বই
– পাঁচ মহানায়কের গোপন জীবন
লেখক
– রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রকাশন
– দীপ প্রকাশনী
প্রকাশকাল - ১লা বৈশাখ, ১৪২৫
পৃষ্ঠা
– ২৭৯
আমি
তখন স্নাতকস্তরে পড়ি। আনন্দবাজার পত্রিকার ক্রোড়পত্রে একটি কলাম বের হত।কলকাতার বিভিন্ন
পাঁচতারা হোটেল থেকে শুরু করে একতারা বা তারাহীন রেস্তোরাঁ, বার, ডিস্কোথেক প্রভৃতি’অতিপ্রয়োজনীয়’বিলাসিতার
স্থানের বিস্তারিত বিবরণ সহ। না না, তাদের ঐতিহাসিক বিবরণ নয়। এই সব স্থানে মনোরঞ্জনের
সাধন হিসাবে কি ধরণের ব্যাবস্থাদি ও গ্রাহক পরিষেবা দেওয়া হয়, সেই বিষয়ে বিস্তারিত
বিবরণ। প্রায় প্রতিদিনের এই কলামে যে’অতি গুরুত্বপূর্ণ’বিষয়টি অবশ্যম্ভাবীরূপে যোগ
করা থাকত, তা হল একজন উঠতি মডেল বা সদ্য আগত অভিনেত্রীর লাস্যময়ীরূপের ছবি ও তৎসহ তিনি
কখন ওই বিশেষ রেস্তোরাঁ বা পাবে উপস্থিত থাকবেন তার সময়ও জানানো হত। এবং কলামের একেবারে
শেষে অতি ক্ষুদ্রাকারে তাঁর ফোন নম্বর দেওয়া হত, যোগাযোগের জন্য। বুদ্ধিমান পাঠক ইঙ্গিতবাহী
এই সমস্ত তথ্য থেকে না-লেখা বাকী তথ্যাবলী বুঝে যেতেন এবং আগ্রহীরা বাকি তথ্য যোগাড়
করে ফেলতেন। সম্ভবত সেইসময় থেকেই আনন্দবাজার পত্রিকার অধঃপতনের সূত্রপাত হয়।বেশ কয়েকমাস
এই ঘটনা চলার পর আনন্দবাজারের সুরুচিসম্পন্ন পাঠককূল এই কলামের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন
তুলে এবং এইভাবে পত্রিকার বাজার গরম করে বিক্রি করার উদ্দেশ্য নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ
জানিয়ে পত্রিকার দপ্তরে চিঠি পাঠাতে শুরু করেন।কলাম লেখক যদিও নিজের আত্মপক্ষ সমর্থনে
এই সব প্রতিবাদ পত্রের জবাব দিতে থাকেন কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হয়না। প্রতিবাদ বাড়তে
থাকায় পত্রিকার কর্তৃপক্ষ প্রথমে ফোন নম্বর দেওয়া বন্ধ করেন এবং পরবর্তীকালে ধীরে ধীরে
সেই কলামটিও প্রকাশ করা বন্ধ করে দেন। এই তথাকথিত’অতিপ্রয়োজনীয়’কলামটির লেখক ছিলেন
মহামান্য রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়। যদি খুব ভুল না করি সেই সময়েই ওনার লেখকরূপে
আত্মপ্রকাশ। এবং শুরু থেকেই সস্তা জনপ্রিয়তার লোভেই হোক বা ওনার প্রিয় বিষয়ই হোক উনি
বাংলা সাহিত্যে চটুল লেখাকেই বেছে নিয়েছিলেন। যদিও বিশেষ লাভবান হন নি। সাহিত্যপ্রেমীরা
ওনাকে সুনজরে বিশেষ দেখেন নি।
তারপর
বহু বছর পর হঠাৎ উনি আবার চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়ান ওনার লেখা’কাদম্বরী দেবীর সুইসাইড
নোট’বইটির জন্য। এটি এমন একটা বিষয় যা নিয়ে বঙ্গজীবনে সব সময়ই কৌতূহল অপরিসীম। প্রচুর
চর্চা, প্রচুর প্রচারের কারণে আমিও একটি বই কিনে পড়তে শুরু করলাম, কারণ এই বিষয়ে সেইবধি
আমার কিছুই প্রায় জানা ছিল না।সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় রচিত’প্রথম আলো’থেকে প্রথম এই বিষয়ে
খুব সামান্য জানতে পেরেছিলাম। তাতেই কৌতূহল তীব্র ছিল। কিন্তু রঞ্জন বাবুর লেখা বইটি
পড়ে হতবাক হয়ে গেলাম। আগে যদি জানতাম এটি কাল্পনিক কাহিনী সত্যি বলতে কি ছুঁয়েও দেখতাম
না। সেই শেষ ওনার লেখা পড়া।
আর
কোনও দিনও ওনার বইয়ের বিষয়ে পড়ার বা জানার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা জাগেনি।
আজ
প্রায় কুড়ি বছর পর আমার এক অনুজের জোরাজুরিতে বাধ্য হলাম রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা
“পাঁচ মহানায়কের গোপন জীবন”পড়তে। পড়ার আগেই বইয়ের নাম শূনেই বুঝেছিলাম বইয়ের বিষয়বস্তু
সম্বন্ধে। বাংলা সাহিত্য তথা বঙ্গীয় সমাজ জীবনের স্বনামধন্য সাহিত্যিক, পথপ্রদর্শকদের
মধ্যে অগ্রগণ্য জ্ঞানী, প্রাজ্ঞ ও বিদগ্ধ পাঁচ মহান সমাজসংস্কারককে হাতিয়ার বানিয়ে
এই বই লেখা হয়েছে।আজবধি যে সমস্ত নমস্য ব্যক্তিত্বকে স্মরণ করে বঙ্গ সমাজ নিজেদের দিন
শুরু করেন, তাঁদের সম্পর্কে গোপন খবর লেখক পরিবেশ করেছেন। এই সমস্ত গোপন জীবনের গোপনতর
ঘটনা সমূহের বিবরণ তিনি কোথা থেকে সংগ্রহ করেছেন তা অবশ্য বইয়ের শেষ পৃষ্ঠা অবধি পড়েও
জানতে পারলাম না। তাই ধরে নিতে বাধ্য হলাম লেখক সম্ভবত স্বয়ং গুণীজনদের সাথে বাক্যালাপ
করেছিলেন কিংবা এমন কোনও গোপন লিপিবদ্ধ তথ্য হাতে পেয়েছিলেন যার বিষয় এর পূর্বে অজ্ঞাত
ছিল।আমরা এই বই পড়ে কোন’গোপন জীবন’জানতে পারি এবং সেইসব গোপন তথ্য জানার পর কি কি জ্ঞান
লাভ করি সেই বিষয়ে একটু আলোকপাত করা যাক।
ভুমিকা
দিয়েই ভুমিকা রচনা করি। বড় মধুরভাবে লেখক লিখেছেন –
"সেইসব পাঠক—পাঠিকার হাতে যাঁরা আমার সঙ্গে আছেন এতদিন।যাঁরা
ভালোবেসে পড়েন আমার লেখা। যাঁদের সমালোচনাতেও মিশে থাকে বৈদগ্ধ্য, শীলন,
সহিষ্ণুতা,
সংবেদ। আর যারা আমারই মত আগ্রহী চাঁদের উল্টো পিঠের প্রতি।"
বলাই বাহুল্য লেখক ভুমিকাতেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন এই লেখা নির্দিষ্ট
কিছু পাঠক – পাঠিকাকূলের জন্যই লেখা যারা তথাকথিত চাঁদের জ্যোৎস্নার তুলনায় চাঁদের
উল্টো পিঠের অন্ধকার নিয়েই চর্চা করতে বেশি পছন্দ করেন।লেখক সমালোচনাকে স্বাগত জানিয়েছেন
বলেই আজ চাঁদের জ্যোৎস্না পছন্দ করা উল্টো পিঠ অপছন্দ করা একজন অত্যন্ত সাধারন পাঠক
হিসাবে কিছু কথা বলার সাহস পেলাম। কারণ লেখকের পছন্দের বা লেখকের লেখা ভালবেসে পড়া
বৈদগ্ধ্য পাঠককূলের দ্বারা লিখিত কোনও আলোচনা বা সমালোচনা কিছুই আমি অনেক খুঁজেও পেলাম
না। এমন কি এই বইয়ের কোনও প্রচারও আমি কোথাও পেলাম না।তাঁর ভালোবাসার যে সমস্ত পাঠক-পাঠিকারা
বইটি পড়েছেন, তারা কি তা স্বীকার করতে লজ্জা পেয়ে গেছেন? জানার ইচ্ছা রইল।
বইয়ের
শুরুতেই এসেছেন রাজা রামমোহন রায়। বাংলার নবজাগরণের আদি পুরুষ, প্রথম ভারতীয় যিনি ধর্মীয়-সামাজিক পুনর্গঠন আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন, ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন, মহান দার্শনিক এবং যাঁর অশেষ করুণা,দয়া ও একাকী সাহসী
সংগ্রামের জন্যই আজ সমগ্র বিশ্বের হিন্দু নারী “সতীদাহ”নামক বীভৎস ও স্বার্থপর প্রথার
হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন। কিন্তু রঞ্জনবাবু আমাদের চাঁদের উল্টো পিঠ দেখালেন। রামমোহন
রায় একজন জেদী, একগুঁয়ে, অবাধ্য, স্বেচ্ছাচারী হওয়ার সাথে সাথে রিপুতাড়িতও ছিলেন। আমরা
যারা এতদিন জানতাম যে রাজা রামমোহন রায় নিজের মাতৃসমা বৌদিকে সতীদাহ প্রথার বলি হওয়া
থেকে আটকাতে পারেননি বলে প্রতিজ্ঞা নিয়েছিলেন এই প্রথা বিলুপ্ত করার, তারা সজোরে একটি
চড় খেলাম। কারণ আজন্ম লালিত এই সত্যিটাই আমরা জানতাম না যে, যে বৌদিকে আমরা মাতৃসমা
জানতাম তিনি আসলে রামমোহনের সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত ছিলেন। এবং তার সাথে তাঁদের গোপন মুহূর্তের
বর্ণনাও জানতে পেরে যার পরনাই উল্লসিত হলাম। কিন্তু এই বর্ণনা কোথা থেকে লেখক পেলেন
বা প্রায় ২০০ বছর আগে কোন গাছের আড়াল থেকে উঁকি মেরে তিনি বাগানের অন্ধকারে দুই নারী
পুরুষের কথোপকথন শুনেছিলেন সেই রহস্য কিন্তু আমরা জানতে পারলাম না।শুধু জানলাম দেবর
– বৌদি অনৈতিক সম্পর্কে ( ঘনিষ্ঠ শারীরিক) লিপ্ত ছিলেন।
এরপর এলেন ঈশ্বরচন্দ্র
বিদ্যাসাগর। বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক,গদ্যকার, সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য যিনি’বিদ্যাসাগর’উপাধি লাভ করেন। সংস্কৃত ছাড়াও বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বিশেষ ব্যুৎপত্তির জন্য ইংরেজ মহলেও সমাদৃত হতেন। তিনিই প্রথম বাংলা
লিপি সংস্কার করে তাকে যুক্তিবহ ও সহজপাঠ্য করে
তোলেন।বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার তিনিই। স্বয়ং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুর তাঁকে “বাংলা গদ্যের প্রথম
শিল্পী”বলে অভিহিত করেছেন।বাংলা নবজাগরণের পুরোধা ব্যক্তিত্ব
যিনি নারী শিক্ষা ও বিধবা বিবাহের মত বৈপ্লবিক সংস্কার করেছিলেন, আপামর জনসাধারণ যাকে’দয়ার
সাগর’বলে অভিহিত করে থাকে – রঞ্জনবাবু জানালেন আসলে তিনি ছিলেন স্বার্থান্বেষী,দাম্ভিক,
আত্মশ্লাঘায় ভোগা, অহংকারী, বন্ধুকে বিপদ্গ্রস্ত করে নিজের স্বার্থ সম্পন্নকারী এবং
শেষমেশ বন্ধুপত্নীর সাথে সম্পর্কে লিপ্তকারী।অর্থাৎ সেই দেবর – বৌদির অসামাজিক সম্পর্ক।
এই ক্ষেত্রে যদিও একইভাবে কোনও বিশ্বাসযোগ্য তথ্য প্রমাণ দাখিল হয়নি,তবে লেখককে সমর্থন
করে একই ভাবে কুযুক্তি ও কটূক্তির মাধ্যমে বিদ্যাসাগরের মহিমাকে কালিমালিপ্ত করতে এগিয়ে
এসেছেন অন্য একজন এমন ব্যক্তি যিনি দেশবিরোধী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার কারণে বহুবছর
আগে ভারত সরকার দ্বারা নির্বাসিত হয়ে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব নিতে বাধ্য হয়েছেন, সারাজীবন
ব্রিটিশদের তোষামোদ করে এবং স্বজাতি ও স্বদেশকে গালি বর্ষণ করেছেন এবং ভারত বা বাংলা
সাহিত্য বা সামাজিক জীবনে বিন্দুমাত্র অবদান রাখতে অপারগ হয়েছেন। শ্রীযুক্ত শ্রীল নীরোদ
সি চৌধুরী মহাশয়। অনেকগুলো উপযুক্ত প্রবাদ মনে আসছে কিন্তু নাহ! থাক! কবি সত্যেন্দ্রনাথ
দত্ত তো কবেই বলেছেন – “…….কামড় দিয়েছে পায়, তা বলে
কুকুরে কামড়ানো কিরে, মানুষের শোভা পায়?”
বিদ্যাসাগরের
প্রতি লেখকের ঘৃণা এত তীব্র যে বইয়ের তৃতীয় ব্যক্তিত্ব মদনমোহন তর্কালঙ্কারের
গোপন জীবন উত্থাপনের স্থানে তিনি সেই বিদ্যাসাগরকেই টেনে এনেছেন এবং যথেচ্ছরূপে
হেয় করেছেন। প্রমাণাদি দাখিল করার প্রয়োজন বোধ করেন নি।
পর্যায়ক্রমে
এসেছেন, হুতুমপেঁচা কালীপ্রসন্ন সিংহ, সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র। লেখক চাঁদের
উল্টো পীঠের খোঁজ করতে গিয়ে যাঁদের “দুষ্টুলোক কালীপ্রসন্ন”এবং “কামুক
বঙ্কিমচন্দ্র”বলে অভিহিত করেছেন। কালীপ্রসন্নের মদ্যপ আচরণ ও বাবুয়ানি কিয়দংশ
সত্যি হলেও, বিস্মিত ও হতবাক হতে হল যখন জানলাম বঙ্কিমচন্দ্র শিশুলোভী কামুক
ছিলেন। এই বিষয়ে বিস্তারিত লিখে নিজের বিবেক পঙ্কিল করার ইচ্ছা আর নেই। এমনিতেও
বইটির শেষের অংশ পড়ার ধৈর্য আর ছিল না। তীব্র বিবমিষার উদ্রেক হচ্ছিল। ভাবছিলাম
একজন বাঙালি হয়ে কি করে একজন এমন বঙ্গ ব্যক্তিত্বকে এত ছোট করার দুঃসাহস পেতে
পারেন, যার নাম উচ্চারণ দিয়ে বাংলা সাহিত্যের সূচনা হয়।কোথায় পেয়েছেন এত নোংরা
বিবরণ, ঘটনাবলী? এই বই পড়লে দেবর – বৌদির সম্পর্কের প্রতি ঘৃণার উদ্রেক হওয়া
অবশ্যম্ভাবী। জানতে ইচ্ছা করে লেখকের কাছে এই সম্পর্কের অর্থই পরকীয়ায় লিপ্ত অবৈধ
সম্পর্ক কেন?কেনই বা তাঁর এই সম্পর্ককে নিয়ে এই অদ্ভুত বদ্ধসংস্কার? কোথা থেকে তৈরি
হয়েছে এই অসুস্থ ভাবনা?
আমি
যৌনতা বিরোধী নই। সাহিত্যে যৌনতার ব্যবহার নিয়ে কোনও মধ্যবিত্ত বাঙালি মানসিকতার ছুৎমার্গও
নেই।যৌনতাকে অত্যন্ত স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক
শারীরবৃত্তীয় প্রয়োজনরূপেই দেখি। রঞ্জনবাবুর লেখনী মন্দ নয়। পাঠককে বইয়ে ডুবিয়ে
রাখার মত ভাষার ব্যবহারও জানেন। কিন্তু সস্তায় বাজার গরম করে সহজে জনপ্রিয় হবার
রাস্তা যিনি বেছে নিয়েছেন তাঁকে কোনও মতেই বোঝানো যাবে না যে যৌনতাকে সাহিত্যে
কিভাবে ব্যবহার করতে হয় বা এর জন্য বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের নাম ব্যবহার করে তাঁদের
কালিমালিপ্ত করার কোনও দরকারই নেই।বাংলা সাহিত্যে যৌনতা
সমৃদ্ধ’বিবর’,’প্রজাপতি’থেকে শুরু করে হাল আমলের’শঙ্খিনী’ও আছে।কাল্পনিক কাহিনী যত
ইচ্ছা লিখুন, যত খুশি আদিরসে ভরিয়ে দিন।পাঠক সানন্দে গ্রহন করবে।কিন্তু যে
মানুষগুলোর জন্য কোটি কোটি বাঙালি মাথা উঁচু করে বিশ্বের দরবারে দাঁড়াতে পারছেন,
সেই মানুষগুলোর সম্পর্কে একগুচ্ছ মিথ্যা অপবাদ দিয়ে হেয় করার মত বিকৃত মন তাঁর হল
কি করে?নাকি ভারতীয় মনিষী ও তৎসহ বিকৃত যৌনাচার সম্বলিত লেখা লিখলেই এক শ্রেনীর
মানুষ উল্লসিত হবেন, ফলে বইয়ের বিক্রি হু হু করে বৃদ্ধি পাবে। নাহলে এই বইয়ের
দ্বিতীয় সংস্করণ বের হয় কি করে?
রঞ্জনবাবুর মত কিছু
নিম্নরুচি সম্পন্ন লেখকের এই সমস্ত অভিসন্ধিমূলক রচনার কারনেই আজ সামাজিক মাধ্যমের
বিভিন্ন বিভাগে আমাদের দেশীয় মনিষীদের হেয় করার, কদর্য কথা বলার সাহস অন্য দেশ,
অন্য জাতির মানুষরা করছেন।যে নিরোদ চৌধুরীর কথাকে উনি বেদবাক্য বলে প্রমাণস্বরূপ
দাখিল করেছেন,সারা জীবন দেশ – জাতিকে অন্যের চোখে ছোট প্রমাণ করার পর শেষ জীবনে
তাঁর কি পরিণতি হয়েছিল তা বোধহয় রঞ্জনবাবু ভুলে গেছেন? জানি আমার এই লেখা
রঞ্জনবাবু অবধি পৌঁছাবে না। প্রকাশকরাও সম্ভবত জানবেন না।তাই পাঠকদের কাছেই অনুরোধ
করব এই ধরণের লেখকদের তীব্র ভাষায় প্রতিবাদ জানান। প্রকাশকদের কাছেও অনুরোধ করব
যাঁদের দৌলতে বাংলা সাহিত্য, জগতসভা আলোকিত করছে তাঁদের সম্মান রক্ষার্থে এগিয়ে
এসে এই ধরণের নিম্নমানের লেখা প্রকাশ করা থেকে বিরত হন। বাংলা সাহিত্যকে রক্ষা
করার কিছু দায়িত্ব - কর্তব্য আপনাদেরও আছে, আগামী প্রজন্মের কাছে আপনারাও সমানভাবে
জবাবদিহি করতে বাধ্য।
কলমে - পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন