বর্তমানে গোটা বিশ্বেই বৃদ্ধি পাচ্ছে অকাল প্রসবজনিত শিশুর সংখ্যা।তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার সাহায্যে সময়ের আগে জন্মানো শিশুদের শারীরিক ত্রুটিমুক্ত করে সুস্থ করে তলা সম্ভব হচ্ছে। প্রতি বছর ১৭ই নভেম্বর বিশ্ব প্রিম্যাচিওরিটি দিবস পালন করা হয়। ফর্টিস হাসপাতালের শিশু ও সদ্যোজাত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুমিতা সাহা এই বিষয়ে আলোকপাত করে বলেছেন - পৃথিবী জুড়েই বাড়ছে প্রিম্যাচিওর শিশুর সংখ্যা।বিভিন্ন পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতি দশটি শিশুর মধ্যে একটি প্রিম্যাচিওর শিশু জন্মায়। তিনি বলেন, এই ধরনের শিশুদের মধ্যে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা থাকে। তবে উন্নত পরিকাঠামোয় চিকিৎসা হলে এই শিশুদের বাঁচিয়ে তোলা সম্ভব।
অকালপ্রসব কাকে বলা হয়?
স্বাভাবিক গর্ভধারনের সময়কাল ৪০ সপ্তাহ ধরা
হয়। যদি প্রসব নির্দিষ্ট সময়ের ৩ সপ্তাহের
আগে অর্থাৎ ৩৭ সপ্তাহের আগে হয়ে যায় তাকে অকাল প্রসব বা Premature
Birth বলে ।
নির্দিষ্ট সময়ের আগে জন্মানো শিশুদের স্বাভাবিকভাবেই
চিকিৎসাগত জটিল সমস্যা তৈরি হয়। সময়ে যত বেশী আগে শিশু জন্মায় তত বেশী জটিল শারীরিক
সমস্যা হয়।
অকালের প্রসবের সময়কে কয়েকটি ভাগ করা হয় –
১. লেট প্রিটার্ম (Late preterm)ঃ এক্ষেত্রে ৩৪ থেকে
৩৬ সপ্তাহ পূর্ণ হবার পরে প্রসব হয়ে যায়।অধিকাংশ অকাল প্রসব এই সময় সীমাতেই হয়ে থাকে।
২. মডারেটলি প্রিটার্ম (Moderately preterm)ঃ এক্ষেত্রে ৩২ থেকে ৩৪
সপ্তাহ পূর্ণ হবার পরে প্রসব হয়ে যায়।
৩. ভেরি প্রিটার্ম (Very preterm)ঃ এক্ষেত্রে ৩২ সপ্তাহের পূর্বেই প্রসব হয়ে যায়।
৪. এক্সট্রিমলি প্রিটার্ম (Extremely preterm)ঃ এক্ষেত্রে ২৫ সপ্তাহে
প্রসব হয়ে যায়।
উপসর্গঃ
নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে জন্মানো শিশুদের জন্মানোর
সময়ের ওপর নির্ভর করে সামান্য থেকে অত্যধিক জটিল শারীরিক সমস্যা হয়ে থাকে।
- স্বাভাবিকের থেকে কম ওজন
- ক্ষুদ্রাকৃতি, কিন্তু অসামঞ্জস্যপূর্ণ বড় মাথা।
- স্বল্প মেদ সঞ্চয়ের কারণে পূর্ণ-মেয়াদী শিশুর শারীরিক বৈশিষ্ট্যর তুলনায় শারীরিক অসম্পূর্ণতা।
- শ্বাসকষ্ট বা নিঃশ্বাস গ্রহনে অসুবিধা।
- শরীরে স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখার অক্ষমতা।
- অঙ্গ প্রত্যঙ্গ স্বাভাবিক চালনা করার অক্ষমতা।
- ফ্যাকাসে বা হলুদ রঙের চামড়া।
- খাদ্য গ্রহনে অসুবিধা।স্তনপানে সমস্যা এবং গিলতে না পারার সমস্যা।
- সারা শরীর হালকা লোমে (lanugo) আবৃত হওয়া।
অকাল প্রসবের কারন সব সময় সঠিকভাবে নির্ধারন করা সম্ভব হয় না। এটি বিভিন্ন প্রসূতির বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে। তাও কিছু কিছু বিষয়কে এর সম্ভাব্য কারন হিসাবে ধরা হয়।
অকাল প্রসব হওয়ার সম্ভাব্য কারন সমূহ ::
১। যদি প্রসূতির নিম্নলিখিত কোনো একটি সমস্যা
থাকে তাহলে হতে পারে-
- হৃদজনিত সমস্যা ( Heat Disease)
- মধুমেহ ( Diabetes)
- উচ্চরক্তচাপ জনিত সমস্যা ( High Blood Pressure)
- কিডনির সমস্যা (Kidney Disease)
- জরায়ু, সার্ভিক্স বা প্লাসেন্টাতে কোনো প্রকার ব্যাধি থাকলে।
- গর্ভধারণের পূর্বে অতিরিক্ত ওজন হ্রাস বা ওজন বৃদ্ধি জনিত সমস্যা।
- অতিরিক্ত উদ্বেগপূর্ণ জীবনযাত্রা, বিশেষ করে নিকটজনের মৃত্যু বা গার্হস্থ্য হিংসার শিকার।
- বারংবার গর্ভপাত (miscarriages or abortions)
২। গর্ভধারনকালীন সমস্যা -
- গর্ভাকালীন বা তার আগে পুষ্টির অভাব।
- ধূমপান, অতিরিক্ত মদ্যপান বা মাদক সেবন।
- কিছু বিশেষ ধরণের সংক্রমন যেমন ইউনারি ট্র্যাক ইনফেকসন ও অ্যামনিওটিক মেমব্রেন ইনফেকসন।
- যমজ বা দুইয়ের অধিক শিশুর গর্ভধারণ।
- পূর্বে অকাল প্রসব।
- একটি প্রসবের ৬ মাসের মধ্যেই গর্ভধারণ করা।
- in vitro fertilization এর মাধ্যমে গর্ভধারণ।
- ইউটেরাস এর অস্বাভবিকতা।
- প্রসূতির বয়স ১৭ বছরের কম বা ৩৫ বছরের বেশী হলে।
- শারীরিকভাবে আঘাত প্রাপ্ত হলে।
চিকিৎসাজনিত জটিলতাঃ
সমস্ত অকাল প্রসবিত শিশু জটিলতার সম্মুখীন না হলেও, সময়ের পূর্বে জন্ম নেওয়া অধিকাংশ শিশুরা স্বল্পমেয়াদী থেকে দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে জন্মায়। সাধারণত, একটি শিশু
যত তাড়াতাড়ি জন্মগ্রহণ করে, জটিলতার ঝুঁকি তত বেশি হয়। জন্মের সময়ের ওজনও এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
স্বল্পমেয়াদী সমস্যাঃ
জন্মের প্রথম সপ্তাহে একজন অকাল প্রসবিত শিশুর
যে সমস্যাগুলো হয় –
শ্বাসকষ্টঃ অপরিণত শ্বাসতন্ত্রের কারণে একটি অকাল প্রসবিত শিশুর শ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে।শিশুর ফুস্ফুসে সারফ্যাকট্যান্টের অভাবের দরুন ফুস্ফুসের সংকোচন ও প্রসারনজনিত স্বাভাবিকভাবে হতে পারে না। ফলে শ্বাসকষ্ট তৈরি হয়। অপরিণত শিশুদের ব্রঙ্কোপলমোনারি ডিসপ্লাসিয়া (bronchopulmonary dysplasia) নামে পরিচিত একটি ফুসফুসের ব্যাধিও হতে পারে। এছাড়াও, কিছু এই ধরণের শিশুদের শ্বাস-প্রশ্বাসের বিশেষ বিরতি ঘটে থাকে যা অ্যাপনিয়া নামে পরিচিত।
হৃদরোগঃ এই ধরণের শিশুদের সবচেয়ে সাধারণ হৃদরোগের সমস্যা হল পেটেন্ট ডাক্টাস আর্টেরিওসাস (PDA) এবং নিম্ন রক্তচাপ (hypotension)। যদিও PDA প্রায়শই নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যায়, তবে চিকিৎসা না করা হলে এটি হৃদযন্ত্রের অন্যান্য জটিল অসুস্থতা, হার্টফেলিওর এবং সেইসাথে অন্যান্য জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে। নিম্ন রক্তচাপের জন্য বিভিন্ন ওষুধ এবং কখনও কখনও রক্তদানের প্রয়োজন হতে পারে।
মস্তিকের ত্রুটিঃ যত তাড়াতাড়ি একটি শিশুর জন্ম হয়, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি তত বেশি হয়, যা ইন্ট্রাভেন্ট্রিকুলার হেমোরেজ (intraventricular hemorrhage) নামে পরিচিত। বেশিরভাগ রক্তক্ষরণ কম জটিলতাপূর্ণ হয় এবং দ্রুত সারিয়ে তোলা হয়। কিন্তু কিছু শিশুর মস্তিষ্কে বেশী রক্তক্ষরণ হতে পারে যা মস্তিষ্কে স্থায়ী ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
তাপমাত্রার বজায় রাখার অসুবিধাঃ অপরিণত শিশুদের শরীরের তাপ দ্রুত হ্রাস পেতে থাকে। তাদের শরীরে একটি পূর্ণ-মেয়াদী শিশুর শরীরে সঞ্চিত
ফ্যাটের তুলনায় কম ফ্যাট সঞ্চিত থাকে এবং এর ফলে এই শিশুদের দেহ
প্রয়োজনীয় তাপ উৎপাদন করতে পারেনা। যদি শরীরের তাপমাত্রা অত্যধিকমাত্রায়
হ্রাস পেয়ে যায় তাহলে হাইপোথার্মিয়া হওয়ার সম্ভাবনা হয়।
হাইপোথার্মিয়ার ফলে শিশুর শ্বাসকষ্ট শুরু হয় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যেতে থাকে।খাদ্যগ্রহনের ফলে যেটুকু শক্তি শিশুর শরীরে তৈরি হয় তা দেহের তাপমাত্রা বজায় রাখতে ব্যবহৃত হয়ে যায়। এই কারণেই নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে জন্মানো শিশুদের ইনকিউবেটরে রাখা হয়, যাতে তাদের শরীর প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা পেতে পারে। যতদিন না সাহায্য ছাড়াই শিশুর শরীর তাপমাত্রা বজায় রাখতে সক্ষম হয়, ততদিন ইনকিউবেটরের মধ্যেই তাকে রাখা হয়।
গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যাঃ নির্ধারিত সময়ের পূর্বে জন্মানো শিশুদের অপরিণত গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সিস্টেম হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে, যার ফলে নেক্রোটাইজিং এন্টারোকোলাইটিস (necrotizing enterocolitis) এর মতো জটিলতা দেখা দেয়।শিশুর খাদ্যগ্রহনের পরে এই রোগের ফলে শিশুর অন্ত্রের প্রাচীরের আস্তরণের কোষগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে। তবে যে সমস্ত প্রিম্যাচিওর শিশু শুধুমাত্র স্তনদুগ্ধ পান করে তাদের এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেক কম থাকে।
রক্তজনিত সমস্যাঃ অপরিণত শিশুদের বিভিন্ন রক্তের সমস্যা যেমন রক্তস্বল্পতা এবং নবজাতকের জন্ডিসের ঝুঁকি থাকে।শরীরে পর্যাপ্ত লোহিত রক্তকণিকার অভাবে অ্যানিমিয়া সৃষ্টি হয় । যদিও সমস্ত নবজাতকের জীবনের প্রথম মাসগুলিতে লোহিতরক্তকণিকার সংখ্যা ধীরে ধীরে হ্রাস পায়, তবে প্রিম্যাচিওর শিশুদের ক্ষেত্রে হ্রাস পাওয়ার সংখ্যা অনেক বেশী হয়।
লোহিতকনিকা ভেঙ্গে লিভার থেকে সৃষ্ট কমলা-হলুদরঞ্জক
পদার্থ “বিলিরুবিন”-এর অতিরিক্ত ক্ষরনের ফলে সদ্যজাত অপরিণত শিশুর ত্বক ও চোখ হলুদবর্ণ
ধারণ করে, ‘জন্ডিস’ রোগে আক্রান্ত করে। যদিও জন্ডিস হওয়ার বহুবিধ কারণ আছে, তবে প্রিম্যাচিওর শিশুর এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশী হয়।
বিপাকীয় সমস্যাঃ নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে জন্ম নেওয়া শিশুদের প্রায়ই তাদের বিপাকীয় সমস্যা হয়। কিছু শিশুর রক্তে শর্করার লেভেল অস্বাভাবিকভাবে
কমে গিয়ে হাইপোগ্লাইসেমিয়া ( hypoglycemia) সৃষ্টি করে। কারণ প্রিম্যাচিওর শিশুদের সাধারণত পূর্ণ-মেয়াদী শিশুদের
তুলনায় গ্লুকোজের কম সঞ্চিত হয়। অপরিণত শিশুদের ক্ষেত্রে তাদের শরীরে সঞ্চিত গ্লুকোজকে সক্রিয়
গ্লুকোজে রূপান্তর করতে বেশী অসুবিধা হয়।
রোগপ্রতিরোধে সমস্যাঃঅপরিণত শিশুদের রোগপ্রতিরোধ
ক্ষমতা তুলনামুলকভাবে অত্যন্ত কম হওয়ায় শিশু যে কোনো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা
বৃদ্ধি পায়।ফলে অনেক সময় রক্তপ্রবাহ সংক্রামিত হয়ে সারা শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পরে সেপসিস
(sepsis) রোগে শিশু আক্রান্ত হয়।
অনেক সময় নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে জন্মানোর ফলে শিশুদের কিছু দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত হতে দেখা যায়।
সেরিব্রাল পালসিঃ অপর্যাপ্ত রক্ত প্রবাহ বা নবজাতকের
বিকাশকালে মস্তিষ্ক আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে
সেরিব্রাল পালসি হয়। এর ফলে শিশুর নড়াচড়া, পেশীর স্বর
বা অঙ্গবিন্যাস ব্যহত হয়।
এই সংক্রমন গর্ভাবস্থার প্রথম কয়েক সপ্তাহে বা অপরিণত জন্মানোর সময় হতে পারে।
শিক্ষা গ্রহনে অক্ষমতাঃ শিশুর বৃদ্ধির বিভিন্ন
পর্যায়ে অনেক সময় প্রিম্যাচিওর শিশুরা সমবয়স্ক শিশুদের তুলনায় যে কোনো ধরণের শিক্ষা
গ্রহনের ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকে।
দৃষ্টি সমস্যাঃ অপরিণত শিশুদের ক্ষেত্রে অনেক সময় “রেটিনোপ্যাথি”
রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। এই রোগের ফলে চোখের পিছনের (রেটিনা) স্নায়ুর আলো-সংবেদনশীল স্তরে রক্তনালীগুলি ফুলে যায় এবং অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত
হয়।ফলে শিশু retinal detachment রোগে আক্রান্ত হয়। এই রোগ যদি সঠিক সময়ে সনাক্ত করা
না যায় তাহলে দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে অন্ধত্বের সৃষ্টি
হতে পারে।
শ্রবণ সমস্যাঃ অপরিণত শিশুদের কিছু মাত্রায় শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত
হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। তাই জন্মানোর কয়েকদিনের মধ্যেই শিশুর শ্রবণশক্তি পরীক্ষা করা দরকারি হয়ে পড়ে।
দাঁতের সমস্যাঃ গুরুতরভাবে অসুস্থ প্রিম্যাচিওরড
শিশুদের ক্ষেত্রে দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। যেমন দেরীতে দাঁত বার হওয়া, দাঁতের
অসামঞ্জস্যপূর্ণ সজ্জা, বিবর্ণ দাঁত প্রভৃতি।
মানসিক ও ব্যবহারগত সমস্যাঃ এই ধরণের শিশুদের
ক্ষেত্রে অনেক সময় বিভিন্ন মানসিক ও ব্যবহারগত সমস্যায় আক্রান্ত হতে দেখা যায়। পরিণত
শিশুদের তুলনায় এদের বৃদ্ধিও অনেক সময় ব্যহত হয়।
দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যাঃ প্রিম্যাচিওরড
শিশুদের বিভিন্ন ধরণের দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যায় (chronic health issues) ভুগতে দেখা যায়। হাঁপানি, খাদ্যগ্রহনে অসুবিধা
প্রভৃতি সমস্যায় প্রায় সারাজীবন এই ধরণের শিশুরা আক্রান্ত হতে থাকে।প্রিম্যাচিওরড শিশুদের
ক্ষেত্রে মৃত্যুহার বা sudden
infant death syndrome (SIDS) তুলনামূলকভাবে বেশী হয়।
অকালপ্রসবের ঝুঁকি এড়াতে
প্রসূতিদের করণীয় :
১) অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন
চিকিৎসকের দেওয়া আয়রন ও ফলিক অ্যাসিড নির্ভর ওষুধ অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে।
২) সুষম ও পুষ্টিকর আহার
অবশ্য-প্রয়োজনীয়।
৩) চিকিৎসকের নির্দেশ ব্যতীত
যথেচ্ছ ওষুধ খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে।
৪) ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন থেকে
দূরে থাকাই শ্রেয়।
৫) উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের
সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সেগুলি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
৬) একজন অন্তঃসত্ত্বা নারীর সঠিক
ওজন মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ওজন অতিরিক্ত কম বা বেশি হয়ে গেলে
অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৭) মানসিক চাপমুক্ত থাকা অত্যন্ত
প্রয়োজনীয়। পছন্দের গান শোনা, প্রিয় বই পড়া, শখের কাজগুলিতে মনোনিবেশ করা ইত্যাদি অনেকাংশে সাহায্যকারী।
৮) নিয়মিত গর্ভকালীন চেকআপে
যাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোনো শারীরিক সমস্যা অথবা অস্বস্তি অনুভব করলে
চিকিৎসককে তৎক্ষণাৎ জানানো উচিত।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে সবরকম সাবধানতা
অবলম্বন করেও শারীরিক সমস্যার জটিলতার কারণে একজন অন্তঃসত্ত্বাকে অকালপ্রসবের
সম্মুখীন হতে হয়। তবে এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। বর্তমানে উন্নত চিকিৎসা
ব্যবস্থার কারণে নতুন মা ও নবজাত শিশু দু'জনেই সুস্থ ও বিপদমুক্ত থাকে। তবুও
আমাদের পক্ষে যতটা করা সম্ভব, অকালপ্রসবের ঝুঁকি এড়াতে সেটুকু করাই সমর্থনযোগ্য।কিছুক্ষেত্রে অল্প সময়ের চিকিৎসার মাধ্যমে
শিশুকে সুস্থ করে তোলা যায় । তবে অনেক ক্ষেত্রে সমস্যাগুলি সারাজীবন স্থায়ীও থেকে
যায় ।বর্তমানে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার ফলে প্রসূতির সঠিক চিকিৎসা ও পরিস্থিতি
অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহনের মাধ্যমে প্রিম্যাচিওরড ডেলিভারির সম্ভাবনা হ্রাস করা হয়।
কিছুক্ষেত্রে অল্প সময়ের চিকিৎসার মাধ্যমে
শিশুকে সুস্থ করে তোলা যায় । তবে অনেক ক্ষেত্রে সমস্যাগুলি সারাজীবন স্থায়ীও থেকে
যায় ।বর্তমানে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার ফলে প্রসূতির
সঠিক চিকিৎসা ও পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহনের মাধ্যমে প্রিম্যাচিওরড ডেলিভারির
সম্ভাবনা হ্রাস করা হয়।
কলমে - পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন