ঘরে এ.সি. মেশিন নেই। গরমে ঘুমোতে পারছিলাম না। ফ্যানের হাওয়া আগুনের হলকার মতো লাগছিল। কিছুতেই ঘুম আসছিল না। সিগ্রেট ধরিয়ে জানলায় কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে কবিতার কথা ভাবছিলাম।
এমন সময় এক পরী এসে বসল জানলার পাশে। বলল, "কি নাম তোমার?"
আমি রসিকতা করে বললাম, "কবি।"
- "তুমি কবিতা লেখো বুঝি?"
আমি গর্ব করে বুক ফুলিয়ে বললাম, "লিখি তো.."
- "তবে আমায় নিয়ে একটা কবিতা লেখো তো দেখি!" পরী বললো।
- "কি করে লিখবো, আমি কি তোমায় চিনি, না জানি?"
- "কবিতা লিখতে গেলে বুঝি চিনতে জানতে হয়?"
- "তা তো হয়ই..."
- "কেন তোমার কল্পনা কি ডানা মেলে না আমার মতো?" বলেই সে তার দুই ডানা ঝেড়ে দিলো। আমার গায়ে এসে লাগল এক হিমেল পরশ।
- "আছে, তবে সব সময় মেলি না.."
- "কেন, ভাঙা নাকি?"
- "না না!" আমি প্রতিবাদ করে উঠি।
- 'এতো চিৎকার করে বলবার কি আছে? নেড়ে দেখাও তবে আমায় আমার মতোন করে এইভাবে।" সে আবারও তার দুই ডানা ঝেড়ে দিতেই সারা শরীরে হিমেল পরশে কাঁপন ধরলো যেন।
আমি আমার কল্পিত ডানা দু'টি নাড়াতে গিয়ে দেখি ডানা দু'টি পাথরের মতো ভারী, কিছুতেই নাড়াতে পারছি না।
- "কি হলো?" পরী জানতে চায়।
আমি বলি, "নড়ছে না তো.."
- "তাহলে তুমি কবিতার কাছে পৌঁছাবে কি করে?"
- "কবিতাই আমার কাছে আসবে, আমি জানি।"
- "তাই নাকি? যেমন আমি এসেছি?" বলেই পরী অদ্ভুতভাবে হাসলো।
আমি তার কথার উত্তরে হাসতে গেলাম। দেখলাম চোয়াল ভারী শক্ত হয়ে লাগছে কেন এতো! আমি ভাবলাম মনে মনে। হাসির বদলে মুখটা যেন বিকৃত হয়ে ভেঙচি কাটছে।
- "আমিই কবিতা!" বলে হাসতে হাসতে পরী উড়ে গেল। আমি আহাম্মকের মতো সেদিকে তাকিয়ে রইলাম।
আমার কবিতা লেখা আর হলো না।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন