“তোর কাছে ভালোবাসা দিবস হলেও আমার লালপিপঁড়ে কামড় দিবস” বাপরে বাপ! কী কামড়ই না খাইছিলাম। হাবু তার স্ত্রীকে বলল।
“নে, আর দেরি করিস না। চল মেলায় যাই। দেখতো কত ট্যাক্যা আছে”?
“মোট ৫২৭ টাকা, মাত্র
এই টাকা নিয়া মেলা নিতে চাচ্ছ?
কাইল
কিন্তু ঋণের কিস্তি আছে”
”বিয়ের আগে লাল পিঁপড়ে দিয়ে মার দিছিস, আজকে আবার পাবলিক দিয়া মার দিবি” হাবু উত্তর
দেয়।
“আচ্ছা এখন না হয় বিকাল, রাতে ফেরার সময় কইলাম আমি চালাব, কেউ দেখতে পাবে না”
”আচ্ছা, দেব।
দেখব কেমন রিক্সা চালাতে পারিস”
গোলাপী বলে, “শোন, মেলায়
যা খাব দুইজন ভাগ করে সমান করে খাব”
“ঠিক আছে” হাবু উত্তর দেয়।
“পাতা কপি না ফুল কপি? গোলাপী বলে।
বেশ রাত হয়ে গেছে। ওরা দুজন মেলা থেকে ফিরছে। নির্জন রাস্তায় আসতেই হাবু বলে “ভালো করে চাদর গায়ে জড়িয়ে চুল ঢেকে নে। কেউ যেন চিনতে না পারে” দেখি কেমন রিক্সা চালাতে পারিস!
“ঠিক আছে” বলেই গোলাপী রিক্সা চালাতে থাকে, হাবু সীটে বসে।
গোলাপীর খুবই কষ্ট হচ্ছে দেখে হাবু বলে “তুই নাম! আমি চালাই”
হঠাৎ হুড়মুড় করে একজন রিক্সার সামনে গিয়ে দাড়াঁয়। “আধা ঘন্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি, মেলার জন্য কোন রিক্সা নাই“! বলেই রিক্সায় উঠে পড়ে।
এটা রিজার্ভ রিক্সা। উঠবেন না। হাবু বাঁধা দেয়!
“চুপ কর! এক থাপ্পরে গাল ফাটিয়ে দেব। তুই
আমারে চিনিস? লোকটি বলে।
হাবুর খুবই ইচ্ছে হচ্ছে রিক্সাটা নিজে চালাতে! কিন্তু বউ অন্য লোকের পাশে বসে যাবে…. তাও আবার ভালোবাসা দিবসে? ভাবতেই কষ্ট লাগে।
রাত অনেক হয়ে গেছে। ওরা খেয়ে দেয়ে গল্প করছে। হঠাৎ বাক্স হতে গোলাপী কানের দুল বের করে হাবুর হাতে দিয়ে বলে “রিক্সা চালাতে এত কষ্ট আগে জানতাম না। এইটা বিক্রয় করে ব্যটারী রিক্সা বানাও।
“না থাক! তুই শাড়ীটা খুব পছন্দ করছিলি! তোর
হাত ধরে কথা দিলাম, আজ থেকে বিড়ি/সিগারেট
খাওয়া বাদ। প্রতিদিন ২০ টাকা করে জমিয়ে তোকে শাড়িটা কিনে দেব।
গভীর ভালোবাসায় দু’জন
দু’জনকে জড়িয়ে ধরে, একটু পরেই লক্ষ্য করে
দু’জনের চোখ দিয়েই অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে।
কলমে - হাদী উল ইসলাম
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন