মা - চন্দ্রানী চক্রবর্তী



মা গো তুমি কোথায় গেলে

একলা আমায় ফেলে।

সবাই বলে তুমি নাকি লুকিয়ে আছো

সাদা মেঘের তলে।

আবার এলো শরৎকালের

কাশের মোড়া সকাল,

আবার এলো আলোর ছটা

ঢাকের তালের বিকেল।

মহামায়া মা আমাদের

আসছে আবার ধরায়,

বাঁধছে খুঁটি তুলছে চাঁদা,

ব্যস্ত সবাই পাড়ায়।

সবার ঘরে আলোর মালা,

নতুন জামার গন্ধ,

মাগো শুধু তোমার বাড়ির

দরজাটা আজ বন্ধ।

চারদিনের এই মহোৎসবে

সবাই মজা করবে,

মাগো তুমি বলবে না মা

কোন শাড়ীটা পরবে?

অন্ধকারে ঘরের কোণে

ঝাপসা চোখের কোণ,

ধূসর আকাশ মলিন বাতাস

বিবর্ণ এই প্রাণ।

কেমন হত হঠাৎ যদি

ঘরের আঁধার ঠেলে,

ডাকতে আমায় বুকের মাঝে

হাত দু'খানি মেলে।

তোমার মুখের হাসি দিয়ে

মনের আঁধার সরাতে,

অষ্টমীতে নতুন জামা বলতে

আমায় পরতে।

সরস্বতী, লক্ষ্মী, গণেশ

কার্তিককে নিয়ে,

আসছে উমা ধরনীতে

দোলায় দোদুল দিয়ে।

চারটিদিনে ঢ্যাংকুড়াকুড়

বাদ্যি বাজার পরে,

ফিরবে উমা কৈলাসেতে

গজের পিঠে চড়ে।

সবাই বলে উমা যে যায়

পেঁজা তুলোর দেশে,

এবার আমার মায়ের খবর

মিলবে তবে শেষে।

দামী দামী ভক্তের দল

দামী উপঢৌকন,

জোড় করে হাত বলছি মাগো

করো আশাপূরণ।

ভিড়ের মাঝে ছোট্ট হৃদয়

ছোট্ট আশা নিয়ে,

কাতরস্বরে দাঁড়ায়

মায়ের পায়ের কাছে গিয়ে।

নতশীরে বলি মাগো চারটি দিনের শেষে,

চললে ফিরে সবাই মিলে

এবার নিজের দেশে।

বললে সবাই তুমি নাকি

তারার দেশে থাক,

তুমি কী মা আমার মায়ের

ঠিকানাটা রাখ?

করজোড়ে করি মাগো তোমায় প্রণতি,

রাখছি তোমার সমুখপানে একটি মিনতি।

আসছে বছর আসবে আবার

সদলবলে যখন,

আনবে মাগো আমার মাকেও

তোমার সাথে তখন?…..॥

 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন