অফিসের ফাইলের মধ্যে থেকে কি একটা বের করতে চাইছিল হিমাদ্রি, তখনি টেবিলে রাখা ফোনটা বেজে উঠলো। ও প্রান্তে রিমির গলা।
- “ কি গো আমি তাহলে বেরিয়ে পড়ছি। তুমি একটু তাড়াতাড়ি ফেরো। সবিতাকে বলেছি তুমি না ফেরা পর্যন্ত থাকতে। ফ্রিজে রাখা খাবারগুলো গরম করে রাখতে। আর শোনো, আজ আর আলমারির চাবিটা ড্রয়ারে রাখছি না। পায়ের দিকে বিছানার নীচে থাকছে। তুমি যতক্ষণ না ফিরছ ততক্ষণ তো সবিতা বাড়িতে একাই। উপায় কি! আর কয়েকটা তোমার শার্ট প্যান্ট বের করে রেখেছি, আলমারি ঘাঁটাঘাঁটি করতে হবে না। বেশি দেরি কোরো না কিন্তু, তুমি এলে চা দিয়ে সবিতা বাড়ি যাবে। রাতে ব্যালকনির আলোটা জ্বেলে রেখ। বেশি রাত জেগ না। শুনতে পাচ্ছো?” এসব একনাগাড়ে বলে থামলো রিমি।
হিমাদ্রি বুঝতে পারে কাজের মেয়ের ওপর তার ভরসা নেই। “হ্যাঁ হ্যাঁ, ঠিক আছে, তুমি অনিকে নিয়ে সাবধানে যেও। পৌঁছে ফোন করে দিও, রাখছি।“
হিমাদ্রি যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো, চেয়ারেই শরীরটা এলিয়ে দিল হাত পা ছড়িয়ে। এতক্ষণ এই ফোনটারই অপেক্ষা করছিল সে। একঘেয়ে জীবন থেকে, অন্তত দু'টো দিন তো পাওয়া গেল। নিজের মতো করে থাকার ইচ্ছেটা পূরণ হবে এতদিনে। অনেকদিন পর রিমি বাপেরবাড়ি গেল।
হ্যাঁ, হিমাদ্রি আজ তাড়াতাড়িই অফিস থেকে বাড়ি ফিরবে। লালন করা মনের সুপ্ত ইচ্ছেটা পূরণ হচ্ছিল না কিছুতেই। সবিতা ঘরে একা। স্বামী পরিত্যক্তা চল্লিশ ছুঁই ছুঁই মেদবহুল সবিতা বোঝে হিমাদ্রির চোখের ভাষা। কয়েকটা ফাইল অখিলেশকে বুঝিয়ে দিয়ে, ব্যাগটা কাঁধে ঝুলিয়ে বেরিয়ে পড়লো সে।
মনের ভেতর একটাই কথা, আজ সবিতা ঘরে একা। সবিতাকে ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারছে না হিমাদ্রি। চোখের সামনে ভেসে উঠছে সবিতার শরীরটা। স্টেশন রোডে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎই থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে, চোখ চলে যায় শ্রী দুর্গা বস্ত্রালয়ে কাঁচের শো রুমের দিকে। বেগুনি রঙের শাড়িটায় বেশ মানাবে সবিতাকে। এরপর কি ভেবে সামনে যেতে গিয়েও ফিরে আসে। শাড়ি, শাড়ি কি হবে !
সবিতাকে আদর করতে শাড়ি লাগে
নাকি! কয়েকটা হেয়ার ক্লিপ আর একটা নেল পালিশই তো যথেষ্ট। এরপর ফুটপাতের সস্তার
এক কসমেটিকসের দোকানে ঢুকে যায় হিমাদ্রি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন