বন্ধুরা সেবার ধরলো ভাড়া গাড়ি করে
শান্তিনিকেতন যাবে, রবীন্দ্রনাথকে দেখতে
দরকার হলে বাবার পকেট কাটবে...
মায়ের আঁচল ধরবে...
আমি বলেছিলাম, ধারের টাকায় বা চুরির অর্থে
গাড়ি ভাড়া করে রবীন্দ্রনাথ দেখতে যেতে হয় না;
রবীন্দ্রনাথ আমাদের পাড়ায় থাকেন।
অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে বন্ধুরা বলেছিল,
শালা পণ্ডিত......
আমি ধার করা টাকায় গাড়ি ভাড়া করে
রবীন্দ্রনাথের কাছে যেতে চাই না,
আমার রবীন্দ্রনাথ ছড়িয়ে আছে
সামনে পিছনে ডাইনে বামে,
আমার রবীন্দ্রনাথ বটের মূলে বসে রক্ত করবী লেখে
আমার রবীন্দ্রনাথ বসে থাকে বজবজের ফেরিঘাটে
আমার রবীন্দ্রনাথ গো রাখালের হাতের আড় বাঁশি
আমার রবীন্দ্রনাথ ঘুড়ির পিছে দৌড়ায় চুক নগরের মাঠে
আমার রবীন্দ্রনাথ লাটাই হাতে দে ছুট দে ছুট......
আমার রবীন্দ্রনাথ মুদি দোকানে ধুনোর খোঁজ করে
স্যাঁতসেঁতে ঘরে মশার কামড় থেকে রক্ষা পাব বলে
আমি যদি তাঁকে মানে
সেই রবীন্দ্রনাথকে একটু ছুঁতে পারতাম...!
তাঁর দর্শনের কয়েকটা কুচি কুচি অংশ,
যদি আমার হৃদয়ে তুলে নিতে পারতাম
রবিদর্শনের আলোয় যদি আমি একটা দিন
পার করতে পারতাম .....
আমার চোখে যে আলো দিয়েছে আমার মায়ের মাটি
সে আলো যদি আমার আর
আমার বন্ধুজনের হৃদয়ে লাগত একটু বেশি করে...
আমি বিশ্বাস করি,
আমার পৃথিবী, মানে আমার ভারতবর্ষ,
বিদ্বেষ মুক্ত সম্প্রীতির ভারতবর্ষ হয়ে উঠতো।
আমি মুসলমান!
মুখস্থ বলতে পারতাম কৃষ্ণের শত নাম,
আর
আমি হিন্দু, প্রণবেন্দু,
হেঁটে বেড়াতাম সাফা মারওয়ার পাদদেশে।
(*সাফা মারওয়া - কোরআনে বর্ণিত আরবের বিখ্যাত দুই পাহাড়।)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন