তাঁর স্বামী? আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু।
শুধুমাত্র আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসুর সুযোগ্য সহধর্মিণী হিসাবে নয়, বাংলায় নারীশিক্ষার প্রসারে তাঁর অগ্রগণ্য ভূমিকা চিরস্মরণীয় হয়ে আছে। বাংলার মেয়েদের স্বাবলম্বী হওয়ার অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন তিনি, শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিয়েছেন ঘরে ঘরে। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের নারী আন্দোলন এবং শিক্ষা আন্দোলনের যথার্থ উত্তরাধিকারী ছিলেন অবলা বসু।
শৈশবে অবলা বসু |
জন্ম ও শিক্ষাজীবন:
অবলা বসুর জন্ম হয়েছিল ১৮৬৫ সালের (মতান্তরে ১৮৬৪) ৮ আগস্ট বরিশালে, বাংলা ১২৭১ সালে। পিতা দুর্গামোহন দাস ছিলেন সে সময়ের একজন প্রখ্যাত সমাজসংস্কারক। তিনি একাধারে ছিলেন ব্রাহ্মসমাজের অন্যতম বিশিষ্ট মুখ, অন্যদিকে মহিলা শিক্ষার পথিকৃৎ। দুর্গামোহন বহুবিবাহ বন্ধ, বিধবাবিবাহ প্রবর্তন ও নারীশিক্ষা আন্দোলনের জন্য লড়াই করেছেন আজীবন। তৎকালীন অখন্ড বাংলার সমাজ উন্নয়নে দুর্গামোহন দাসের অবদান অসীম। অবলা বসুর মাতা শ্রীমতী ব্রহ্মময়ী দেবী গৃহিণী হওয়ার পাশাপাশি নারী সমাজের অন্ধকার দূর করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে এবং বিধবাবিবাহ প্রবর্তনের ক্ষেত্রে ব্রহ্মময়ী দেবীর পদচারণা সর্বত্র।
এহেন পিতামাতার সন্তান অবলা বসু সমাজসংস্কার এবং নারীশিক্ষা বিস্তারের প্রতি আগ্রহ নিয়েই বড়ো হয়ে ওঠেন। সেই সঙ্গে তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। বরিশালে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার পর প্রথমে কলকাতার বঙ্গ মহিলা বিদ্যালয়ে এবং পরবর্তীকালে বেথুন স্কুলে ভর্তি হন। অবলা বসু বঙ্গ মহিলা বিদ্যালয় এবং বেথুন স্কুলের প্রথম সময়ের ছাত্রীদের মধ্যে ছিলেন অন্যতম।
মেধাবী অবলা ১৮৮১ সালে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন এবং বলা বাহুল্য কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। পরীক্ষায় ভাল ফলাফলের জন্য অর্জন করেন ২০ টাকার মাসিক বৃত্তি। সেই সময়ে ২০ টাকার মূল্য ছিল অনেক। তাঁর খুব ইচ্ছা ছিল ডাক্তারি পড়ার। কিন্তু সেই সময়ে নারীর উচ্চশিক্ষার পথে ছিল নানাবিধ বাধা। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে মেয়েদের ডাক্তারি পড়ার কোনোরকম সুযোগ ছিল না। একমাত্র মাদ্রাজ মেডিক্যাল কলেজেই মেয়েরা এই সুযোগ পেত। অবলার গন্তব্য তখন হলো মাদ্রাজ।
কিন্তু তাহলেও এত দূরে মেয়ে যাবে ডাক্তারি পড়তে! দুর্গামোহন দাস চিন্তান্বিত হয়ে পড়েন, সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে দ্বিধায় পড়ে যান। শেষ পর্যন্ত মেয়ের আগ্রহ দেখে সমস্ত দ্বিধা দূর হয়ে হয় তাঁর। অবলাকে মাদ্রাজে পাঠাতে সম্মত হন তিনি।
সাল ১৮৮২। বাঙালি মেয়েদের মধ্যে প্রথম মেডিক্যাল শিক্ষার্থী ছিলেন অবলা বসু। সেই সময়ে মাদ্রাজ মেডিক্যাল কলেজে মেয়েদের পড়াশোনার জন্য কোনো হোস্টেলের বন্দোবস্ত ছিল না। এক অ্যাংলো ইন্ডিয়ান ব্যক্তির বাড়িতে পেয়িং গেস্ট হিসাবে থাকতে শুরু করেন অবলা। কিন্তু এমনই দুর্ভাগ্যে যে দুই বছর পড়াশোনা করার পর শারীরিক অসুস্থতার কারণে ডাক্তারি পড়াশোনা অসমাপ্ত রেখে কলকাতায় ফিরে আসতে হয় তাঁকে। তবে সেখানে তিনি ডাক্তারি শিক্ষার উপর দু'বছরের একটি নির্দিষ্ট কোর্স সম্পূর্ণ করেছিলেন এবং এই কৃতিত্বের স্বীকৃতি হিসাবে মাদ্রাজ মেডিক্যাল কলেজের পক্ষ থেকে তাঁকে ‘সার্টিফিকেট অফ অনার’ প্রদান করা হয়েছিল।
জগদীশচন্দ্র বসু ও অবলা বসু |
বিবাহপর্ব:
পূর্বেই উল্লিখিত যে আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু ছিলেন অবলা বসুর স্বামী। জগদীশ চন্দ্রের বাবা শ্রী ভগবান চন্দ্র বসু এবং অবলা বসুর বাবা শ্রী দুর্গামোহন দাস ছিলেন পরস্পরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং দু'জনেই ছিলেন ব্রাহ্ম মতাদর্শ অনুসারী। এই দুই বন্ধুর একান্ত ইচ্ছাতে ১৮৮৭ সালের ২৭শে জানুয়ারি জগদীশ চন্দ্র বসুর সঙ্গে অবলা বসুর বিবাহ সম্পন্ন হয়।
বিবাহের পর থেকেই সংসারের হাল শক্ত হাতে ধরতে হয় অবলা বসুকে। জগদীশচন্দ্র বসু সেসময় কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন, সেই হিসাবে সংসারে আর্থিক অনটন হওয়ার কথা নয়। কিন্তু ইউরোপীয় অধ্যাপকদের তুলনায় তাঁকে অর্ধেকেরও কম বেতন দেওয়ার প্রতিবাদে তিনি কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন এবং বেতন নেওয়া বন্ধ করে দেন। সাথেই চলছিলো আচার্যের গবেষণার কাজ। এই সময়ে এগিয়ে আসেন অবলা বসু। সংসারের সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয় নজরে রাখা থেকে শুরু করে সংসার খরচ সঙ্কোচন, নিজের সুখ স্বাচ্ছন্দ্য বিসর্জন দিয়ে অর্থ সঞ্চয়, সবদিক অত্যন্ত নৈপুণ্যের সঙ্গে সামলে নেন। এতো অভাব অনটনের মধ্যেও কিন্তু তিনি তাঁর স্বামীর বিজ্ঞান সাধনায় ব্যাঘাত ঘটতে দেননি। পরবর্তীকালে বিজ্ঞান সাধনার জন্য জগদীশ চন্দ্র বসুর 'বসু মন্দির' প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অবলা বসুরও অবিস্মরণীয় ভূমিকা রয়েছে।
শুধু তাই নয়, স্বামীর যোগ্য সহধর্মিনী হিসাবে তাঁর সবরকমের কাজকর্মে সহযোগিতা করে গেছেন তিনি। নিজে বিজ্ঞানের ছাত্রী হওয়ায় জগদীশ চন্দ্রের অনেক ধরণের কাজেই অবলা সাহায্য করতেন। অবশেষে ১৮৮৮ সালে বেতন সংক্রান্ত ব্যাপারে সম্মানজনক নিষ্পত্তি হয় এবং অধ্যাপনার কাজে জগদীশ চন্দ্র প্রেসিডেন্সি কলেজে স্থায়ী নিয়োগ পান। আচার্যকে এই সময়ে পূর্বকালীন সময়ের হিসাব অনুযায়ী মোট পাওনা বেতন একসঙ্গে প্রদান করা হয়েছিল।
১৮৯২ সালে অবলা বসুর শ্বশুরমশাই অর্থাৎ জগদীশ চন্দ্রের পিতা ভগবান চন্দ্র বসু পরলোকগমন করেন। তার দু'বছর পর জগদীশ চন্দ্রের মা বামাসুন্দরী দেবীও অমৃতলোক যাত্রা করেন। কিছুসময় পরে আচার্য আমন্ত্রণ পান পদার্থবিজ্ঞানীদের প্রথম আন্তর্জাতিক প্যারিস সম্মেলনে। সফরসঙ্গী হলেন অবলা বসুও। এর পরেও স্বামীর সঙ্গে একাধিকবার বিদেশ সফর করেছিলেন অবলা। তাহলেও সাদামাটা জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন তিনি। লিভারপুল ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশনের এক বৈজ্ঞানিক সভায় জগদীশ চন্দ্র বসুর বক্তৃতা শুনে মুগ্ধ হন বিশ্ববিখ্যাত বৈজ্ঞানিক লর্ড ক্যালভিন। আচার্য সম্পর্কে তিনি সেই সংক্রান্ত ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন অবলা বসুর কাছে।
প্রাচীন বেথুন স্কুল |
নারী শিক্ষা ও নারী প্রগতি:
অবলা বসুর পরিবারের সকল সদস্যই ছিলেন যথেষ্ট শিক্ষিত এবং প্রগতিশীল মানসিকতার। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস এবং ভারতবর্ষের পঞ্চম মুখ্য বিচারপতি সুধীরঞ্জন দাস ছিলেন তাঁর দুই কাকা, যথাক্রমে ভূবন মোহন দাস এবং রাখালচন্দ্র দাসের পুত্র। অবলার ভাই তৎকালীন প্রখ্যাত অ্যাডভোকেট জেনারেল সতিশ রঞ্জন দাস। বোন ছিলেন ‘গোখেল মেমোরিয়াল স্কুলের’ প্রতিষ্ঠাতা শ্রীমতী সরলা রায়।
এই প্রসঙ্গে গোপাল কৃষ্ণ গোখলের কথা সংক্ষেপে বলি। তিনি ছিলেন ভারতীয় হিসাবে কংগ্রেসের প্রথম সভাপতি। শুধু তাই নয়, প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করার দাবী নিয়ে তিনিই প্রথম সরব হয়েছিলেন ১৯১০ সালে। মেয়েদের তখন ১০ বছর বয়সে প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে গণ্য করা হতো। গোখলেই প্রথম মেয়েদের এই প্রাপ্তবয়স্কতা নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত ঘটান এবং সেই বয়স ১০ থেকে বাড়িয়ে ১২ করা হয়। এই ঘটনার পর অবলা বসু এবং তাঁর বোন সরলা রায় তাঁদের প্রতিষ্ঠিত নারীশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গোপাল কৃষ্ণ গোখলের নাম সংযুক্ত করেন। অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে তোলেন গোখেল মেমোরিয়াল স্কুল।
১৯১০ সালে তিনি ব্রাহ্ম বালিকা বিদ্যালয়ের সম্পাদিকা হিসাবে দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। ১৯৩৬ সাল পর্যন্ত অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করে যান স্কুলটির। সেই সঙ্গেই সরলা রায়ের পাশে থেকে গোখেল মেমোরিয়াল স্কুলটি প্রতিষ্ঠার কাজে অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে নিজেকে যুক্ত করেন। বাংলার মেয়েদের কাছে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ১৯১৯ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘নারী শিক্ষা সমিতি’। সমাজের দানশীল মানুষের সহায়তায় তিনি এটির পরিচালনা করতেন। এই সংস্থাটির মাধ্যমে অবলা বসু গ্রামবাংলার বিভিন্ন প্রান্তে ৮৮ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ১৪ টি শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন করেন। পরবর্তীকালে এই সংস্থা থেকে নারীদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
শুধুমাত্র শিক্ষার প্রসারই নয়, বালিকা বিদ্যালয়গুলিতে মেয়েদের শিক্ষার জন্য তিনি মহিলা শিক্ষকের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। এইসব স্কুলের শিক্ষয়িত্রীর অভাব পূরণের জন্য ১৯২৫ সালে 'বাণীভবন ট্রেনিং স্কুল' প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রতিষ্ঠানটি থেকে শিক্ষিত নারীদের যথাযথ অনুশীলন দিয়ে অবলা বসুর প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষিকা হিসবে নিয়োগ করা হতো। এরই সঙ্গে ‘নারী শিক্ষা সমিতি’র মাধ্যমে পাঠ্যপুস্তক রচনার কাজেও হাত দেন তিনি। এছাড়াও স্বামী আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসুর মৃত্যুর পর তাঁর সঞ্চিত এক লক্ষ টাকা দিয়ে তিনি সিস্টার নিবেদিতা উইমেন্স এডুকেশন ফান্ড প্রতিষ্ঠা করেন। এই ফান্ডের মাধ্যমে 'অ্যাডাল্টস প্রাইমারি এডুকেশন' নামক একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয় যার মূল লক্ষ্য ছিল বয়স্ক নারীদের জন্য প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা।
মেয়েদের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করা ছাড়াও অবলা বসুর চিন্তাভাবনায় বিধবা নারীরাও ছিল। তখনকার দিনে নারী স্বাধীনতা নিয়ে সোচ্চার হওয়া ছিল অত্যন্ত কঠিন। মেয়েদের স্থান ছিল অন্তঃপুরে। শিক্ষায় এবং আর্থ-সামাজিকভাবে তারা পুরুষদের উপর নির্ভশীল ছিল। সাথেই ছিল যৌতুক ও বাল্যবিবাহের নিপীড়ন। অনেকেই অল্পবয়সে বিধবা হয়ে সমাজের গলগ্রহ হয়ে থাকতো। এই অবহেলিত বিধবা নারীদের কথা চিন্তা করে তাদের স্বনির্ভর করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি ১৯২৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেন 'বিদ্যাসাগর বাণীভবন' এবং ১৯২৬ সালে ‘মহিলা শিল্প ভবন’। এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেক নারীই নিজেদের আত্মনির্ভরশীল নারী হিসাবে গড়ে তুলতে পেরেছিলেন।
তার সাথে লিখতেও ভালোবাসতেন তিনি। তৎকালীন জনপ্রিয় ইংরাজি পত্রিকা ‘মডার্ন রিভিউ’এ নারীশিক্ষা এবং নারী স্বাধীনতার উপর অবলা বসুর লেখা বেশ কিছু প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল। নারীশিক্ষার উপর এক প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন -
“নারীর শিক্ষাকে যেন ভাল পাত্র পাওয়ার উপলক্ষ্য হিসেবে ভাবা না হয়। প্রতিটি মেয়েরই উচিত গভীর এবং বিস্তৃতভাবে শিক্ষাকে আত্মস্থ করা। কারণ একজন পুরুষের মতোই নারীরও রয়েছে একটি মন, আগে তার চাহিদা পূরণ করতে হবে।”
বিভিন্ন বাংলা সাময়িক পত্রিকাতে সে সময় তাঁর কিছু প্রবন্ধ ও ভ্রমণকাহিনী প্রকাশিত হয়েছিল। বিভিন্ন সময়ে তাঁর লেখা কিছু প্রবন্ধ একটি সংকলনেই পাওয়া যায়, শকুন্তলা শাস্ত্রী প্রকাশিত ‘বিজ্ঞানাচার্য জগদীশচন্দ্র ও লেডি বসুর প্রবন্ধাবলী’। ১৩০২ থেকে ১৩৩২ এই সময়কালের মধ্যে ‘মুকুল’ এবং ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় নিজের ভ্রমণ বৃত্তান্ত লিখেছিলেন তিনি। বাংলা ১৩০২ অগ্রহায়ণ ও পৌষ সংখ্যার 'মুকুল' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর কাশ্মীর ভ্রমণ কাহিনী।
ইউরোপ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা তিনি 'প্রবাসী'তে লিখিত আকারে প্রকাশ করেছিলেন ‘বাঙ্গালী মহিলার পৃথিবী ভ্রমণ’ নামে। তাঁর লেখা ভ্রমণ কাহিনীগুলির মধ্যে সেরা হলো ‘ইতালির লুপ্তনগরী’। এছাড়াও শিশু ও কিশোরদের মাঝে শিক্ষার প্রসারের জন্য এবং তাদের বিভিন্ন বিষয়ে আগ্রহী করে তোলার জন্য অবলা বসু নানারকম মজাদার ভ্রমণ কাহিনী লিখেছিলেন।
প্রয়াণ:
১৯৫১ সালের ২৬ শে এপ্রিল ৮৭ বছর বয়সে অমৃতলোক যাত্রা করেন এই মহীয়সী নারী। মহাবিজ্ঞানী স্বামী আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসুর পাশে সুযোগ্য সহধর্মিনী হিসাবে তিনি ছিলেন আপন মহিমায় উজ্জ্বল। অনেকেই তাঁকে উনিশ শতকের নারীশক্তির প্রতীক হিসাবে অভিহিত করে থাকেন। বাংলার নারী জাগরণের পথিকৃৎ অবলা বসুর চরণে রইলো আমাদের সশ্রদ্ধ প্রণাম।
ঋণস্বীকারঃ
'বারিদবরণ ঘোষ, জগদীশচন্দ্র ও অবলা বসু' (ব্যক্ত অব্যক্ত জগদীশচন্দ্র বসু সংকলনে প্রকাশিত)
সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত, ১৯৭৬, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান প্রথম খণ্ড।
চিত্র সৌজন্যঃ গুগল, উইকিপিডিয়া
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন