নিমগ্ন চিন্তা - সৌম্যদীপ দাস

 

দারিদ্রের চিলেকোঠায় অস্থির নিমগ্ন এক বালক ,

অশ্রুবারিত দুই চোখে খুঁজেছে শান্তি একপ্রহর ধরে ;

অজানা এক বয়ে আসা ক্লান্ত হাওয়া দিয়েছে উষ্ণতার আভাস

এককালে আগে যেমন করে শেক্সপীয়ার শুনিয়েছিল বসন্তের গান

ঠিক তেমন ভাবে তুমি এলে , নিষ্পাপ নিষ্ঠুরতা নিয়ে ।

আলোর বনলতার মাঝে হারালাম আবার , খুঁজলাম নিজেকে ;

হতাশার গ্রাসে নিমজ্জিত শিরায় শুধুই প্রেমের আখ্যান

কেউ কি জানে এক শতক আগে ভিসুভিয়াস থেকে ছিটকে আসা

আগ্নেয়গিরির শাণিত লাভার উষ্ণ চুম্বনের দায়ভার কার ,

কে নেবে সেই দায়িত্ব , কে বুঝবে এই কলকাতার বুকে

জ্বলতে থাকা হাজার মশালের আগুন এখনও সুপ্ত

প্রশমিত হতে থাকা অবসন্ন বিকেলের উপচে পড়া দুঃখ আজও

কষ্ট দেয় , দেয় ঘৃণা , দেয় লাঞ্ছনা , দেয় ক্লান্তি , তবুও দেয় না সে শান্তি।

অনামী কোনো রেস্তোরাঁর প্রথম সারির টেবিলে চাপড়ে

দগ্ধ কোনো কবি শুধুই নিজের পরাজয়ের আস্ফালন ঘটায় ,

উঁকিঝুঁকি মারা সারি সারি যাত্রীরা অপেক্ষায় একটা সবুজ সঙ্কেতের

 যা এনে দেবে তাদের এক পা এগিয়ে যাওয়ার স্বাধীনতা ,

তবুও তো আজ তারা পরাধীন দাসত্ব করে চলেছে অচল এক পাথরের,

হেরে যাওয়া ঝুঁকতে থাকা কাঁধগুলো বয়ে নিয়ে চলে

অনন্ত প্রাচীন এক ভিনটেজ ক্রেসলারকে ,

এ যেন এক স্বপ্নচারিণীর গল্প যেখানে শেষ হয় না কিছুই ,

তবুও প্রশ্ন ওঠে মাঝে মাঝে যদি আবার সবটা পাই ফিরে

তবে কি জ্বলবে আলো কলেজ স্ট্রিটের মোড়ে, ঘাস উড়বে ময়দানে

ঠাকুরদালানে পা দোলাতে দোলাতে খিস্তি খেউড় করবে একদল বৃদ্ধ

গঙ্গার ধার ঘেঁষে চলে যাবে এক যন্ত্রচালিত দানব ,

ফুঁসতে থাকা মহাকরণে উঠবে সাম্যবাদের পতাকা

বইতে থাকা গোলাপ কী ফিরে পাবে তার প্রাচীন গন্ধকে ?

তবে এখন সবটাই দুঃস্বপ্ন , সবটাই অলীক ;

শুধু আমার তোমার মাঝে একটা দেয়াল আর সহস্র যোজন ফারাক



 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন