অমল বাবু তার ছেলেকে নিয়ে খুব চিন্তা করছেন। কারণ, ৫ বছর বয়স হয়ে গেলেও নীল ঠিক মতো কথা বলতে পারছে। ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলেন। সেখানে জানতে পারলেন ওর স্বরযন্ত্রে কিছু সমস্যা আছে।
বীর আবার আটকে আটকে কথা বলে। টুসি তোতলায়। শতরূপার জিভের নীচের দিকটার সমস্যা আছে।
বিখ্যাত বিজ্ঞানী আইনস্টাইন অনেক বড় পযর্ন্ত কথা বলেন নি। তিনি সব বুঝতেন তাও কথা বলেন নি। তাঁর মনে হত কথা বলতে প্রচুর কষ্ট করতে হয়! তাই চুপ থাকাই ভালো!
যাইহোক, আমরা জানি কথা বলা মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। জন্ম নেওয়ার পর থেকেই এর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। কথা বলতে গেলে 'ভাষা'-র প্রয়োজন হয়।
‘‘ভাষা এমন হওয়া চাই যাহাতে ভাব অবাধে প্রকাশ পাইতে পারে।’’ – স্বামী বিবেকানন্দ
'ভাষা' হচ্ছে প্রতীকরূপে ব্যবহৃত যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। সাধারণত মনে করা হয় প্রত্যেকটি সজীব প্রাণীর নিজ নিজ ভাষা আছে, কিন্তু মানুষের মতো ভাষার সাহায্যে যোগাযোগ কেউই করতে পারে না। ভাষার বিকাশ এবং এর ব্যবহার সমাজ এবং মানব অস্তিত্বের মূল বিষয়। ভাষার ব্যবহারের মধ্যে বাচনিক ও অবাচনিক উভয় ক্ষেত্রেই প্রয়োগ হবে।
ভাষার উপাদান
ভাষাতত্ত্ববিদদের মতে, ভাষার চারটি উপাদান আছে। যথা -
(ক) ধ্বনি ( Phonology
)
(খ) বাক্যবিন্যাস ( Syntax
)
(গ) শব্দের অর্থ ( Semantics
)
(ঘ) প্রয়োগ ( Pragmatics
)
জন্মের পর থেকেই শিশুর কান্না, আশেপাশে যারা আছে তাদের দিকে তাকানো, তাদের উচ্চারণ করা শব্দের ধ্বনির অনুকরণ করা - এগুলিকেই ভাষার উৎস বলা যেতে পারে। যদিও এগুলিকে নির্দিষ্ট ভাষাগত আচরণ বলা যায় না, তবে অবশ্যই ভাষার বিকাশে এর অবদান আছে। তাই দেখা যায় শিশুটির আশেপাশের মানুষ যদি খারাপ ভাষায় কথা বলেন, ভুল উচ্চারণ করেন তখন শিশুটিও অনুকরণ করে সেইসব শেখে।
সদ্যোজাত শিশু কান্নার মধ্যে দিয়েই প্রথম সংযোগ রক্ষার কৌশল ব্যবহার করে। শিশু প্রথমে ধ্বনি উচ্চারণ করে, পরে তা অর্থযুক্ত শব্দের রূপ পায়।
ভাষার ক্ষুদ্রতম একককে 'Morphene' বলে। যেমন - আমি, তুমি, বই, খাওয়া,যাওয়া ইত্যাদি। শিশু একটু বড় হলে 'Morphene'গুলি একত্রিত করে অর্থপূর্ণ বাক্য গঠন করতে শেখে। শিশু যাতে সঠিকভাবে অর্থপূর্ণ বাক্য গঠন করতে পারে সেইজন্য শিশুকে সঠিক প্রশিক্ষণ দিতে হবে। প্রশিক্ষণ যাতে সহজসরল হয় তাও দেখতে হবে।
৬-৭ সপ্তাহের শিশুর মধ্যে কুয়িং ( Cooing
) দেখা যায়। স্বরধ্বনি ও ব্যঞ্জনধ্বনির সঙ্গে যার সাদৃশ্য আছে। ৪ মাস বয়সে শিশু আধো-আধো স্বর উচ্চারণ করে ( Babbling )। এই অবস্থা ১ বছর পর্যন্ত চলে। মনে রাখতে হবে, এই আধো-আধো স্বর ( Babbling ) বাইরের কোনো শব্দের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় না। কারণ, বধির শিশুরাও আধো-আধো স্বর উচ্চারণ করে, যদিও তারা শব্দ শুনতে পায় না। Babbling-এর কারণ সম্ভবত জৈবিক পরিনমন। আধো-আধো পর্যায়ের শেষদিকে বস্তু বা ঘটনার সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করার জন্য শিশু নির্দিষ্ট ধ্বনিবিন্যাস ( Sound
pattern ) ব্যবহার করে। এই ধ্বনিবিন্যাসকে 'Vocables'
বলে এবং মনে হয় শিশু ধ্বনির অর্থ বুঝতে সক্ষম হয়েছে। 'Vocables'
হল আধো-আধো স্বর এবং অর্থের সমন্বিত রূপ। এই অবস্থা প্রায় ১ বছর পর্যন্ত চলে যখন শিশু একক শব্দ বলতে পারে। ১ বছর বয়সের শিশু প্রকৃত অর্থে প্রথম অর্থপূর্ণ শব্দ বলতে পারে। এই শব্দ বিশ্লেষণ করা শক্ত। সাধারণত এইগুলি বিশেষ্য, বিশেষণ বা নিজের আবিষ্কার করা শব্দ হয়। একই শব্দ বলে শিশু অনেক কিছু বোঝাতে চায়।
যেমন - 'বল' বলতে শুধু 'বল' নয়, ' বলটি আমাকে দাও' বোঝাতে পারে। প্রথম বছরের শেষদিকে বা ২ বছর বয়সের প্রথমদিকে শিশুর মধ্যে নিষ্ক্রিয় ভাষা ( Passive
language ) দেখা যায়। 'নিষ্ক্রিয় ভাষা' অর্থাৎ অর্থ বোঝে কিন্তু ব্যবহার করতে পারে না।
যেমন - শিশুটি পাখি, কুকুর, স্নান করা, দুধ, বিড়াল, জল ইত্যাদির অর্থ বোঝে কিন্তু বলতে পারে না। ১৮ মাসের শিশু দ্বি-শব্দ স্তরে উপনীত হয়। এই সময় কাল ( Tense ) ও সংখ্যাকে শিশু বোঝাতে চেষ্টা করে। কিন্তু ব্যাকরণগত শুদ্ধতা বুঝে উঠতে পারেনা। অর্থপূর্ণ করে তোলার জন্য শব্দগুলি ক্রমপর্যায় শিশু বিন্যস্ত করে। ৩ শব্দ ব্যবহারের পূর্বে শিশু সুস্পষ্টভাবে কাল, বচন ইত্যাদি প্রকাশ করতে পারে না।
২ বছর বয়সে শিশুর শব্দভাণ্ডার দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। সরল বাক্য বা টেলিগ্রাফের ভাষার মতো ( দুটি, তিনটি শব্দে অনেক অর্থ বহন করা ) অসম্পূর্ণ বাক্য বলতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুর পিতা-মাতা বা যার নিকট সে বড় হয়ে ওঠে তাদের থেকে যে পরিমাণ কথা শুনে তার সঙ্গে শিশুর শব্দ ভান্ডারের নিকট সম্পর্ক বর্তমান ( Huttenlocher,
Haight, Bryk, Selter & Lyons - 1991 )।
প্রাথমিকভাবে শিশুরা ক্রিয়াবিশেষণ, অব্যয় ইত্যাদি ব্যবহার করে না, তবে প্রায়শই তাদের বাক্যের গঠন সঠিক হয়। বিমূর্ত প্রতীকের ব্যবহার ক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শিশুর শব্দভান্ডার দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। অনেকে এই কারণে এই সময়কে 'শব্দভাণ্ডার বিস্ফোরণ' বলে। বৃদ্ধির হার প্রায় আড়াই হাজার শতাংশ ( ২৫০০% ) এবং একটি ২ বছরের শিশুর শব্দ ভান্ডার প্রায় ৬০০০।
এইসময় ( ২ বছর ) গল্পের ছলে, ছড়ার মাধ্যমে শিশুর উপযোগী শব্দভান্ডার শেখালে ভবিষ্যতে শিশুটিরই লাভ। মাতৃভাষা ছাড়াও অন্য ভাষায় শব্দভান্ডার গড়ে তোলা যেতে পারে।
যেমন - মাতৃভাষা বাংলাতে 'জল' বললে ইংরেজিতে 'Water' শেখানো যেতে পারে।
শৈশব ও মধ্য বাল্যকালের ভাষার বিকাশের তালিকা :
২-৪ মাস
|
ক্রন্দন। ( Cooing )
|
৪-৬ মাস
|
আধো-আধো স্বরে কথা বলা। ( Babbling )
|
১২ মাস
|
এক শব্দের বচন।
|
১৮ মাস
|
দ্বি-শব্দের বচন।
|
২ বছর
|
অধিক শব্দের বচন।
|
২-৩ বছর
|
ছোট বাক্য বা প্রশ্ন।
|
৬ বছর
|
কয়েক হাজারের শব্দভান্ডার, জটিল বাক্য বলতে পারে। যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে ভাষা ব্যবহার করতে পারে। সামান্য পরিমাণে প্রথম ক্ষমতার অধিকারী হয়।
|
৭ বছর
|
একাধিক বাক্য পড়তে পারে,
সময় বলতে পারে,
উলটো বর্ণ লেখার অভ্যাস হ্রাস পায়। যেমন - 'b' কে 'd' লেখা বা 'd' কে 'b' লেখা।
|
৮ বছর
|
সাবলীলভাবে লিখতে ও পড়তে পারে, যে শব্দের একাধিক অর্থ আছে তা বুঝতে পারে।
|
৯ বছর
|
ঘটনা বা বস্তুকে বিশদভাবে বর্ণনা করতে পারে। ভালোভাবে লিখতে পারে। শব্দের অর্থ ব্যাখ্যা করার জন্য বাক্য লিখতে পারে।
|
১০ বছর
|
কোনো পরিস্থিতির কার্যকারণ ব্যাখ্যা করতে পারে,
নাতিদীর্ঘ রচনা লিখতে পারে। বিজ্ঞানভিত্তিক রহস্যঘন গল্প পড়তে পছন্দ করে। অভিধান দেখতে পারে। ব্যাকরণে দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
|
শিশুরা কিভাবে ভাষা আয়ত্ত করে এই ব্যপারে স্কিনার, বান্দুরা এবং ওয়ালটার্স-এর সামাজিক তত্ত্ব :
শিশুরা কীভাবে ভাষা আয়ত্ত করে এ সম্পর্কে মনোবিজ্ঞানী এবং ভাষাতত্ত্ব বিশারদদের একাধিক তত্ত্ব আছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল - স্কিনারের অনুবর্তন তত্ত্ব, বান্দুরা এবং ওয়ালটার্সের সামাজিক শিখন তত্ত্ব, নোওম চমস্কির ভাষা বিকাশের মডেল ভাইগটস্কির ইন্টার- অ্যাকশন তথ্য ইত্যাদি।
স্কিনারের ব্যাখ্যা :
- স্কিনারের মতে, শিশুরা হল 'শূণ্য পাত্র' ( Empty Vesel ) যাদের মধ্যে ভাষা ভরে দিতে হয় ( Put in to )। তিনি বলেন শিশুরা পরিবেশ থেকে ভাষা শেখে এবং তাদের প্রতিক্রিয়ার ফল তাদের
দৃষ্টিভঙ্গি হিসেবে পরিচিত হয়।
- স্কিনার বলেন শিশুদের ভাষা শেখার পেছনে ধনাত্মক শক্তিদায়ক উদ্দীপক ( Positive
Reinforce ) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- ভাষা শিখনের ক্ষেত্রে স্কিনারের প্রধান ব্যাখ্যা হল -
শিশুর শব্দ উচ্চারণকে ( যেমন - ব্যাবলিং ) পিতা-মাতারা পুরস্কারের মাধ্যমে উদ্দীপিত ( Reinforce
) করে।
- উদাহরণ : শিশুটি হয়তো নিজের মনেই কোন পরিচিত শব্দ উচ্চারণ করলো যেমন - 'বা বা বা বা'। শিশুটির পিতা মনে করলেন তার সন্তান বোধহয় 'বা-বা' বলতে চাইছে, পিতা তখন সন্তানের কাছে গিয়ে আদর করলেন, যার ফলে শিশু উদ্দীপিত ( Reinforce ) হল। এরপর শিশুটি বুঝে গেল বাবাকে কাছে পেতে হলে এই শব্দটি উচ্চারণ করতে হবে। পরবর্তীকালে সে আবারও শব্দটির উচ্চারণ করে বাবাকে কাছে পেতে চাইবে। অর্থাৎ, 'বা-বা-বা-বা' উচ্চারণ করবে। অর্থাৎ, শিশুটি ভাষা শিখল।
- অপরদিকে কোন পিতা যদি বিরক্ত হয়, শিশুটিকে উৎসাহ না দেয় তবে শিশুটি সেই শব্দটার উচ্চারণ করতে চাইনা। এরপর শিশুটি সেই শব্দটিকে সংশোধন করতে থাকে যতক্ষণ না পর্যন্ত সঠিক শব্দটি অর্থাৎ 'বাবা' সে উচ্চারণ করে।এটা ক্রমশ চলতে থাকে এবং ক্রমে ক্রমে শিশুটি জটিল শব্দ এবং বাক্য বলতে শেখে, একেই 'শেপিং' বলে।
- এছাড়াও, কোন শিশু যদি কিছু চায় তখন সে বস্তুটিকে নির্দিষ্ট করার জন্য শব্দ উচ্চারণ করে এবং পিতা-মাতা সেই বস্তুটি শিশুকে সরবরাহ করে। শিশুর কাছে ওই শব্দের সঙ্গে বস্তুটি অনুবর্তন হয়। পরবর্তীকালে যখন শিশুটির ওই বস্তুটির প্রয়োজন হয়, তখন শিশুটি সেই শব্দটি উচ্চারণ করে। অর্থাৎ শিশু একটি ভাষা শিখল।
- স্কিনারের তত্ত্বের আর-একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল শিশুটিকে যে লালন পালন করে তার উচ্চারিত শব্দ শিশুটি অনুকরণ করে। সেই অনুকরণ যদি পুরস্কৃত হয় তাহলে শিশু ওই শব্দটি পুনরায় বলবে। এইভাবে শিশু ভাষা শেখে অনুকরণের মধ্য দিয়ে।
সমালোচনা :
তবে স্কিনারের এই তত্ত্বও সমালোচিত হয়েছে বিশেষ করে চমস্কির দ্বারা। চমস্কি মনে করেন ভাষার শিক্ষা একটি জৈবিক ব্যাপার।
- অনেক সময় দেখা যায় পিতা-মাতারা কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিশুর শব্দ উচ্চারণের প্রতি বিশেষ নজর দেন না। কিন্তু তা সত্ত্বেও শিশুর ভাষার বিকাশ দেখা গেছে।
- শেপিং একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। কিন্তু দেখা গেছে শিশুর ভাষার বিকাশ বিশেষ করে ২ বছরে খুবই দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পায়।
- স্কিনারের তত্ত্ব অনুযায়ী শিশুর অনুকরণকে যদি উৎসাহিত না করা হয় তাহলে শিখন কম ঘটে, কিন্তু বান্দুরা শিখন তত্ত্বে এ কথা অস্বীকার করেছেন।
বান্দুরা ও ওয়ালটার্সের সামাজিক শিখন তত্ত্ব এবং ভাষার বিকাশ :
বান্দুরা এবং ওয়ালটার্স ( ১৯৬৩ ) প্রথমে বলেন কোনো ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিদের আচরণ পর্যবেক্ষণ করে 'মডেল' আচরণ করতে পারে। তারা ব্যক্তি শিখনের জন্য সক্রিয় পরিবর্তনের ব্যাখ্যা সমর্থন করেননি। পরে বান্দুরা এবং ওয়ালটার্স তাদের খুবই জনপ্রিয় 'মডেলিং'-এর তত্ত্ব প্রস্তাব করেন। তিনি একে 'সামাজিক শিখন তত্ত্ব' ( Social Learning Theory ) বলে নামকরণ করেন।
বান্দুরা মনে করেন শিশুরা আশেপাশের মানুষজন ( বাড়ির লোক, সহপাঠী, শিক্ষক ),
টিভির প্রিয় চরিত্র ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করে সামাজিক আচরণ করে।
'সামাজিক শিখন তত্ত্ব'-এ আচরণ এবং পরিবেশ উভয়েই পরিবর্তনশীল, কোনোটিই আচরণ পরিবর্তনের প্রাথমিক নির্ধারক নয়।
বান্দুরা মনে করেন তার উদ্ভাবিত 'সামাজিক শিখন তত্ত্ব' শিশুর ভাষা বিকাশে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি বলেন, শিশু তার অভিভাবক এবং পিতা-মাতার সাথে মিথস্ক্রিয়া এবং কথোপকথনের মধ্য দিয়ে শব্দভান্ডার ( Vocabulary
) এবং বাক্যবিন্যাস ( Syntax
) শেখে। বিভিন্ন গবেষণার ফলাফলকে পর্যালোচনা করে তিনি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন। সমীক্ষায় দেখা গেছে, যে সমস্ত শিশুদের পিতা-মাতারা শিক্ষিত এবং সংস্কৃতিমনা তাদের সন্তানদের ভাষার বিকাশ দ্রুত এবং স্পষ্ট। তারা ভাষার মাধ্যমে নিজেকে প্রকাশ করতে অন্যদের অর্থাৎ অল্প শিক্ষিত পরিবারের শিশুদের অপেক্ষা অধিক পারঙ্গম।
ভাষা শিক্ষায় শ্রবণ দক্ষতার প্রভাব :
শিশুর শোনার ক্ষমতা কম থাকলে বা কানে কিছু সমস্যা থাকলে শিশুর কথা বলার মধ্যেও সমস্যা দেখা যায়। পরবর্তীকালে ভালোভাবে ভাষা শিখতে হলে শ্রবণ দক্ষতার বিকাশ ঘটাতে হবে।
আগে শ্রবণকে বা শ্রবণবোধকে মনে করা হত মানুষের মৌখিক আলোচনায় অংশগ্রহণ, তাকে বোঝা এবং সেইসব বুঝে আলোচনাকে ভিত্তি করে যে প্রশ্ন করা হয় তার উত্তরে ক্ষমতাকে পরিমাপ করা। বর্তমানে অবশ্য সেইসব ধারণার পরিবর্তন হয়েছে। বহুক্ষেত্রে ভাষা শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য হলো শ্রবণ দক্ষতার বিকাশসাধন।
Brown ( 2001 ) -এর মতে, শ্রবণ একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা যার সাহায্যে ভাষা শিক্ষার্থীরা ভাষা সম্পর্কিত তথ্যগুলি আত্মস্থ করে যার ছাড়া ভাষা শেখা সম্ভব নয়।
এছাড়াও কথোপকথন, টার্নটেকিং,
পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে ভাষা ব্যবহার করা যায়। এর ফলে ভাষার বিকাশ হবে। গঠনমূলক কার্যাবলির সুযোগ সৃষ্টি হবে।
শারীরিক সমস্যার জন্য শিশুদের কথা বলার সমস্যা সৃষ্টি হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অবশ্যই পরামর্শ নেবেন।
কলমে - সোমা লাই
কৃতজ্ঞতা : ড. দেবাশীষ পাল
চিত্রঃ সংগৃহীত
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন