‘ উফ! কিছুতেই
ফোন ওঠাচ্ছে না তো। কি যে করি বড্ড টেনশন হচ্ছে। কি যে ওরা করছে কে জানে!’,
পর্ণী ভেতরে ভেতরে অস্থির
হয়ে ওঠে, ছটফট করতে থাকে।
ক’দিন আগে পুলিশ এসে বাড়ি সিল করে দিয়ে
গেছে। প্রথমে তো কেউ জানতই না। এখন জানাজানি হয়ে গেছে। তাই আরো ভয় করছে।
বাড়ির পাঁচজনের মধ্যে
বাচ্চাদুটো বেঁচে আছে, বাকি তিনজনের একই অবস্থা।
পর্ণীর শ্বশুরমশাইয়ের জন্যেই
চিন্তা বেশি। বয়স হয়ে গেছে। তারপর শ্বাসকষ্ট এত বেশি।
কি যে করছে লোকটাকে নিয়ে
হাসপাতালের লোকগুলো কে জানে!
এখনো পর্যন্ত কোনো খবর বলতে
পারছে না কোথায় রেখেছে ওনাকে। সকাল থেকে হাজারটা ফোন হয়ে গেছে অথচ এত কেয়ারলেস
হাসপাতালগুলো যে কোনো খবরই দিতে পারছে না। কি যে করবে ও। নিজের শরীর ঠিক নেই।
অর্থের শরীর ও ঠিক নেই। ওকে বলতেও পারছে না কিছু।
-
হ্যালো কে বলছেন? পর্ণী চ্যাটার্জি ?
-
হ্যাঁ বলছি।
-
আপনি এসে আপনার
শ্বশুরমশাইকে নিয়ে যান।
পর্ণীর বুকটা ধক করে ওঠে। সে
চুপ করে থাকে, আশঙ্কায় হাত পা কাঁপতে থাকে।
-
মা---নে? কোথায় উনি? কোথায় রেখেছেন আপনারা?
-
চিন্তা করবেন না।
উনি ঠিক আছেন। সুস্থ হয়ে গেছেন আপনারা নিয়ে যান।
পর্ণী একটা বিশাল দীর্ঘশ্বাস
ফেলে ভাবে- জীবন এত সস্তা নয় যে, যা আশঙ্কা করা হয়, তাই কিছুই ঘটবে। কখনো কখনো জীবনও জাদু দেখিয়ে যায় অজান্তে।
শ্বশুরমশাইকে ফিরিয়ে নিয়ে আসে সে
বাড়িতে। একটা আলাদা ঘরে তাকে রেখে দেয় কোয়ারেন্টাইনে। এর মাঝেই বাচ্চাদুটোও পজিটিভ। পর্ণী মাথায় হাত দিতে গিয়েও থমকে যায়। এখন মাথা ঠান্ডা
রেখে কাজ করতে হবে।
পর্ণী হার মানে না। জীবনের সব যুদ্ধেই তাঁকে জয়ী হতে হবে। বাবা বলতো ধৈর্য হলো
আসল মূলধন যা দিয়ে সব পথ পেরিয়ে যাওয়া যায় পথ খুঁজে পাওয়া যায়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন