পুজোর জোগাড় করতে করতে হঠাৎ জিভ কাটল জবা।কি করে যে ভুলটা হয়ে গেল! ওদিকে পুরুত মশাইয়েরও আসার সময় হয়ে গেছে। অন্যান্য বাড়ি থেকে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর উলুধ্বনি শুনতে পাওয়া যাচ্ছে।
“ বিন্নি, বিশুর দোকান থেকে একটা দুধের প্যাকেট নিয়ে আয় তো। একদম ভুলে গেছি।“
বিন্নির আলপনা দেওয়া মোটামুটি শেষ। আট বছরের বিন্নি লক্ষ্মী পূজায় এই কাজটাই করে। এবার পায়ে চটি গলিয়ে চলল বিশুর দোকানে।
“ এত দেরি করে এসেছ মামনি, সব দুধ বিক্রি হয়ে গেছে। কেবল গুঁড়ো দুধ পড়ে আছে। তুমি বললে আমি খানিকটা প্যাকেটে মুড়ে দিতে পারি।"
“ তাই দাও।” বিন্নি অতশত বোঝেনা। দূধ হলেই হল। প্যাকেটের থেকে গুঁড়ো দুধ খানিকটা আঙুলে লেগে গেল। কিন্তু একি!
রাস্তার মাঝখানে একটা বড় ষাঁড় দাঁড়িয়ে মাথা দোলাচ্ছে। বিন্নি ঠিক করল সোজাসুজি না গিয়ে ডানপাশের বাড়ির পাঁচিল টপকে নীলুদের বাগানের ভেতর দিয়ে বাড়ি চলে যাবে।
বাগান দিয়ে যেতে যেতে একটা “ মিউ মিউ” আওয়াজ পেল। এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখল ইটের পাশে একটা ছোট্ট বিড়াল ছানা ডেকে চলেছে।
বাচ্চাটার সবে চোখ ফুটেছে। বিন্নি ওকে ধরতেই চুপ গেল। বোধহয় বিন্নিকে ওর মা ভাবছে। ঠোঁটের কাছে আঙ্গুল যেতেই, বাচ্চাটা কি যেন চাটতে শুরু করল। গুঁড়ো দুধের স্বাদ পেয়েছে বোধহয়। বিন্নি বুঝতে পেরে প্যাকেট থেকে আরো খানিকটা গুড়ো দুধ ওর ঠোঁটে লাগিয়ে দিল। বাচ্চাটা দিব্যি খাচ্ছে চেটে চেটে। ওদিকে পুরুত মশাই চলে এসেছেন।
“ কোথায় যে গেল মেয়েটা!” মনে মনে ভাবছে জবা।
এদিকে পূর্ণিমার চাঁদ বিন্নির মাথার ওপরে এসে জ্যোৎস্নার আশীর্বাদে ভরিয়ে দিচ্ছে। জবা হাত জোর করে বলল, “ আমার সংসার আর মেয়েটার মঙ্গল করো মা!”
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন