ফাইনাল ম্যাচটা বিজয়ের গোলেই দল জিতলো। চাম্পিয়ন হওয়ার পর সেলিব্রেশন খাওয়াদাওয়া সারতে সারতে বেশ দেরি হয়ে গেছে। এবার বাড়ি ফেরার পালা।
নামখানা থেকে খেলায় জিতে সবাই ফিরবে পৈলান। কেবল বিজয় বাস থেকে আমতলায় নামলো। রাত প্রায় দশটা বেজে গেছে। বর্ষাকাল। অঝোরে বৃষ্টি পড়ছে। রাস্তাঘাট শুনশান। কোনো গাড়ির দেখা নেই। যেতে হবে বিদ্যানগর, প্রায় চার কিলোমিটার পথ। অগত্যা হাঁটতে শুরু করলো।
কিছুটা হাঁটার পর আরো জোরে বৃষ্টি নামলো। সঙ্গে প্রবল ঝড়, ঘনঘন বজ্রপাত হচ্ছে। আর হাঁটতে পারছে না ক্লান্ত বিজয়। বিকট শব্দে কাছাকাছি কোথাও বাজ পড়লো। ভয়ে চোখ বন্ধ করে নিলো সে। মনে হল কে যেন তাকে টেনে একটা কুঁড়ে ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে নিলো।
- এরকম দুর্যোগে কেউ রাস্তায় বের হয়?
- দাদু, আপনার ঘরে আশ্রয় দিয়ে আমার প্রাণ বাঁচালেন।
"বিপদের সময় মানুষকে সাহায্য মানুষই...।" বৃদ্ধ যেন একটু থমকে গেলো, তারপর বললো, "জানালা দিয়ে দেখো, কেন টেনে ঘরে ঢোকালাম।"
বিজয় দেখলো, বজ্রপাতে জ্বলন্ত একটা নারকেল গাছের আগুন আস্তে আস্তে নিভে যাচ্ছে।
- তুমি শুয়ে পড়। আমি বাইরের ঘরে আছি।
ঘরে খাট বিছানা কিছুই নেই। মাটিতে মনে হয় খড় বা ঘাস বিছানো আছে। অন্ধকারে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। ক্লান্ত অবসন্ন বিজয় বেশিক্ষণ জেগে থাকতে না পেরে তার উপরেই শুয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
সকালে সূর্যের আলো মুখে পড়তে বিজয়ের ঘুম ভাঙলো। দেখলো রাস্তার ধারে শুকনো ঘাসের ওপর শুয়ে আছে। আসে পাশের মাটি গত রাতের বৃষ্টিতে ভেজা! কিছু দূরে দাঁড়িয়ে আছে পোড়া নারকেল গাছটা। কিন্তু আশেপাশে কোনো বাড়িঘর নেই! তাহলে দুর্যোগের রাতে কে তাকে আশ্রয় দিলো! কে সেই শুভাকাঙ্ক্ষী!
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন