ্যাপি ডক্টরস ডে, কাকু।
-মানে?
- আজ
ফার্স্ট জুলাই, জান
না?
- আজ
তো ত্রিশ তারিখ?
- ঘড়িটা
দেখো। বারোটা বেজে গেছে।
- ওফ্! তোরা পারিসও। আমার
তো চিন্তায় ঘাম ছুটে গেছিল। আয়, বোস।
- না গো, আমি যাই।
- কোথায়
যাবি?
-
নিখিলেশ? তোমার কলেজে ইন্টার্ন করছে? ওরা আজ’ডক্টরস
ডে’সেলিব্রেট
করবে। আমাকে ইনভাইট করেছে। দেরি হয়ে গেল। যাই। বলে নীল হনহন করে চলে গেল।
দরজায় দাঁড়িয়েই ডঃ নীহার ভাবল, এই এক ঢং হয়েছে। রাত
বারোটা বাজতে না বাজতেই এদের দিন শুরু। যাক
তবু নিজেকে ডাক্তার ভেবে একটু আনন্দ হল বৈ কি। কিন্তু…
কিন্তু, এই যাঃ! নীলকে জিজ্ঞেস করা হল না তো, দাদা কেমন আছে? দরজার বাইরে মুখ বাড়িয়ে, “নীল, নীল” বলে দু'বার ডেকে থেমে গেল ডঃ নীহার। ততক্ষণে
নীল দৃষ্টির বাইরে।
ডঃ নীহারের চোখের সামনে তখন ’ডক্টরস ডে’-র সেলিব্রেশনে মত্ত
নীলের উল্লাস আর মুমূর্ষু দাদার হাঁপ ওঠা যন্ত্রণাকাতর মুখচ্ছবি। আচমকা মোবাইলটা খ্যানখ্যান করে কোঁকিয়ে উঠল,’আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু…’। ডঃ
নীহার ফোনটা রিসিভ করে’হ্যালো,হ্যালো’করতে করতে কোথায় যেন চলে গেল…
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন