তারপর বেশ কিছুদিন আমি সেই
বট গাছের কাছে যাইনি। অনেকদিন সেই পাখিগুলোকে দেখাও হয়নি। তাই
আমি একদিন বিকেলবেলায় আবার সেই গাছের কাছে গিয়ে দেখি যে, সেই ডিম
দুটো ফেটে সুন্দর দুটো পাখির বাচ্চা বেরিয়ে কিচির মিচির করে ডাকাডাকি করছে।মা পাখি সেই বাচ্চা পাখিদের জন্য মুখে করে
খাবার এনে তাদের খাওয়াচ্ছে। সেই দৃশ্য খুবই সুন্দর লাগছিল, কতইনা বিচিত্র। আমার মনটা খুশিতে
ভরে গেল। কিন্তু আসল ঘটনাটা ঘটলো তারপরে। হঠাৎ একদিন আমি দেখি যে সেই বটগাছ, পাখি ও
বাচ্চা কিছুই নেই। দেখি পাশে সেই বট গাছের গুড়ির একটা ভাঙ্গা টুকরো পড়ে আছে। কাছেই
দাঁড়িয়ে থাকা একজন ভদ্রলোককে আমি জিজ্ঞেস করলাম যে,”এই গাছটি
কেন কাটা হয়েছে”?
তিনি আমাকে বললেন,”এই জমি একজন লোক কিনেছেন”। তিনি আরো বলেন
যে’তিন চার দিনের মধ্যেই এখানে বাড়ি তৈরি করার কাজ শুরু হবে'। কথাগুলো শুনে মনের কষ্টে বাড়ি ফিরলাম। বাড়ি ফিরে আমাদের বাড়ির দোতলার ছাদের ওপরে উঠে গেলাম।
বিকেলটা ছাদের ওপর কাটিয়ে সন্ধ্যেবেলা ঘরে নেমে এলাম। তারপর অল্প খাবার খেয়ে,
বই
পড়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুমানোর সময় শুধু ওই পাখি আর বটগাছের কথাই মনে
পড়ছিল, শুধুই ভাবছিলাম সেই পাখি
আর পাখির বাচ্চাগুলো কোথায় বা গেল ? কি
অবস্থা হলো তাদের ?
এই কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে
চোখ লেগে গেছে ঠিক
বুঝতে পারিনি।সকালবেলা পাখির খিচিরমিচির আওয়াজে আমার ঘুম ভাঙলো।
দেখি যে আমাদের ছাদের চিলেকোঠায় একটা সুন্দর দেখতে পাখি বাসা বেঁধেছে। আমার মনটা
আনন্দে ভরে গেল।সেই দিন থেকে আবার আমি উৎসাহ নিয়ে পাখীদের দেখাশোনা করতে
শুরু করলাম। জানি আবার কচি ছানা হবে। আবার নতুন করে শুরু হবে জীবনের কিচিরমিচির।
আর কেউ ওদের বাসা নষ্ট করতে পারবে না। আমার বাড়িতেই প্রকৃতি তার শোভা মেলে ধরবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন