স্বদেশ বসু শখের লেখক।
প্রায় তিরিশ বছর ধরে লিখছেন। কিন্তু তাঁর নামের আগে বা পরে’অনামী লেখক’তকমাটি আর
গেল না। তার প্রধান কারণ তিনি খুব অন্তর্মুখী; নিজের
ঢাকটি নিজে পেটাতেও পারেন না বা পেটাতে জানেনও না।
এলাকার একটি প্রগতিশীল
পত্রিকা, ধরা যাক তার নাম’ক‘, বেশ নাম করেছে। শুধু এলাকা নয়, আঞ্চলিক গণ্ডি ছাড়িয়ে তার নাম বিস্তৃত
হয়েছে রাজ্যস্তরে এবং সম্পাদকও বেশ একজন কেউকেটা হয়ে উঠেছেন। স্বদেশবাবু একদিন
কাঁচুমাঁচু হয়ে এই সম্পাদকের কাছে একটি লেখা জমা দিলেন এবং বিনীত অনুরোধ করলেন
লেখাটি পড়ে দেখবার জন্য। সম্পাদক তার মুরুব্বিয়ানা বজায় রেখে বললেন- বেশ তো! কিন্তু সে লেখাটি আর প্রকাশের আলো দেখলো না।
স্বদেশবাবু অবশ্য এতে বিশেষ দুঃখিত হলেন না, কারণ
তিনি এ ঘটনায় অভ্যস্ত।
যাইহোক, কিছুদিন বাদে একটি প্রথম শ্রেণীর দৈনিক
পত্রিকার সাহিত্যের পাতায় স্বদেশবাবুর একটি লেখা প্রকাশিত হলো এবং এলাকায় বেশ
সাড়া জাগালো। শুধু তাই নয় লেখাটি অন্য একটি সাহিত্য প্রতিযোগিতায়ও প্রথম স্থান
অধিকার করলো এবং সে খবরটিও বেশ ফলাও করে পত্রিকায় ছাপা হলো। স্বদেশবাবুর নাম হঠাৎ
করেই যেন প্রচার পেল চারপাশে। এমতাবস্থায়’ক’পত্রিকার সম্পাদক একদিন স্বদেশবাবুর
সঙ্গে দেখা করলেন; বললেন- স্বদেশবাবু, লেখাটি তো আমার পত্রিকাতেও দিতে পারতেন!
স্বদেশবাবু অত্যন্ত
কুণ্ঠিত হলেন, তারপর কাঁচুমাঁচু হয়ে
অত্যন্ত বিনীতভাবে জানালেন- স্যার, লেখাটি
বেশ কিছুদিন আগেই আপনার পত্রিকার জন্য দিয়েছিলাম, কিন্তু
লেখাটি অমনোনীত হয়েছিল। পরবর্তীতে আমি লেখাটি ওই দৈনিকে পাঠাই এবং ওঁরা সেটিকে
প্রকাশ করেন। আরেকটি সাহিত্য প্রতিযোগিতায়ও এই লেখাটি আমি পাঠিয়েছিলাম, কিন্তু কেন যে ওনারা এটিকে ফার্স্ট করলেন তা
আমি জানি না।
স্বদেশবাবুর জবাব
শুনে’ক’পত্রিকার সম্পাদকের মুখে আর কথা নেই – তার মুখ তখন পাংশু বর্ণ ধারণ করেছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন