অসময়ের সাথি বৃদ্ধাশ্রমের সামনে বাঁধানো বটগাছের তলে বিকালে সবাই হাসি ঠাট্টায় মশগুল,একপাশে চুপচাপ নিষ্প্রাণ হয়ে বসে আছে কমোলিনী।
তখন আর আমার বয়স কত হবে, কুড়ি বা একুশ। তন্ময় আমার
গর্ভে, তার বাবা আমায় জলে ফেলে চলে গেল,কোনো কুল কিনারাই নেই অথৈ জল হাবুডুবু খাচ্ছি।আমার আত্মীয়
পরিজনেরা বলল ডি সি করিয়ে নে।তোর সামনে বাকি বয়স পড়ে আছে,ভুল করিস না।আমি কারো কথায় কান দিই নি।
তন্ময়ের বাবাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম, তাই বাপের বাড়ির দরজা আমার জন্য
চিরতরে বন্ধ, চোখ মুছে মনকে শক্ত করলাম,মনে মনে স্থির করলাম আমার ভালোবাসার প্রতীককে নষ্ট
হতে দেব না,তাতে আমার যা হবার হোক।যথা
সময়ে তন্ময় পৃথিবীতে এল, আমার নাড়ী কাটা ধন, দুঃখের চিরাগ।দু’চোখ আনন্দাশ্রুতে ভরে গেল।যথা সম্ভব ঝাঁপিয়ে পড়লাম ছেলেকে মানুষ করতে।
ছেলে আমার মানুষ হল,চাকরিও পেল ঘরে এল ফুটফুটে
সুন্দর বৌমা।আমার আনন্দের সীমা নাই কিন্তু সুখ কপালে থাকা চাই।অভাগা
যে দিকে চায় সাগরও শুকিয়ে যায়।তাই হল আমার দশা।ধীরে ধীরে ছেলে বৌমার কাছে আমি বোঝা হয়ে দাঁড়ালাম।
আজ এখানে তোমাদের সামনে বৃদ্ধাশ্রমের বটের ছায়ায় বুকে জ্বলন্ত আগুন নিয়ে বসে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন