কমলেশ ও সায়ন দেখলো বন্ধ হয়ে পরে থাকা মোবাইলের স্ক্রিনটা কয়েকবার দপদপ করে স্থির হয়ে জ্বলে
উঠলো, আ...আর ওটার ভেতর থেকে
...
গতকালই মহালয়া ছিল, দেবী-আরাধনার প্রস্তুতি উপলক্ষ্যে ব্যস্ত ছিল ছেলে দুটো। গভীর রাতে কমলেশের ফ্ল্যাটের থেকে ভয়াবহ চিৎকার শুনে সকলে গিয়ে দেখে একসাথে
কন্ঠনালী চিঁড়ে
মর্মান্তিক ভাবে মারা গেছে ওরা। আর ফ্রিজে
ওসব কি!
নিজের গুণবলে ও অধ্যাবসায়ের জোরে প্রথম সারির
ছাত্র থেকে প্রথম সারির অধ্যাপক হয়ে উঠেছিল ঋষি, তখনই ঈর্ষার
সবুজ রঙ জমেছিল ছোটবেলার বন্ধু ঐ কমলেশ ও সায়নের চোখে। এরপর
ঋষি নিজের আজন্ম পালিত অন্তরের নারীসত্ত্বাকে সার্বজনীন স্বীকৃতি দিয়ে শারীরিকভাবে
রূপান্তরিত হয় ঋষিতা-তে, তখন পরিচিত
সমাজের প্রতিটি কোণ থেকে তাকে হেনস্থা শুরু হয়। দমেনি ঋষিতা,
এসবের জন্য প্রস্তুত ছিল সে। সে জানতো,
প্রকৃতি নিজের সন্তানদের মধ্যে কোন তারতম্য করে না, করে ভুয়ো শ্রেষ্ঠত্বের বরাই করা মানুষ।
সেদিন যখন মিথ্যে বন্ধুত্বের দোহাই দিয়ে কমলেশের
নির্জন,পরে থাকা ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে উপর্যুপরি অত্যাচারে
নিজেদের হিংসা ও অপারগতাগুলোকে আরও শ্লেষে ঢেকেছিল কমলেশ আর সায়ন তখন সদ্য অপারেট
ও ইমপ্ল্যান্ট করা শরীরটা আর সহ্য করতে পারেনি।
ঠান্ডায় রাখলেও পচে গন্ধ বের হতে থাকায় ঘটনার
পর তৃতীয় রাতে, ফ্রিজ থেকে বের করে ঋষিতার টুকরো করা শরীরের
অংশগুলোকে রাতের আঁধারে হাপিস্ করতে যায় কমলেশ ও সায়ন। তখনই
ঘরের মাঝে পরে থাকা, বন্ধ হয়ে যাওয়া ঋষিতার মোবাইলের আলোটা
হঠাৎই দপদপ করে জ্বলে ওঠে, স্ক্রিন থেকে বেরিয়ে আসে দুটো
রক্তাক্ত তীক্ষ্ণ নখ যুক্ত কাটা হাত। প্রথমে চোখের ভুল ভাবলেও
যখন অবর্ণনীয় ও সুতীব্র এক যন্ত্রণা দিয়ে নখগুলো একে একে গেঁথে যায় ওদের কন্ঠনালীর
গভীর থেকে গভীরে, শিরা-উপশিরা-রক্তজালিকাগুলো হয় ছিন্ন বিছিন্ন, ধী-রে ধী-রে, ততক্ষণে সবটা
শেষ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন