চিত্রকর সত্যজিৎ রায়ের উন্মোচন - রং তুলির সত্যজিৎ

সত্যজিৎ রায় 


আজ ২রা মে, বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ১০১ তম জন্মবার্ষিকী। এই উপলক্ষ্যে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে তাঁর শিল্পকলা নিয়ে লিখিত অসাধারণ একটি বইয়ের বিষয়ে সবাইকে জানাতে ইচ্ছা করল।

বিশ্ববরেণ্য চিত্রপরিচালক সত্যজিৎ রায়ের নামের সাথে বাঙালি মাত্রেই সব বয়সের মানুষই অল্প বিস্তর পরিচিত। কিন্তু তিনি কি শুধুই পরিচালক ছিলেন?তিনি কি শুধুই চলচ্চিত্র পরিচালনাই করেছেন? কেউ হয়ত বলবেন, না না, তিনি তো সুরকারও ছিলেন। কেউ বলবেন তিনি শুধু সুরকার নয় গানও রচনা করেছেন তাই গীতিকারও ছিলেন। আবার কেউ জানাবেন তিনি সাহিত্যিকও ছিলেন, অনেক গল্প কাহিনীও রচনা করেছেন। আর হয়ত খুব কম সংখ্যক মানুষ জানাবেন এইসমস্ত গুণের সাথে সাথেই তিনি ছিলেন একজন অসাধারণ শিল্পী, অঙ্কন শিল্পী। বাংলা তথা ভারতীয় শিল্প-সংস্কৃতির জগতে অসাধারণ ও অসংখ্য চিত্র আঁকার মাধ্যমে তাঁর অবদান রেখে গেছেন যা তাঁর অবিস্মরণীয় প্রতিভার স্বাক্ষর বহন করে চলেছে আজও।

"তিনি যে চিত্রকর তা আজও সাধারণ্যে যথেষ্ট অজ্ঞাত । অথচ চিত্রকর সত্যজিৎকে না জেনে শুধু চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎকে জানা তাঁকে সম্পূর্ণ জানা নয় ।"

 মন্তব্যটি করেছিলেন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, সাহিত্য গবেষক, চিত্রপরিচালক ও প্রচ্ছদশিল্পী পূর্ণেন্দু পত্রী সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে ১৯৬০ সালে লেখা তাঁর একটি প্রবন্ধে ।

বহুমুখী প্রতিভাধর এই শিল্পীর শিল্পচর্চার দিকটি উন্মোচন করেছেন অপর একজন স্বনামধন্য শিল্পী দেবাশীষ দেব তাঁর লিখিত "রং তুলির সত্যজিৎ" বইয়ে। "রং তুলির সত্যজিৎ" বই হিসেবে বেরোনোর বেশ কয়েক বছর আগেই এই বইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন দেবাশীষ বাবু। সত্যজিৎ রায়ের মৃত্যুর পর অনুষ্টুপ পত্রিকার পূজাবার্ষিকী সংখ্যায় 'রং তুলির সত্যজিৎ' শিরোনামে একটি দীর্ঘ প্রবন্ধ রচনা করেন তিনি।পরবর্তী কালে সেই প্রবন্ধেরই মহীরুহ রূপ এই বই এবং প্রকাশক আনন্দ পাবলিশার্সের সহযোগী প্রকাশনা সংস্থা সিগনেট প্রেস।


সত্যজির রায়ের সাথে দেবাশীষ দেব 

বইয়ের লেখক শ্রী দেবাশীষ দেবের বিখ্যাত হয়ে ওঠার পেছনেও আছেন কিংবদন্তী পরিচালক। ৮০ দশকের শেষ প্রান্তে সত্যজিৎ রায় তখন সন্দেশ পত্রিকায় যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন লীলা মজুমদার ও নলিনী দাসের সাথে। ওই বছরই সন্দেশ দপ্তরে দেবাশীষ বাবুর পাঠানো নমুনা ছবি দেখেন সত্যজিৎ রায় এবং দেবাশিষ বাবুর আঁকা নমুনা ছবি দেখে সন্দেশ পূজা সংখ্যার জন্য তিনটি ছবি আঁকার কথা বলেন। বাকিটা ইতিহাস। সত্যজিৎ রায় ও সন্দেশ পত্রিকার সৌজন্যেই দেবাশিষ বাবুর আনন্দবাজার পত্রিকা অফিসে চাকরি ১৯৭৯ সালে এবং দীর্ঘ ৩৭ বছরের আনন্দবাজারে চাকরি জীবন সফলতার সাথে শেষ করলেন শিল্পী দেবাশীষ দেব এই কয়েক বছর আগে।

বই - রং তুলির সত্যজিৎ
লেখক - দেবাশীষ দেব
প্রকাশনী - সিগনেট প্রেস
প্রকাশকাল - নভেম্বর ২০১৪
প্রচ্ছদ ও অঙ্গসজ্জা - সুনীল শীল ও প্রসূন কুমার সাহু

পৃষ্ঠা - ৩২২ 

বই বা পত্র-পত্রিকার প্রচ্ছদ থেকে শুরু করে ইলাস্ট্রেশন, ক্যালিগ্রাফি, এমনকী নিজের সিনেমার প্রয়োজনে আঁকা পোস্টার, টাইটেল কার্ড, লোগো ইত্যাদি অজস্র ডিজাইন সংক্রান্ত কাজ যে তাঁর সিনেমার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রীতিমতো আন্তর্জাতিক মানের হয়ে উঠেছিল তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তবে এইসব কাজের মূল আর্টওয়ার্ক তো দূরের কথা বহু ক্ষেত্রে ছাপা কপিও বর্তমানে দুর্লভ।

তারই মধ্যে বিভিন্ন বইপত্রে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সত্যজিতের গ্রাফিক্স শিল্পের বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য নিদর্শনকে বেছে নিয়ে এই বইয়ে সাজানো হয়েছে চারটি পর্বে। সেই সঙ্গে একের পর এক বিশ্লেষণধর্মী আলোচনার মধ্যে দিয়ে তুলে ধরার চেষ্টা হয়েছে এদের পটভূমি ও গুণগত বৈশিষ্ট্যগুলিকে। সিগনেট প্রেস থেকে প্রকাশিত বই-এর প্রচ্ছদ, সন্দেশের ইলাস্ট্রেশন, এক্ষণ-এর লেটারিং কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বী সিনেমার প্রেস অ্যাড কোন অর্থে আশ্চর্য ব্যতিক্রমী এক সৃজনশীলতার ফসল লেখক তারই আলোচনা করেছেন  এই বইয়ে। এই বইয়ের চারটি পর্ব হল - প্রচ্ছদ, অলংকরণ, অক্ষরশিল্প এবং সিনেমার নেপথ্যে।  


প্রচ্ছদ:

চিত্রকর বা ইলাস্ট্রেটর হিসাবে সত্যজিৎ রায় রঙিন করেছেন শিল্পের অন্যান্য বিভিন্ন মাধ্যমেকেও।চিত্রকর হিসাবে ছিলেন বিশেষ উঁচু দরের শিল্পী। এই ক্ষেত্রটি তাঁর অত্যন্ত আগ্রহের ও ভালোবাসার মাধ্যম ছিল। তাঁর আত্মজীবনী ' যখন ছোট ছিলাম ' বইটিতে তিনি জানিয়েছিলেন তিনি ছোটবেলা থেকে ভালো ছবি আঁকাতে পারতেন। জীবনের শেষদিনেও এঁকে গেছেন অসাধারণ চিত্র। ব্রিটিশ বিজ্ঞাপন সংস্থা D. J. Keymer (বর্তমান নাম Ogilvy & Mather)-এর কলকাতা শাখায় জুনিয়ার ভিস্যুয়ালাইজার হিসেবে মাত্র আশি টাকা বেতনে যোগদান করেন । বিজ্ঞাপন সৃষ্টির মাধ্যমেই তাঁর জীবনের পথচলা শুরু হয়। ১৯৪৩ সালে তিনি যুক্ত হন ডি কে গুপ্তর প্রকাশনা সংস্থা "সিগনেট প্রেস"-এ এবং সেখানে বিভিন্ন বইয়ের প্রচ্ছদ অঙ্কন করতে শুরু করেন।

প্রথম থেকেই কমার্শিয়াল আর্টের প্রতি আগ্রহী সত্যজিৎ কতকটা মায়ের ইচ্ছায় শান্তিনিকেতনের কলাভবনে ভর্তি হয়েছিলেন, যদিও সেখানে শেখানো হতো ফাইন আর্ট । তবে সত্যজিৎ মনে-মনে ভেবে রেখেছিলেন যে কলাভবনে ভারতবর্ষের শিল্পকলা সম্বন্ধে জ্ঞানলাভ করে সেটাই তাঁর কাজে লাগাবেন । এবং সেই ভাবনা অনুসারেই চার বছরের কোর্স শেষ না করে মাত্র আড়াই বছরের মাথায় সত্যজিৎ ড্রপ-আউট করে ফিরে আসেন বাড়িতে কারণ তাঁর মনে হয়েছিল প্রয়োজনীয় যা কিছু শেখার তিনি শিখে ফেলেছেন ইতিমধ্যেই । এবং সেই শিক্ষাকে কাজে লাগানোর প্রথম সুযোগ আসে সিগনেট প্রেস থেকে প্রকাশিত বইয়ের প্রচ্ছদ এবং ইলাস্ট্রেশন করতে গিয়ে ।

 সত্যজিৎ রায়ের জীবনের প্রথম প্রকাশিত ডিজাইন করা প্রচ্ছদ ছিল তার বাবা সুকুমার রায়ের লেখা "পাগলা দাশু" বইয়ের প্রচ্ছদ।সত্যজিৎ রায় পরবর্তী পর্যায়ে এঁকেছেন অসংখ্য প্রচ্ছদ। সেই সমস্ত প্রচ্ছদ সৃষ্টির নেপথ্যের চিন্তা ভাবনা কি ছিল বা তিনি কোন বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিয়ে প্রচ্ছদগুলি আঁকতেন সেইসমস্ত বিষয়ের খুঁটিনাটি বইয়ের এই পর্বে বর্ণনা করা আছে।



যেমন উদাহরণ স্বরূপ একটা বইয়ের কথা বলি। তাঁর একটি উৎকৃষ্ট প্রচ্ছদের নিদর্শন ১৯৫৩ সালে প্রকাশিত বিখ্যাত শিকারি জিম করবেটের ‘ কুমায়ুনের মানুষ খেকো বাঘ ‘ বইটির পিঠোপিঠি আঁকা প্রচ্ছদে , করবেটের বাঘ শিকার ,জঙ্গল ইত্যাদি বিষয় নিয়ে লেখা বইতে রোমাঞ্চকর ছবির সমাহারে প্রচ্ছদ আঁকার বদলে তিনি আঁকলেন সামনে আর পিছনে দু’দিক মিলিয়ে দেখলেন বাঘের গায়ে গুলি লাগার দাগ। দু’পিঠেই হলুদের ওপর কালো ডোরা ডোরা আঁকা।এখানেই সত্যজিৎ নজর রেখেছিলেন খুব জরুরি একটি ডিটেলস এর দিকে। যেহেতু গুলি বেরবার গর্তটা তুলনায় একটু বড় হয়, সেই হিসেবে পিছনের গুলি লাগার অংশটিও বড় করে দেখান। ছিদ্রপথে বইয়ের নাম ও লেখকের নাম লিখে দেন।


এইরকমই প্রতিটি প্রচ্ছদের ব্যাখ্যা সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করা আছে এই বইতে।যেমন সন্দেশ, এক্ষণ, পাগলা দাশু, ক্ষীরের পুতুল প্রভৃতি।

অলংকরণঃ

নিজের বিভিন্ন বইয়ের অলংকরণও তিনি নিজেই আঁকতেন। এই পর্বে সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা, প্রফেসর শঙ্কু থেকে শুরু করে অন্যান্য গল্পের অসংখ্য চরিত্র ও ঘটনাবলীর অলংকরণ সম্পর্কে আলোচনা করা আছে। এমনকি কোন চরিত্রের কখন কি ধরণের পরিবর্তন তিনি করেছিলেন, কেন করেছিলেন তাও আমরা এই পর্ব থেকে বিস্তারিত ভাবে জানতে পারব।


নিজের গল্প, উপন্যাসের জন্য ছবি আঁকার ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে সত্যজিৎ কাহিনীর প্রেক্ষাপটের উপর ভীষণ জোর দিয়েছেন । যেমন সোনার কেল্লা র পটভূমিকা যেহেতু রাজস্থান সেহেতু ইলাস্ট্রেশনে গুরুত্ব পেয়েছে মরুভূমির কড়া রোদ আর ছায়া ।





যত কান্ড কাঠমান্ডুতে র ক্ষেত্রে পটভূমিতে এঁকেছেন কালভৈরবীর মূর্তিকে ।

একটা ব্যাপার উল্লেখযোগ্য, ফেলুদার সবগুলো গল্পের ক্ষেত্রেই ইলাস্ট্রেশনগুলি কিন্তু সত্যজিৎ করেছেন সাদা-কালোয় । সন্দেশ এর জন্যও তিনি বেশিরভাগ সময়ই ছবি আঁকতেন সাদা-কালোয় । 

কর্ভাস গল্পে জাদুকর আর্গাসের কোটের রঙ ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফিকে সবুজ রং ব্যবহার করে অন্ধকার ঘরে নিয়নের আলোর সাইকেডেলিক এফেক্টকে বুঝিয়েছেন সত্যজিৎ ।রঙিন ইলাস্ট্রেশনের প্রথম সুযোগ তিনি পেয়েছিলেন আনন্দমেলা পত্রিকাতে এবং যেহেতু এতে প্রফেসর শঙ্কুর গল্প ছাপা হতো, তাই শঙ্কুর অনেক গল্পের ইলাস্ট্রেশনে রঙের ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে সত্যজিৎকে ।


অক্ষরশিল্পঃ
তিনি কতগুলো বাংলা ও ইংরেজি ফন্ট ও তৈরি করেন যেগুলো এখনো বিভিন্ন সময় ব্যবহার করা হয়।তিনি আমাদের নতুন ধরনের বাংলা ক্যালিগ্রাফির সাথে পরিচয় ঘটান। তিনি চারটি ইংরেজি ফন্ট তৈরি করেন -Ray Roman, Ray Bizarre, Daphnis আর Holiday Script এর মধ্যে " Ray Roman আর Ray Bizarre ১৯৭১ সালে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় পুরস্কারও পায়।এই বিষয়েও বিস্তারিত বর্ণনা এই বইতে আছে।



ছবি আঁকা ছাড়াও সত্যজিৎ নিজের সই নিয়েও অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন । বাবা সুকুমার রায় যেখানে তাঁর নিজের সমস্ত ছবিতেই ইংরেজিতেই সই করেছেন, সত্যজিৎ সেই তুলনায় অনেক বেশি সৃজনশীলতা দেখিয়েছেন নিজের সইয়ের ব্যাপারে ।কয়েকটি নমুনা দেওয়া হলো ।

সিনেমার নেপথ্যেঃ

সত্যজিৎ রায় তাঁর সমস্ত আঁকা ও লেখা একটি খাতায় লিখে রাখতেন। নাম দিয়েছিলেন "খেরোর খাতা"। তাঁর চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত পোশাক, চরিত্রদের বহু বর্ণনা সম্বলিত ছবি আমরা সেখান থেকে পাই। যার উল্লেখ লেখক এই বইয়ে করেছেন। 



চিড়িয়াখানা সিনেমার পোস্টার। 


গুপী গায়েন বাঘা বায়েন সিনেমার আঁকা। 



পথের পাঁচালী সিনেমার বিজ্ঞাপন তথা পোস্টার
প্রতিটি চলচ্চিত্র তৈরি হয় অসীম পরিশ্রমের মাধ্যমে। এই পর্বে লেখক পথের পাঁচালী থেকে শুরু করে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত প্রতিটি চলচ্চিত্রের নেপথ্যের বহু ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন। যা পড়তে পড়তে আমরা হারিয়ে যাই অন্য এ জগতে।পাঠক সেইসব কাহিনী জানার সাথে সাথে জানতে পারবেন সত্যজিৎ রায় কিভাবে প্রতিটি চরিত্রকে, প্রতিটি সেটকে, প্রতিটি ফ্রেমকে আঁকতেন। তারপর তা সিনেমায় রূপায়িত হত। সেই সমস্ত বিরল ও দুষ্প্রাপ্য আঁকার সন্ধানও এই বইয়ে আছে।

বইটির অমুল্য সম্পদ বইয়ের মধ্যে দেওয়া ছবিসমূহ।পাঠক সন্ধান পাবেন সত্যজিৎ রায়ের এক ভিন্নরূপের। যে সময় ডিজিটাল যুগের সুচনাই হয়নি, ছিল না ফটোশপ, ইলাস্ট্রেটরের মত মাধ্যমের সেই যুগে একজন শিল্পী শুধুমাত্র তুলি, কালি, ব্রাশ ও বিভিন্ন অন্যান্য সামগ্রীর সাহায্যে এঁকেছেন অসাধারণ সব চিত্র। লেখক অসীম ধৈর্যে ও অশেষ পরিশ্রমের মাধ্যমে সেই সমস্ত চিত্রকলার বিশ্লেষণ করে পাঠককে অবগত করেছেন এই বইটি রচনার মধ্য দিয়ে।অসাধারন এই বইটি আজীবন সংগ্রহ করে রাখার মত একটি বই।



কলমে - পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন