"এই অন্নপূর্ণাপুজো কিন্তু
আমাদের জমিদার বাড়ির একটি প্রিয় ও ঐতিহ্য শালী উৎসব।দেখিস যেন কোন ত্রুটি না
হয়। অনেক গণ্যমাণ্য মানুষ আসবে। কোন প্রকার কোন নোংরা পোশাকের মানুষকে ভেতরে
ঢুকতে দিবি না। নোংরা পোশাকের মানুষ এই উৎসবে এত সন্মানিত অতিথির মাঝে এলে আমার
সন্মান নিয়ে টানাটানি।" কথাগুলো বেশ জোরেই বললেন বাড়ির মালিক অঘোর বাবু।
ঠিক তখনই গেটের কাছে হাজির হলো এক দীন দরিদ্র শতছিন্ন বস্ত্রে এক মহিলা।তার গায়ের ব্লাউজটাও ছেঁড়া। মাথার চুল উস্কো খুস্কো। মহিলা দুহাত বাড়িয়ে বললেন ,"বাবা দুটো ভিক্ষা দাও"।
অঘোর বাবু পাহাড়াদারদের ঐ মহিলাকে তাড়িয়ে দেবার নির্দেশ দিলেন। পাহাড়াদার গুলো মহিলার মাথায় লাঠি মেরে তাড়িয়ে দিল। এর কিছু পরেই উঠলো প্রবল দুর্যোগ। ভীষণ ঝড় জল। চারিদিক ভেসে গেল।অঘোর বাবুর বাড়ির প্রিয় উৎসব অন্নপূর্ণা পুজোতে বিঘ্ন ঘটলো।কেউ এলো না পুজোতে। এমতাবস্থায় অঘোর বাবু অন্নপূর্ণা মায়ের ঘরে মায়ের কাছে জোর হাত করেমাথা মেঝেতে ঠুকে নিবেদন করলেন "মা দয়া করো। পুজোর এত আয়োজন সব ভেস্তে গেছে। কেন এমন হলো মা। পুজোতে কি কোন ত্রুটি ছিল?"
তিনি মাথা তুলে চাইতে দেখলেন,একি অন্নপূর্ণা মায়ের বিগ্রহ সামনে নেই। সেখান দাঁড়িয়ে আছে রক্ত মাংসে গড়া শতছিন্ন বস্ত্রে সেই ভিক্ষুক মহিলা।
তিনি যেন অঘোরবাবুকে বলেছে ,"ত্রুটি ছিল,আমাকে যে ভিক্ষা না দিয়ে তোর দুয়ার থেকে তাড়িয়ে দিলি। ভক্ত যেখানে ভগবানকে তাড়িয়ে দেয়। সেখানে কি ভগবানের পুজো হয়।"
" আমার খুব ভুল হয়ে গেছে মা",- জোর হাত করে অঘোর বাবু বললেন।
"আমি তোমাকে চিনতে পারিনি। "সেই ভিক্ষুক মহিলা অঘোর
বাবুকে আশীর্বাদ করে অদৃশ্য হল। সাথে সাথেই বাইরের দুর্যোগ কেটে গেল।আরে ঐ তো একদল
মানুষ অঘোরবাবুর বাড়ির দরজা দিয়ে ঢুকছে না।এরাই তো সব নিমন্ত্রিত আজ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন