পুরাতন রবি, পরিচিত শশী উদিত মুক্ত গগনে;
চেনা পৃথিবীরে না পারি চিনিতে, ভাবি দেখিতেছি স্বপনে।
স্বপনে নহে, নহে ভ্রমে তাহা, দেখিতেছি সবই নয়নে;
মহামারি রোষে শ্মশান ধরণী, মনুষ্য চিরশয়নে।
দগ্ধ নগর, স্তব্ধ গেরাম, নিথর পড়ে সড়ক;
বিষন্নচিত্তে দেখি সমাজেরে, বুঝি লাগিয়াছে মড়ক।
দেখো দেবালয় হইল রুদ্ধ কঠিন লৌহদ্বারে;
দেব স্মিত হাসে, চাহিয়া রহে, অন্ত দেখার তরে।
ভাবিত কবি আজ এ দুর্দিনে নিষ্কৃতি তবে কেমনে?
চিন্তনগ্ৰাসে কবি বিনিদ্র, কাটে নিশি দুঃস্বপনে।
শিল্পীকণ্ঠে বিঁধে কণ্টক, বাহির না হয় গান;
রাঙাচক্ষেতে কহে মহামারি, গৃহেই রক্ষে প্রাণ।
করে বিদীর্ণ কর্ণপটহ মায়ের রোদনস্বর;
অবিরাম তালে প্রাণ কেবলই ছাড়িতেছে শত ধড়।
জীবন পতিত সঙ্কটমুখে, গতিহীন গ্ৰহ ত্রস্ত;
বিস্ময়-সহ দেখি রণভূমে নিষ্ক্রিয় যত অস্ত্র।
বিশ্ববক্ষে নাই দ্বন্দ্ব, নাই জয়, নাই হার;
আজ এ যুদ্ধেতে দেখি কেবলই ঐক্যের সমাহার।
ভাঙিছে তন্দ্রা খেচর কূজনে, দেহ-মন অবসন্ন;
কর্ম বিনা ভাবিত মানব, জুটিবে কেমনে অন্ন!
নাই কর্ম, না জোটে অন্ন, মনোবলে ধরে চিড়;
কাঁদিয়া-কাঁদিয়া যায় শুকাইয়া দীনের নয়ননীড়।
তবু বেঁচে থাকা আজ এ আশায়, ঈশ্বরে বড় মানি;
ঘুচে যাবে শোক, মুছে যাবে মারি, নবপ্রভাতের সূর্য আবারও উদিত হইবে জানি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন