রাত বাড়ছে। অনিমেষের এখনও বাড়ি
ফেরার নাম নেই। বিকালবেলা বেরিয়েছে। বলেছিল একটু রাত হবে। তাই বলে এত রাত! সকালের
তাড়াহুড়োয় আজ ফোনটাও গেছে ফেলে। খবর যে নেবে তারও উপায় নেই। উৎকণ্ঠায় তিতির। ঘড়ির
কাঁটা সময় জানান দিচ্ছে সাড়ে এগারোটা....
—"ফোন না হয় নেয়নি, কিন্তু কখন ফিরবে সেটাতো জানাবে!" স্বগতোক্তি তিতিরের, "এটুকুতো একটা রেস্পন্সিবল ডাক্তারের থেকে আশা করাই যায়!" বলেছিল কয়েকটা ক্রিটিকাল অপারেশন আছে। সেগুলো সেরেই বাড়ি।
সময়ের সাথে উৎকণ্ঠাও বাড়ে। মনের অস্থিরতা লুকাতে পারেনা তিতির। নার্সিংহোমে ফোন করে জানতে পারে অনিমেষ বেরিয়েছে অনেকক্ষণ। উৎকণ্ঠা মিশ্রিত অস্থিরতায় ঊর্ধমুখী হার্টরেট। অজানা আশংকা তিতিরের মনের দখল নেয়। ঘরেই পায়চারি শুরু করে তিতির। টেনশন হলেই শরীর খারাপ লাগে সেটা অনিমেষ জানে। কাউন্সেলিং-এ গিয়ে তিতির জেনেছিল কারণটা ওসিডি। তবুও উৎকণ্ঠা বাড়ায় অনিমেষ! এজন্য রাগ হয় তিতিরের।
—"ডিংডং" কলিং বেলের আওয়াজ শুনে দৌড়ে গিয়ে দরজা খোলে তিতির। ভেবেছিল অনিমেষ কিন্তু বিস্ময় দাঁড়িয়েছিল ওপারে। এত রাতে মা-বাবাকে দেখে বিস্মিত তিতির বলে, "কি ব্যাপার, হঠাৎ এত রাতে? খবরাখবর ঠিক আছে তো!"
—"অনিমেষ কোথায়?” বলে গম্ভীরমুখে ভিতরে ঢুকে তিতিরের বাবা।
তিতিরের কণ্ঠে এবার চরম উৎকণ্ঠা। অনিমেষ ফেরেনি, মা-বাবা হাজির, সব মিলিয়ে বুকের ভিতরটা মোচড় দিয়ে ওঠে। বলে, "দেখোনা, একটু রাত হবে বলেছিল। তাবলে এত রাত!” ঘড়ির দুই কাঁটা মিলে ঢংঢং করে জানায় রাত বারোটা।
চিত্র সৌজন্যঃ আন্তরজাল
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন