অফিসে ঢুকে মিতা পাশের ফাঁকা চেয়ারটার
দিকে একনজর দেখে নিলো। সমীরদা এখনও আসেনি। আর দু'দিন পর চেয়ারটায় হয়তো অন্য কেউ
বসবে , ভাবতেই মিতার মনটা হাহাকার করে উঠলো। আজ ত্রিশ বছর পাশাপাশি কাজ করছে ওরা।
যখন মিতা এই নামী কলেজের অফিস স্টাফ হিসেবে ঢুকলো তখন বিবাহিত সমীরদার তিনবছর
চাকরি করা হয়ে গেছে। শান্ত গোছের কথা কম বলা সমীরদাকে ওর বেশ ভালো লাগতো। এরপর
মিতারও বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তূ বিয়ের পরই মিতা বুঝতে পারে ভুল জীবনসঙ্গীকে বেছে
নিয়েছিল ও। সেইসব দিনে মিতা মনের কথাগুলো বলতো সমীরদাকেই। কথাকথিত প্রেম যাকে বলে
তা হয়তো নয়, তবে এক অদ্ভুত নির্ভরতা ছিলো দু'জনের। সমীরদাও হয়তো অসুখী জীবন
কাটাতো। কিন্তু দুই এক দিন ছাড়া সেই কথা মুখ ফুটে বলতো না কখনো । মিতার মনে পড়ে,
সে অফিসে একদিন অজ্ঞান হয়ে পড়ে গিয়েছিল। সেইদিন সমীরদা নাকি ওকে একমুহূর্ত কাছছাড়া করেনি। অবসরে সমীরদার কাছে বসে কতো কথায় তো
কেটে গেছে কত দিন, মাস, বছর।
অবশেষে সম্পূর্ণ হলো কলেজের
ক্লার্ক সমীরের অবসরকালীন অনুষ্ঠান। মিতার আরো চার বছর কাটাতে হবে সমীরকে ছাড়া।
অবসরের পরের দিন মিতা কলেজে এসে ফাঁকা চেয়ারটার দিকে তাকিয়ে ফোনের হোয়াটসঅ্যাপ
খুলে ফেললো। দরকারী কথা ছাড়া কিছুই কখনো লেখা হয়নি সমীরদাকে, কারণ রোজ দেখা হতো।
আজ প্রথমবার মিতার দ্বিধাগ্রস্ত হাত সমীরকে ইনবক্সে লিখলো -- "Miss you" ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন