১। পাত্রের কানায় সামান্য মাখন বা গ্লিসারিন লাগিয়ে দিলে দুধ উথলে পড়ার
সম্ভাবনা থাকে না।বা কাঠের হাতাও যদি দুধের মধ্যে রেখে দেওয়া হয়
তাহলেও দুধ উপচে পড়ার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
২। পেয়াঁজ এবং আলু একসাথে একই পাত্রে রাখলে তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়।
আলু ও পেঁয়াজ পৃথকভাবে মাটিতে খবরের কাগজ
বিছিয়ে তার উপর ছড়িয়ে রাখলে বহুদিন ভালো থাকে, পচে নষ্ট হবার সম্ভাবনা থাকে না।
৩।বিস্কুট নেতিয়ে যাওয়া খুব সাধারণ একটি সমস্যা। বায়ুরোধক
কৌটোতে রাখলে বা বিস্কুটের টিনের ভেতরে ব্লটিং পেপার রেখে দিলে
বর্ষাকালেও বিস্কুট মুচমুচে থাকে।
৪। চায়ের কাপে বা চা বানানোর পাত্রে লেগে থাকা
বাদামী রংয়ের চায়ের দাগ লবণ দিয়ে ঘষলে সহজে উঠে যায়।
৫। জলে সামান্য কেরোসিন তেল মিশিয়ে রান্নাঘর
মুছলে মশা-মাছি ও পিঁপড়ের উৎপাত কমে যায়। খানিকটা কর্পূর গুঁড়ো করে ছিটিয়ে দিলে ছারপোকার উপদ্রব থাকবে না।সপ্তাহে অন্তত একদিন সাবান
জল ব্যবহার করে ঘর পরিষ্কার করা উচিত। এতে পোকামাকড় দূর হওয়ার সাথে সাথে ঘরের
আবহাওয়া তরতাজাও থাকে।
৬। কিছু কিছু সবজি যেমন মোচা, থোড়,এঁচোড়,কচু প্রভৃতি কাটলে হাতে
কালচে দাগ হয়। তাই সব্জি কাটার সময় প্লাস্টিকের গ্লাভস পড়ে নিলে
এই সমস্যার থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।অথবা সবজি কাটার আগে হাতে সরষের
তেল মাখলে কালচে দাগ আর হবে না । দাগ হলে ভিনিগার কিংবা
তেঁতুল কিংবা লেবুর রসে লবণ মিশিয়ে আঙ্গুলে
লাগিয়ে রেখে ধুয়ে নিলেও দাগ উঠে যায়।
৭। বাসনপত্রে সাবানের সাথে কয়েক ফোঁটা
লেবুর রস বা ভিনিগার ছিটিয়ে
ধুয়ে নিলে আঁশটে গন্ধ থাকে না।
৮। ভাজার জন্য কেটে রাখা বেগুন বেশ কিছুক্ষণ আগে লবণ-হলুদ মাখিয়ে রাখলে ভাজতে
তেল কম লাগে।বেগুনের টুকরোর গায়ে হালকা বেসনের প্রলেপ দিয়ে ভাজলে তা
অত্যন্ত স্বাদবিশিষ্ট হয় এবং তেলও কম লাগে।
৯। পাত্রের পোড়া দাগ উঠাতে পাত্রের গায়ে বেকিং সোডা সামান্য জলে
গুলে পোড়া জায়গায় মাখিয়ে কয়েক ঘন্টা রেখে দিতে হবে। পরে ধুয়ে নিলে দাগ চলে যাবে।
১০। চিনির পাত্রে কয়েকটি লবঙ্গ রাখলে পিঁপড়ে
আসবে না।চালের কৌটোতে এক মুঠো শুকনো লঙ্কা রেখে দিলে
পোকা লাগবে না। বহুদিন চাল ভালো থাকবে।
১১। বাটা মশলা সামান্য লবণ ও ভিনিগার মিশিয়ে রেখে দিলে
নষ্ট হয়না, বেশ কয়েকদিন পরও ব্যবহার করা যায়।
১২। রান্নাঘরে কাগজ পোড়া ধোঁয়া
দিলে মাকড়সার উৎপাত কমে যাবে।
১৩। গরম তেলে আচার ডুবিয়ে রাখলে আচারে ফাঙ্গাস পড়ে না অথবা আচার তৈরি করার সময় তেলে একটু ভিনিগার মিশিয়ে নিলে
আচার অনেকদিন ভালো থাকে।
১৪। রেফ্রিজারেটর ঘন ঘন খুললে ও বন্ধ করলে ভেতরে বাতাস ঢুকে খাবার নষ্ট হয়ে
যেতে পারে এবং বিদ্যুৎ খরচও হয় বেশি। তাই বারবার না খুলে চেষ্টা করতে হবে রান্নায়
যা যা লাগবে তা একবারে বের করে নেয়া।
১৫। দেশলাই বাক্সে কয়েকটা শুকনো চাল রেখে দিলে বর্ষাকালেও দেশলাই কাঠির বারুদ ভাল থাকে।আগুন জ্বালাতে অসুবিধা হয়না।
১৬। পরোটা নরম রাখার জন্য জন্য ময়দা গরম জল বা টকদই
দিয়ে মেখে পাতলা কাপড় দিয়ে কিছুক্ষণ জড়িয়ে রাখলে খুব সুন্দর
নরম ও মুচমুচে পরোটা তৈরি হয়।
১৭। একসাথে অনেক রসুন ছাড়াতে সময় বেশি লাগে।রসুনের
কোয়া ছাড়িয়ে নিয়ে বন্ধ কৌটার মধ্যে নিয়ে জোরে জোরে ঝাঁকুনি দিলে খোসা আলাদা হয়ে
যায়।অথবা আস্ত রসুন ফুটন্ত জলে মিনিট দুয়েক ভিজিয়ে হাতে ঘষলে ওপরের
খোসা ছেড়ে যায়।
১৮। পিঁয়াজ কাটার আগে দু’টুকরো করে কিছুক্ষণ জলে ভিজিয়ে রেখে কাটলে চোখ জ্বালা করে না।বা চোখের তুলনায় বড় আকৃতির
চশমা পরে কাটলে চোখ দিয়ে জল পড়বে না।
১৯। ঘরের বাইরে খাবার নিতে হলে যদি সাধারণ
টিফিন বাক্স ব্যবহার করা হয় তাহলে খাবার বাতাসে ঠান্ডা করে নিতে হবে। কখনোই গরম
গরম খাবার বাক্সে নেওয়া যাবে না, এতে খাবার গন্ধ হয়ে
পচে যেতে পারে।
২০। সবজি পরিষ্কার করে কেটে প্যাকেটজাত করে
রেফ্রিজারেটরে রাখতে পারেন। এতে সময় কম ব্যয় হবে।এছাড়া শাক বা পাতা
জাতীয় সব্জিও প্লাস্টিকের প্যাকেটে ভালো করে মুড়ে ফ্রিজে রাখলে বেশ কয়েকদিন তরতাজা
থাকে।
২১। ফ্রিজে একটি পাতিলেবু টুকরো টুকরো করে
কেটে রেখে দিন দেখবেন ফ্রিজের ভেতরে কোন গন্ধ নেই।অথবা একটি ছোট্ট বাটিতে
জলের মধ্যে খাবার সোডা মিশিয়ে ফ্রিজের কোণায় রেখে দিলে ফ্রিজে দুর্গন্ধ থাকে না।
২২। ডিম ফাটানোর সময় সাদা অংশটা আলাদা করার জন্য ফেটানো ডিম ছাকনিসহ ফানেলের
মধ্যে ঢালুন, দেখবেন সাদা অংশ নিচে পড়েছে, কুসুম
উপরে রয়ে গেছে।
২৩। বাজার থেকে কেনা যে কোনো পাকা ফল বা শাক- সব্জি রান্না করার
অন্তত আধা ঘণ্টা হালকা উষ্ণ জলে এক চামচ নুন মিশিয়ে ভিজিয়ে রাখা উচিত। কারণ বেশির ভাগ ফল ও সব্জি পাকানো ও সংরক্ষণের জন্য কারবাইড ও ফরমালিন
ব্যবহার করা হয়।নুনজলে ভিজিয়ে রাখলে সব্জি ও ফলের বিষাক্ত রাসায়নিক জিনিসের
প্রভাব নষ্ট হয়। খাওয়ার উপযোগী হয়ে ওঠে।
২৪। চাল ধোয়া জলে স্টীল ও কাঁচের বাসন কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রেখে তারপর ধুয়ে নিলে
বাসনগুলো ঝকঝক করবে।এছাড়া চাল – ডাল ধোয়া জল গাছের গোড়ায় দিলে স্টার্চ
যুক্ত জল গাছে সারের কাজ করে।
২৫। রুটি বা পরোটা বেলার সময় বেলনে ময়দা বা আটা
জড়িয়ে যায়। এইজন্য এগুলো তৈরির আগে অল্প সময়ের জন্য বেলন
ফ্রিজে ঠান্ডা করুন। তাহলে বেলন দিয়ে বেলার সময় গায়ে কিছু জড়াবে না।
২৬।
ডাল সেদ্ধ করার আধা ঘণ্টা আগে ভিজিয়ে রেখে দিলে ডাল ভালো সেদ্ধ হয়। ডাল সেদ্ধ করার
সময় ডালে অল্প নুন, হ্লুদ ও এক চামচ তেল মিশিয়ে সেদ্ধ করলে ডালের স্বাদ বৃদ্ধি হয়।
মটর,ছোলা, বিউলি প্রভৃতি ডাল সেদ্ধ করার সময় এক চিমটে খাবার সোডা মিশিয়ে দিলে ডাল
ভালো সেদ্ধ হওয়ার সাথে সাথে স্বাদ ও বেড়ে যায়।
২৭।
ডাল পোকার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য শুকনো কড়াইতে ডাল অল্প ভেজে রেখে দিলে উপকার
পাওয়া যায়।
২৮।
সুজিতে খুব তাড়াতাড়ি পোকা হয়ে যায়। তাই নতুন সুজিও শুকনো কড়াইতে ভেজে নিয়ে ঠাণ্ডা
করে কৌটোতে রেখে দিলে দীর্ঘদিন ভালো থাকবে, পোকা হবে না।
কলমে - আবীর সেনগুপ্ত
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন