
- বই - মানদাসুন্দরীর কাঁথা
- লেখক - তাপস রায়
- প্রথম প্রকাশ – জানুয়ারী ২০১৮
- প্রকাশনী – আনন্দ পাবলিশার্স
- প্রচ্ছদশিল্পী – প্রত্যয়ভাস্বর জানা
- পৃষ্ঠা সংখ্যা - ১৮৩
- মুদ্রিত মূল্য – ২০০/-
জমিদার কন্যা কিশোরী মানদার বিয়ে হয় পঞ্চাশোর্ধ্ব বিপত্নীক জমিদার কৃষ্ণমোহনের সাথে। অন্য গ্রামের জমিদার পত্নী হওয়া সত্ত্বেও মানদা সেইযুগের রীতি অনুযায়ী ঘোমটা টানা অশিক্ষিত কুসংস্কারাচ্ছন্ন হয়ে ঘরকন্নার কাজে জুবুথুবু হওয়ার পরিবর্তে জমিদারী ও সামাজিক নিয়মের বেড়া লঙ্ঘন করে নিজের শর্তে জীবন কাটানোর পথ খুঁজে নিয়েছিল। নিজের স্বাধীনচেতা মনকে সংস্কারের বিবিধ বেড়াজাল মুক্ত করার জন্য যখন হাজার প্রশ্নের উত্তর খুঁজছিল, সেই সময়ই নিজের প্রায় সমবয়স্ক ও উদারচেতা উচ্চশিক্ষিত দেবর ধরণীমোহনের সংস্পর্শে আসে সে। দুই প্রায় সমবয়সীর মধ্যে ভাবের আদান প্রদানে মানদার কাছে এক উন্নত জগতের আলোর দিশা উন্মুক্ত হয়। জমিদারের অন্দরমহলে সমস্ত সামাজিক রক্ত চক্ষুর আড়ালে কিশোরী বধুটি ঘটিয়ে ফেলে এক নিঃশব্দ বিপ্লব। বাড়ির সমস্ত অবহেলিত নারীদের পড়াশোনা শিখিয়ে নিজেদের পায়ের তলার জমি শক্ত করার শক্তি জোগান দেয়। এই কার্যে তার যোগ্য জুরিদার হয় তার দেবর। এবং তৎসহ বাড়ির অন্যান্য পুরুষদেরও নিঃশব্দ উৎসাহ ও নীরব সমর্থন তার চলার পথ মসৃণ করতে থাকে। এমতাবস্থায় তার হাতে আসে তার দিদিমার তৈরি করা এক অসম্পূর্ণ নকশী কাঁথা। মানদার মা প্রসন্নময়ীর নির্দেশে সে এই কাঁথা সম্পূর্ণ করতে শুরু করে। এর থেকেই সে নিজের নারী বাহিনীর স্বনির্ভরতার উপায় খুঁজে পায়। কিন্তু বিধিবাম। কিছু স্বার্থান্বেষী জটিল ও কুটিল প্রবৃত্তির মানুষের চক্রান্তে তার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার ভবিষ্যত। এরপর তার কি হয়? কি হয় তার নারী বাহিনীর? ধরণীমোহন তার জীবনে কি প্রভাব বিস্তার করে? এই সমস্ত ঘটনা নিয়েই ১৯৩২ সালে গুরুসদয় দত্ত রচিত এক নাটক মঞ্চস্থ হয়। সে যুগের গণ্যমান্য ব্যক্তিত্বদের আমন্ত্রণ জানানো হয় নাটক দেখার জন্য। অশ্রুসজল নাটকটি দেখার পরই মানদাসুন্দরীর জীবনীতে প্রভাবিত হয়ে কবি জসীম উদ্দিন রচনা করেন তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ "নকশীকাঁথার মাঠ"।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন