"মা, আবারও গাল কেটে
গেছে!" ছেলে
চিৎকার করে বলল।
বিষয়টি
নিয়ে মিসেস চৌধুরী খুবই উদ্বিগ্ন, ইদানিং প্রায়ই সেভ করতে গিয়ে ছেলের
গাল কেটে যায়। গভীর চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন তিনি। ছেলেকে দ্রুত সিঙ্গাপুর নেওয়া
উচিত, মোটেও দেরী করা যায় না।
……..
"হ্যালো, বুয়া তুমি আর কতকাল বাড়িতে থাকবা?
প্রায় দুই সপ্তাহ হল ছুটি নিয়েছো। আমাকে সিঙ্গাপুর যেতে হবে।
তুমি দ্রুত চলে আসো।" মিসেস
চৌধুরী ফোনে বলেই চলছেন।
"ছাওয়ালের শরীর ভেঙে লিকলিকে হয়া গ্যাছে, কিছুই
খাইতে পারে না, বমি করে। কবিরাজের কাছে লেওয়া লাগবে। আমি এহন আইতে পারব না।" বুয়া রহিমা
উত্তর দেয়।
মিসেস চৌধুরী
রাগে গজগজ করতে থাকে। তার হাতে প্রচুর কাজ। ভিসা, টিকিট কনফার্ম করা, হোটেল বুকিং, হাসপাতাল বুকিং আরো কত কি।
স্টুপিড বুয়ার বিবেক নাই!
……
রহিমা তার
ছেলেকে নিয়ে কবিরাজের বাড়িতে এসেছে। তার ছেলের চোখদু'টো গর্তের
মধ্যে গিয়ে, নিচে কালি পড়েছে। এক বোতল পানি ও তেলপড়া নিয়ে আসার পথে হেডমাস্টারের
সাথে দেখা। হেডমাস্টার ধমক দিয়ে বলল, "দেখতে পাচ্ছি
ক্যান্সারের লক্ষণ, আর তুই কিনা কবিরাজের কাছে
নিয়েছিস!"
"১০ টাকার জন্য ভ্যানে উঠতে পারি না, আটআনা পয়সা দিয়ে সাহায্য করেন না, আবার
উপদেশ দেন!" হেডমাস্টারের মুখের উপর রহিমা বলে দিল।
"আস্ত একটা বেয়াদব" হেডমাস্টার মনে মনে ভাবে।
……
বেশ কয়েকমাস
চলে গেছে! সবকিছু স্বাভাবিক! মিসেস চৌধুরীর ছেলের আর গাল কাটে না। সমস্যা
ছিল সেভিং রেজারের ব্লেডে!
বারান্দার এক
কোণে বসে রহিমা মাঝে মাঝে করুন সুরে কাঁদে! সেই কান্না শুনে মিসেস চৌধুরী তাকে সান্ত্বনা
দেয়, আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছে, কেঁদে আর কি
হবে!
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন