শুভ বিজয়া - এণাক্ষী কয়াল মণ্ডল

 

Day in the life of a Sanatani: "Khush Raho"


দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের পর বাতাসে ভেসে বেড়ায় কেমন জানি এক মনখারাপী সুর। হেমন্ত অনুষঙ্গ। ডায়মন্ড রেসিডেনসিয়াল কমপ্লেক্সের গেটের ভেতরে এসে দাঁড়ায় বাইকটা। "তুমি আসবে বলে....." গানের সুরে পাঁচ তলার ফাইভ বাই টু এর কলিংবেলটা বেজে ওঠে হঠাৎ। দরজা খুলতেই বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা মিষ্টি একটা মেয়ে উচ্ছ্বল গলায় বলে ওঠে, "এসে গেছি কাকু কাকিমা!"

পাশে দাঁড়িয়ে এক তরুণ।

হাসিমুখে ওদের ভিতরে আসতে বলেন অনিমাদেবী। শুভ বিজয়ার প্রণাম করে সোফায় জমিয়ে বসে পুলক ও শ্বেতা।

বিশাল রসগোল্লার হাঁড়িটা দেখে অনিমাদেবী বলেন, "করছে কি! দু'জন বুড়ো মানুষের জন্য এই এত্তো মিষ্টি!"

অবনীবাবু অনিমাদেবী আর ওরা দু'জন বসে টি টেবিলটাকে ঘিরে। তরতরিয়ে কথারা পল্লবিত হয়ে চলে। কথার ফাঁকে অনিমাদেবী হাজির করেন প্লেট ভর্তি কুঁচো নিমকি আর নারকেল ছাপা।

-"মাসিমা আপনার হাতের এই সব খাবারের জন্য সারা বছর অপেক্ষায় থাকি আমরা।" বলে পুলক।

কথায় কথায় আধঘণ্টা সময় বয়ে যায় জলের মতো।

-"কাকু কাকিমা আমরা তাহলে চলি। নিজেদের শরীরের খেয়াল রাখবেন।"

-"ভালো থেকো। আবার এসো।" বলেন  অনিমাদেবী।

প্রণাম করে বেরিয়ে যায় ওরা।

আবার নির্জন হয়ে পড়ে নিঃসন্তান মজুমদার দম্পতির দু'কামরার ফ্ল্যাটটা। পাঁচহাজার টাকায় আধঘণ্টা। কাকু কাকিমাকে শুভ বিজয়া জানাবার জন্য আত্মীয় ডট কমে বুকিং করেছিলেন কমলেশ মজুমদারের ইংল্যান্ড নিবাসী ভাইপো। এই নিয়ে তৃতীয় বছর।

বাইক ছুটে চলে। আত্মীয় ডট কমের কর্মচারী পুলক আর শ্বেতার পরবর্তী গন্তব্য পার্কসার্কাস। অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক বিনায়ক গুহর জন্য বুকিং করেছেন তাঁর প্রবাসী সুপুত্র রাতুল গুহ।


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন