বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। শুধুমাত্র উৎসব বললে ভুল হবে, দুর্গাপুজো বাঙালির কাছে আবেগ, ভালোবাসা। আর পুজোতেই মিশে থাকে ছোট বড় খুশির বিভিন্ন মুহূর্ত। নতুন জামা, নতুন জুতো, রংবাহারি চুড়ি, চুলের ক্লিপ এসবের মধ্যে দিয়েই দিনগুলো কেটে যায় হইহই করে।
আর
খাওয়াদাওয়া?
সত্যি, দুর্গাপুজো, অথচ
মহাভোজ হবে না! ভারি অন্যায়। আর সেই কারণেই আমরা
চলে এসেছি পুজোতে খাওয়ার জন্য একখানি সুস্বাদু পদের হদিশ
দিতে।
এই
প্রসঙ্গে বলি,
আমাদের
দেশে অনেকরকম বিরিয়ানি পাওয়া যায়। বিরিয়ানি খেতে ভালবাসেন না এমন লোকও খুঁজে
পাওয়া যাবে না। আমরা বাঙালিরা মনে করি বিরিয়ানিকে কেউ টেক্কা দিতে পারে না।
কিন্তু আজ এমন একটি রেসিপি আপনাদের কাছে নিয়ে এসেছি যা বিরিয়ানির স্বাদকেও হার
মানাবে। অতি সহজ উপায়ে চটজলদি বানিয়ে ফেলতে পারবেন এটি। নাম ইয়াখনি পোলাও।
ইয়াখনি
পোলাও হচ্ছে একধরণের পাকিস্তানি রেসিপি। কাশ্মীরে এই রেসিপিটির খুব চল আছে। মুরগীর
মাংস বা পাঁঠার মাংস এবং বাসমতী চাল দিয়েই এই বিরিয়ানি তৈরি করতে হয়। একে ইয়াখনি
পোলাও বলা হয় কারণ, ইয়াখনিতেই এই পোলাও তৈরি হয়। ইয়াখনি হল চিকেন
বা মটনের স্টক বা স্ট্যু।
তাহলে
আসুন দেখে নেওয়া যাক কীভাবে বানাবেন এই চিকেন ইয়াখনি পোলাও।
পরিবেশন
- ৬ জনের জন্য
প্রস্তুতির
সময় - ৫ মিনিট
রান্নার
সময় - ১ ঘন্টা
উপকরণঃ
·
বাসমতী চাল - ২ কাপ (আধ
ঘন্টা ভিজিয়ে রাখবেন)
·
মুরগীর মাংস - ৮০০গ্রাম
(মাংস)
·
আলু- ৬ টুকরো (বড়)
·
পেঁয়াজ - ২ টি বড় মাপের
·
আদা - ১-১.৫ ইঞ্চি টুকরো করা
·
রসুন- ৮-১০ কোয়া
·
শা জিরে - ১ চা চামচ
·
গোটা ধনে - ১ চা চামচ
·
দারচিনি - ১ ইঞ্চির একটি
টুকরো ছোট এলাচ - ২-৩টি
·
জয়িত্রি - ১ টি
·
জায়ফল - ১ চুটকি
·
গোটা গোলমরিচ- ৭-৮ টি
·
শা মরিচ- ৭-৮ টি
·
তেজপাতা- ২-৩ টি
·
নুন - স্বাদমতো
·
ঘি - ৪ টেবিল চামচ
·
এবং একটি পরিষ্কার কাপড়ের
টুকরো
প্রণালীঃ
প্রথমে
মুরগীর মাংস ভাল করে ধুয়ে নিন। এবার আলুর টুকরোগুলো ভেজে তুলে রাখুন। পেঁয়াজগুলো
চার টুকরো করে কেটে নিন।
এবার
একটি পরিষ্কার কাপড়ের মধ্যে আদা, রসুন, পেয়াঁজ, তেজপাতা, দারচিনি, এলাচ, শা
জিরে, শা
মরিচ, গোল
মরিচ, জায়ফল, জয়িত্রি
সব একসঙ্গে নিয়ে একটি পুঁটুলি তৈরি করতে হবে। লক্ষ্য রাখবেন যাতে কোনো উপকরণই
বেরিয়ে না আসে।
প্রেসার
কুকারে জল দিন যাতে সব মাংসের টুকরোগুলি পুরোপুরি ডুবে থাকে। পরিমাণমতো নুন দিয়ে, আগে
থেকে তৈরি করে রাখা মশলার পুঁটলিটা দিয়ে ঢাকা দিয়ে দিন। গনগনে আঁচে বসিয়ে ১-২ টি
সিটি দিন। মাংস অর্ধেক সিদ্ধ হয়ে এলে দেখবেন জলের রং ঘোলাটে হয়েছে। স্বাদে অনেকটা
স্ট্যু এর মতো লাগবে। এবার মাংসের টুকরোগুলি আলাদা সরিয়ে রেখে দিন এবং এই স্টকটা
ছেঁকে নিন। আমাদের শুধু এই স্টক বা জলটা চাই। এটাই তৈরি হল পোলাওয়ের ইয়াখনি। এই
ইয়াখনির মধ্যেই তৈরি হবে পোলাও।
একটি
ডেচকি জাতীয় পাত্র আঁচে বসান। এতে ঘি দিন। ঘি গরম হলে তাতে অর্ধেক সিদ্ধ মাংসগুলি
দিয়ে হাল্কা হাতে ভেজে নিন। বেশি নাড়াচাড়া করবেন না, তাহলে
মাংস ঘেঁটে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। মাংসে সোনালি রং ধরলে আগে থেকে জলে ভিজিয়ে
রাখা চাল এবং ভাজা আলু দিয়ে দিন। আবার হাল্কা হাতে চাল আর মাংস মিশিয়ে নিয়ে এতে
ইয়াখনিটা দিয়ে দিন। জলের মাপ এমন হবে যেন চালের উপর থেকে আঙুলের ১ কড় বেশি ইয়াখনি
থাকে।
একটি হাতার সাহায্যে ভাল করে মিশিয়ে দিয়ে ঢাকা দিয়ে দিন। প্রথম ৫ মিনিট জোর আঁচে রাখুন, চাল ফুটতে শুরু করলে আঁচ কমিয়ে দিন। ইয়াখনি শুকিয়ে চাল যখন ৮০% সিদ্ধ হয়ে যাবে, আঁচ বন্ধ করে ১০-১৫ মিনিট ঢাকা দিয়ে রাখুন। গরম ভাপে ঝুরঝুরে পোলাও হয়ে গেলে নামিয়ে পরিবেশন করুন।
পুনশ্চ :
১)
ভাত ঝুরঝুরে করতে হলে ভাত ফোটার সময় এতে একটি লেবুর রস দিয়ে দেবেন। চালের কোনও
দানা কোনও দানার সঙ্গে লাগবে না। ফলে ভাত ভাঙার সুযোগ কম এবং ভাত ঝুরঝুরেও হবে।
২) আপনি পাঁঠার মাংস দিয়েও করতে পারেন। মাপ একই থাকবে। সেক্ষেত্রে ২-৩ টি সিটি দিতে হবে।
কলমে - সু স্মি
তা না থ পা ল
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন