উপহার - কথিকা বসু

 




তিনশো পঁয়তাল্লিশ হচ্ছে, বুঝলে। সাড়ে তিনশোই ধরো”, দুবার করে মেয়ের অন্নপ্রাশনের, নিমন্ত্রিতদের সংখ্যার হিসেব কষে পিয়ার উদ্দেশ্যে বলে উঠলো কৌশিক। “পেয়ারাবাগানের দিদাদের ধরেছো তো? আর মিন্তিমাসিদের? আমার সাধে ওদের কিন্তু বলতে ভুলে গেছিলে! তারপর কিরকম অশান্তি হয়েছিল, মনে আছে তো? এবার একজনও যেন বাদ না পড়ে, ঠিক করে দেখে নিও। কাউকে কোনকিছু বলার কোনো সুযোগ দিতে চাই না আমি আর “, রান্নাঘরের কাজ সারতে সারতে কৌশিককে জবাব দেয় পিয়া। “আরে, হ্যাঁ রে বাবা, আমি কিছু ভুলিনি। সব মনে আছে, ঐজন্য এবার একদম ঠিক করে হিসেব করেছি, কেউ বাদ পড়েনি”, বলে ওঠে কৌশিক। “ঠিক আছে, “তাহলে আর কি? হল বুকিং আর ক্যাটারারের জন্য ঠাকুরপোকে বলে দাও, ও সব দেখে নেবে”।”হ্যাঁ, সে তো বলবই, আর তার সাথে তাহলে মেমোরিস প্রিন্টার্সের এর দোকানে কার্ডটাও ছাপতে বলে দিই! বয়ান ঠিক আছে তো, আর কিছু অদলবদলের দরকার নেই তো?", পিয়াকে জিগ্যেস করে কৌশিক। “না মানে, কার্ডে ওটা লিখলে কেউ যদি কিছু মনে করে?", রান্নাঘর থেকে কৌশিককে জিগ্যেস করে পিয়া। “অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের উপহার হিসেবে শুধু চারাগাছ বা বীজ আনতে বলায়, মনে করার কি আছে? বরং আমার তো মনে হয়, সবার তো এই উপহার খুশি খুশি আনা উচিত, কারন ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এক সুন্দর, দূষণহীন আর বাসযোগ্য পৃথিবী উপহার দিতে গেলে, এর থেকে ভালো আর কোনো উপহারই হয় না। আর সেইজন্যই অন্য যে কোন উপহার দেবার বদলে, সবাইকে উপহার হিসেবে চারাগাছ বা বীজ আনার কথা কার্ডে লিখব, তাতে যদি কেউ কিছু মনে করে আমার বয়ে গেল”, কার্ড ছাপানোর দোকানে ফোন করতে করতে বলে ওঠে কৌশিক।

 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন