সাঁঝের বেলায় সাগরতীরে
শানবাঁধানো পাথরের উপর
গরমে এলোমেলো ভাবে
তুমি তখনও দাঁড়িয়ে
ফোঁটা ফোঁটা ঘাম ঝরে
আচমকা দমকা হাওয়ায় উড়ল আঁচল
মাথার উপর নেমে এলো ঝড়
পথ ঘাট হলো কাদা
ঝিলিক দিচ্ছে বিদ্যুৎ
আগুন ঠিকরে বেরিয়ে পড়েছে চোখ থেকে
হাড় কাঁপানো
পাঁজর থেকে বজ্র আঘাত হানে,
তুমি তখনও দাঁড়িয়ে।
ঝির ঝির বৃষ্টি পড়ে
সাগরে উথলে ওঠে ঢেউ
নিরালায় বসে আমি দেখি
যে যার ঘরে ফিরছে
অন্ধকার ঘনিয়ে আসে
নিশ্চুপে আমি আছি বসে
কামিজ পরিধান করে,
শরীরে কামিজ গেছে বৃষ্টির জলে চুপসে,
হাড় কাঁপানো ঠান্ডায়
বসে আছি সাগর পাড়ে
মাথা উচুঁ করে চেয়ে দেখলাম
তুমি তখনও দাঁড়িয়ে।
গগন করেছে গর্জন
নীলিমা হয়েছে কালিমা
বৃষ্টির বাজছে বাজনা
তাঁবুতে আর নীর থামে না,
ধেয়ে ধেয়ে আসে বায়ু
তাঁবু করে উড়ু উড়ু
আমি তাঁবু চেপে ধরি,
মুখটি বের করে দেখি,
সাগরে উথলে উঠেছে জল
মাঝিরা ফিরে গেছে নীড়ে
আমি একা পড়ে আছি, সাগরতীরে
তুমি তখনও দাঁড়িয়ে।
মাঝে মাঝে বিদ্যুতের ঝলকানি
তোমার অঙ্গে পড়ে
বালিচরের মতো চিকচিক করে,
ভিজে অঙ্গে শাড়ি জড়িয়ে
যৌবন হয়েছে মৌবন
মাথার চুল কোমরে দুলায়
দেখি নাই আমি ওই দুই নয়ন,
সাগরের ঢেউ আর অঙ্গের ঝলকানি
দু'য়ে করে টানাটানি
যত অন্ধকার ঘনিয়ে আসে
ভয়ে বুক করে দুরু দুরু
তুমি তখনও দাঁড়িয়ে।
সাহস করে বেরিয়ে এলাম
তাঁবুর বাইরে
অন্ধকার ঘুটঘুটে দেখা নাহি যায়
তুমি আছো কিয়দ্দুরে দাঁড়িয়ে
ভয়ে ভয়ে তোমার দিকে এগিয়ে গেলাম
দেখলাম না কিছু
শুধু ছিল মনের ভ্রম
কিছু দূর আসি
পিছন ফিরে দেখি, বিদ্যুতের আলোয়
তুমি তখনও দাঁড়িয়ে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন