শতবর্ষ পার হওয়াএক নারী উদ‍্যোক্তা আর.পাপ্পামমাল

 


আর. পাপ্পামমাল 

"কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন৷

মা কর্মফলহেতুর্ভূর্মা তে সঙ্গোস্ত্বকর্মণি৷৷"

          

সবুজ বিপ্লবের কথা আমরা সবাই শুনেছি। এতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছিল পাঞ্জাব, হরিয়ানা, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ। সেই সময় বেশি বেশি রাসায়নিক সার, কীটনাশক ব‍্যবহার করে যা লাভ হয়েছিল এখন তার পরিমাণ অনেক কমে গেছে। জমির উর্বরতা কমে গেছে, ফসল ফলনের মাত্রা কমে গেছে, এমনকি অনেকের শরীরে দুরারোগ‍্য ব্যাধি ( ক‍্যান্সার ) দেখা দিয়েছে। গর্ভবতী মহিলারা অসুস্থ বাচ্চা জন্ম দিচ্ছে। 

একবার দেশে বিদেশী চকচকে মুসুর ডাল ব‍্যবহারের প্রতিবাদে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। বলা হয়েছিল, বিদেশের চকচকে মুসুর ডাল আমাদের স্বাস্থ‍্যের জন‍্য খারাপ, কিন্তু পরে বলা হয়, 'না ঠিক আছে'। যতই হোক আমরা তৃতীয় বিশ্বের মানুষ, বেশি প্রতিবাদ করলে আমাদেরই বিপদ! যাহোক, একটা আশার কথা বতর্মানে অনেকেই পরিবেশ সচেতন হচ্ছে, অনেকেই পরিবেশ রক্ষার জন‍্য এগিয়ে আসছে, এতে বয়স কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে না - এটা আবারও প্রমাণ করলেন ১০৬ বছরের মহিলা কৃষক পাপ্পামমাল। 

এখনও সরকারী পরিসংখ্যান কৃষি কাজ এবং অর্থনীতিতে নারীদের প্রকৃত অংশকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করে না। ২০১৩ সালের অক্সফাম রিপোর্ট অনুসারে, ভারতে প্রায় ৮০% খামারের কাজ মহিলারা করেন। কিন্তু তাঁরা মাত্র ১৩% জমির মালিক। প্রায় ৬০-৮০% খাদ্য গ্রামীণ মহিলারা উৎপাদন করে। তবুও তাঁরা কৃষক হিসাবে স্বীকৃত নয় এবং পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় তারা পরিবার বা স্বামীর জমিতে অংশ পায় না। জমির শিরোনামবিহীন মহিলাদের ব্যাঙ্ক, বীমা, সমবায় এবং সরকারী প্রকল্পগুলির প্রতিষ্ঠানিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত করা হয়৷ 

পাপ্পামমালকে খুব খাটতে হয়েছিল জমির মালিক হওয়ার জন‍্য। তিনি জানতেন পারিবারিক জমির উত্তরাধিকারী তিনি হতে পারবেন না। প্রাথমিকভাবে তিনি একটি দোকান খুলেছিলেন, তারপর নিজের জমি কেনেন। পাপ্পামমাল ভাগ‍্যের অজুহাত দিয়ে কাঁদতে পছন্দ করেন না। তিনি সেইসব মানুষদেরও অপছন্দ করেন যারা ভাগ‍্যের দোহা দিয়ে কষ্ট পান। তিনি তাঁদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখেন। পাপ্পামমাল কর্মে বিশ্বাস করেন। 

তাঁর বোনের নাতি আর.বালাসুব্রহ্মণ্যম এক সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেনঠাকুমা সব সময় বলেন, 'আমি এই বয়সে যদি কাজ করতে পারি, তোমরা পারবে না কেন!


জন্ম ও পরিচয় 

জন্ম সাল : তাঁর জন্ম সাল ১৯১৬। 

আবাসস্থল : ঠেক্কামপাট্টি গ্রামে, যেটি কোয়েম্বাটুরের কাছে অবস্থিত। 

পরিবার : কৃষক-পরিবারের সন্তান পাপ্পামঙ্গল। 

বতর্মান বয়স : ১০৬ বছর।  

শারীরিক উচ্চতা : প্রায় ৬ ফুট।

পেশা : কৃষিকাজ। 

শিক্ষাগত যোগ‍্যতা : প্রথাগত শিক্ষা পান নি। নিজেই স্বীকার করেছেন তিনি বিদ‍্যালয়ে যান নি। 

সন্তান : নিজের ছিল না। বড় বোনের চার মেয়েকে দত্তক নিয়েছিলেন। 

আত্মীয় : বোনের নাতি আর বালাসুব্রহ্মণ্যম। 


তিনি ২০২১ সালে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ নাগরিক পুরস্কার 'পদ্মশ্রী' পান 'জৈব পদ্ধতিতে কৃষিকাজকরার জন‍্য।

জীবচর্চা

গত বছর প্রাপ্ত তথ‍্য থেকে জানা যায়, পাপ্পামমাল বয়সের ভারে ন‍্যুব্জ না হয়ে সোজা হয়ে হাঁটেন। তিনি প্রতিদিন ভোর বেলায় ঘুম থেকে ওঠেন, তারপর গ্রামের মধ্যে এক চক্কর হেঁটে আসেন। নিম দাঁতন দিয়ে দাঁত মাজেন। কোন রকম রাসায়নিক দেওয়া পেস্ট ব‍্যবহার করেন না। তিনি রোজ মাঠে যান, তেমনি তাঁর গলার স্বর! 

আর বালাসুব্রহ্মণ্যম বলেছেন যে, "তিনি কেবল কলা পাতায় পরিবেশন করা বাষ্পযুক্ত গরম খাবার খান। পাঁচ বছর আগে যখন তিনি কোয়েম্বাটুরের মহিলা কৃষকদের প্রতিনিধি হিসাবে  দিল্লিতে গিয়েছিলেন, তখন তিনি তাঁর সাথে কলা পাতা নিয়ে গিয়েছিলেন। সেই কলা পাতা প্লেনে এবং সম্মেলনের মধ্যাহ্নভোজের সময়ও ব্যবহার করেছিলেন।"  সম্মেলনে, তিনি স্বাস্থ্যের উপকারিতা সম্পর্কে বলেছিলেন। কলা পাতায় খাওয়া শরীরের এবং পরিবেশের জন‍্য উপকারী। কারণ, এটি সহজে পচে যায়, যা পরিবেশবান্ধব।

অবশ‍্য 'পদ্মশ্রী' পুরস্কার নিতে গিয়েছিলেন উইলচেয়ারে করে। যাক গে, সেটা বিষয় বড় ব‍্যাপার নয়। তিনি যে এখনও কর্মক্ষম তা আমাদের কাছে শিক্ষণীয়। 

বিবাহ জীবন 

বিয়ের পরও চাষের জমিতে কাজ করতেন। সন্তান হয়নি বলে নিজের ছোট বোনের সাথে তাঁর স্বামীর আবার বিয়ে দিয়েছিলেন। 

জৈব পদ্ধতিতে কৃষিকাজের ভাবনা 

নিজের শরীর যত্নের সাথে সাথে তিনি রাসায়নিক মুক্ত চাষ করার কথাও ভাবতেন। সেইমতো তিনি জৈব পদ্ধতিতে কৃষিকাজ শেখেন। তামিলনাডু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ( Tamil Nadu Agricultural University )হাতে কলমে কাজ করেছেন দীর্ঘকাল। একদিন সেখানেই শোনেন অর্গ্যানিক চাষের কথা। তারপর তিনি তা নিজের জমিতে করে দেখেন। সেখানে সফলতা পান।

কৃষিকাজের প্রতি উৎসাহ 

প্রারম্ভিক বছরগুলি মনে করার সময় পাপ্পামম্মালের স্মৃতি ঝাপসা হয়ে যায়। পাপ্পামমালও তার ব‍্যতিক্রম নয়। তিনি বলছেন, “আমাদের বিশ্রাম বা খেলার জন্য খুব কমই সময় ছিল। আমাদের মেয়েদের সব পর্যায়েই কাজ করতে হতো – চাষাবাদ, বপন, সেচ, ফসল তোলা এবং ফসল কাটার পরের কাজ যেমন চাফিং, মিলিং ইত্যাদি।বিয়ের সাথে দায়িত্ব দ্বিগুণ হয়ে যায়, বাড়ির কাজ এবং খামারে কাজ করতে হয়। " তিনি আরও বলে, “কিন্তু এই জীবনযাত্রা মহিলাদের সহ্য করতে হ। আমাদের কোন উপায় ছিল না। আমরা খুব কমই ভালো খাবার খেতাম। ভাত শুধুমাত্র উৎসবের সময় রান্না করা হত।” মহামারী চলাকালীনও কেভিকে-তে ( KVK) তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণ চাষের প্রতি পাপ্পামমালের একনিষ্ঠতা প্রমাণ করে। 

১৯৫০-এর দশকের শেষের দিক থেকে সব ঘটনা প্রায় স্পষ্ট মনে করতে পারেন পাপ্পামমাল। সেইসময় তাঁর জীবনের গতিপথ একটি বড় মোড় নেয়। "আমার কোন সন্তান না থাকায় আমি আমার বোনকে আমার স্বামীর সাথে বিয়ে দিয়েছি," তিনি বলেন। তিনি তাঁর ঠাকুমার সাথে ঠেকামপাট্টিতে নতুন করে জীবন শুরু করেছিলেন, কারণ তার বাবা-মা মারা গিয়েছিলেন যখন তিনি খুব অল্প বয়সের ছিলেন৷ ঠেকামপাট্টিতে একটি চায়ের দোকান শুরু করা থেকে, এটিকে একটি মুদি দোকানে পরিণত করা এবং তার থেকে ২.৫ একর জমি কেনা পাপ্পামমালের একটি অবিচ্ছিন্ন লড়াই বর্ণনা করে বহুবর্ষজীবী ভবানী নদী যেটি নীলগিরি পর্বত থেকে উৎপন্ন হয়ে তাঁদের গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে, তা তাঁর খামার থেকে প্রায় ২ কিমি দূরে অবস্থিত ছিল, সেইজন‍্য খামারে সেচ দেওয়ার কোন উপায় ছিল না। তাই তিনি উত্তর-পূর্ব মৌসুমী বায়ুর উপর নির্ভর করে চাষ করতেন। যেমন - বাজরা, ডাল এবং ছোলার মতো বৃষ্টিনির্ভর ফসল। গত দশ বছরে তিনি ঐতিহ্যবাহী রেইড ফিড ফসলের পাশাপাশি ক্ষুদ্র সেচের আওতায় কলা চাষ করছেন।


১৯৮৩ সাল
, পাপ্পামমালের জীবনে আর একটি বড় মাত্রায় পরিবর্তন এসেছিল।অবিনাশিলিঙ্গম ইনস্টিটিউট অফ হোম সায়েন্স ফর উইমেনের অধীনে পরিচালিত কোয়েম্বাটোর জেলার ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চের (আইসিএআর) কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে (KVK) যোগদানের পরে তিনি একজন প্রধান কৃষক এবং 'চাষে নারী'-এর আইকন হয়ে উঠেছিলেন

KVK, আর্থিক সামর্থ্যের ক্ষেত্রে স্থানীয় কৃষকদের উপযুক্ততার উপর নির্ভর করে অবস্থান নির্দিষ্ট প্রযুক্তি এবং ফসলের ধরণ সনাক্তকরণেও জড়িত। "খামার বিজ্ঞানীদের কাছ থেকে তিনি প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নেন এবং কেভিকে-এর স্থানীয় ব্যবস্থাপনা কমিটির (LMC) একজন তাৎক্ষনিক নেত্রী হয়ে ওঠেন। অন্তর্নিহিত সাংগঠনিক দক্ষতার সাথে সাথে তিনি খামার সম্প্রসারণ কার্যক্রমে অন্যান্য মহিলাদের সংগঠিত করতে শুরু করেছিলেন", বলেন কুমারভাদিভেল (সিনিয়র বিজ্ঞানী এবং KVK-এর জেলা ইনচার্জ)। LMC অবশেষে একটি বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা কমিটি (SAC) হয়ে ওঠে এবং পাপ্পামমাল তার সদস্য হন।

SAC-এর সদস্য হওয়ার পর তিনি একজন দক্ষ খামার বিজ্ঞানী হয়ে ওঠেন। বিশেষজ্ঞদের সাথে মনোযোগের সাথে কাজ করার ফলে তাঁর দক্ষতায় আরও শান পড়ে। অবিনাশিলিঙ্গম ইনস্টিটিউট অফ হোম সায়েন্স ফর উইমেনের এক্সটেনশন সেন্টারের প্রধান সদস্য হিসাবে, এবং কোয়েম্বাটোরে তামিলনাড়ু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (TNAU) বিভিন্ন কমিটির সদস্য হিসেবে তিনি বিভিন্ন ল্যাব-টু-ফার্ম প্রযুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি সহ-মহিলা কৃষকদের মধ্যে নতুন উদ্যোগের প্রাথমিক গ্রহণকারী এবং প্রবর্তক হয়ে ওঠেন৷কুমারভাদিভেল বলেছেন, "ঠেক্কামপাট্টিতে তাঁর খামারটি গার্হস্থ্য বিজ্ঞান এবং কৃষির শিক্ষার্থীদের জন্য একটি মডেল খামার হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছিল এবং গ্রামে থাকার সময় তিনি ছাত্রদের হোস্টের ভূমিকা পালন করেছিলেন," । তিনি KVK-এর অধীনে তাঁর গ্রামে মহিলা কৃষকদের প্রথম স্বনির্ভর গোষ্ঠীও সংগঠিত করেছিলেন। তিনি নিজের সাথে অন‍্য কৃষকদেরও বিভিন্ন প্রকল্পে যোগদানে উৎসাহিত করতেন। 

২০০৭ সালে তিনি অন্যান্য কৃষকদের নিয়ে 'গ্রামীণ শস্য ভান্ডার' প্রকল্পটিকে সফল করে তোলেন। ২০০৮ সালে, ৯২ বছর বয়সে, প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর আধুনিক খামার যন্ত্রপাতি পরিচালনায় তাঁর দক্ষতা প্রদর্শন করেছিলেন। 


প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভি.সি. শুক্লা প্রায় আট বছর আগে কোয়েম্বাটুরে গিয়েছিলেন, তিনি পাপ্পামমালের কথা শুনেছিলেন এবং তাঁর খামার পরিদর্শন করেছিলেন। এক ঘণ্টারও বেশি সময় তিনি তাঁর কাজের কথা জিজ্ঞেস করেন। একবার তিনি পাঞ্জাবের ৮০ জন কৃষকের সাথে তাঁর খামারে উৎপাদিত জিনিস দিয়েই মহাভোজের আয়োজন করেছিলেন।

“TNAU এর অধ্যাপকরা আমার কাছে ভাইয়ের মতো ছিলেন এবং ১৩ জন ভাইস চ্যান্সেলরের সাথে আমার সুসম্পর্ক ছিল। তাঁরা আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য একটিও উপলক্ষ হাতছাড়া করতেন না, তা সে কৃষি প্রশিক্ষণ কর্মশালা, এক্সপোজার ট্যুর বা বিশ্ববিদ্যালয়ে বার্ষিক কৃষক দিবস উদযাপন হোক,” পাপম্মাল বলেছেন। এই সমস্ত অনুষ্ঠানে তিনি অন্যান্য মহিলা কৃষকদের অংশগ্রহণ করতে উৎসাহিত করতেন। 

পাপ্পামমাল বলেন, “আমার নিজের ভয় ও অপছন্দ ছিল রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের প্রতি। যখন দেশে রাসায়নিক ইনপুট চালু করা হয়েছিল, তখন আমি আমার বাবার খামারে যে প্রাকৃতিক উপায় শিখেছিলাম তা অনুসরণ করতে থাকি।” পাপ্পামমাল আরও বলেন, জৈব চাষে তার সম্পৃক্ততা সম্পর্কে, "আমি জৈব চাষের কোনো নির্দিষ্ট স্কুল অনুসরণ করিনি বা কোনো বিশেষজ্ঞের দ্বারা প্রশিক্ষিত ছিলাম না।" 


তিনি দোয়েন চাষী খামার এবং পরিবারের সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীদের বৃহত্তর অংশগ্রহণের সমর্থক।

রাজনৈতিক জীবন 

তিনি রাজনীতিতে নাম লিখিছেন। পাপ্পামমাল স্থানীয় পঞ্চায়েতে দুইবার নির্বাচিত হয়েছেন – একবার থেক্কামপট্টি পঞ্চায়েতের ওয়ার্ড সদস্য হিসেবে, আরেকবার করমাদাই পঞ্চায়েতের কাউন্সিলর হিসেবে।


পরিবারের প্রতি ভালোবাসা  

নিজের জৈবিক সন্তান না থাকলেও তিনি বোনের সন্তানদেরই আপন সন্তানের মতো স্নেহ করেন। তিনি পরবর্তীকালে  আরও ৭.৫ একর জমি কিনেছিলেন। সেই জমি তাঁর বড় বোনের চার মেয়েকে দিয়ে দিয়েছিলেন। চার বোনকে পাপ্পামমাল দত্তক নিয়েছিলেন এবং শিক্ষিত করেছিলেন। কমলা (৬৮), দত্তক নেওয়া কন্যাদের একজন, যিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক এবং খামারে সাহায্য করেন।

'পদ্মশ্রী' প্রাপ্ত


অবশেষে এল কর্মের ফল প্রাপ্তের দিন! পেলেন দেশের চতুর্থ নাগরিক পুরস্কার 'পদ্মশ্রী'। আর.পাপ্পামমালের নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকে স্বাভাবিকভাবেই তাঁকে বহু মানুষের সাথে কথা বলতে হচ্ছে, তিনি কিন্তু সবার প্রশ্নের উত্তর হাসি মুখেই দিচ্ছেন! একটুও ক্লান্তি বা বিরক্তি বোধ করেন নি। দিব‍্য আধুনিকতার সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন। 

সাদা চকচকে চুল। পরনে রঙিন শাড়ি। হুইলচেয়ারে এগিয়ে এলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের দিকে। ভূষিত হলেন 'পদ্মশ্রী' সম্মানে।  ফোকলা দাঁতের অসাধারণ হাসি বলে দিচ্ছিল যে সত্যিই ইচ্ছা থাকলে কত কিছুইনা হতে পারে!

"যে কোনও এলাকায় এক বা একাধিক কৃষক সমষ্টি হওয়া উচিত, যা পণ্যের জন্য স্কেল এবং দর কষাকষির সুবিধা দেয়,” পাপ্পামমাল বলেছেন। তিনি আরও বলেছে, "অন্যথায় জৈব চাষের পক্ষে সফল হওয়া কঠিন কারণ স্বতন্ত্র কৃষকদের জন্য একটি ভাল দাম দেওয়া কঠিন হবে।" 


মহিলাদের সম্পর্কে বলেছেন, "মহিলাদের উচিত খামারে, গৃহস্থালিতে এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্তে অংশ নেওয়া তবেই সমগ্র সম্প্রদায় উপকৃত হবে।"

 ১০৬ বছরের পাপ্পামাল যা করেছেন তা সত্যিই প্রশংসার যোগ‍্য। 

 


কলমে - সোমা লাই

ফটো : Periasamy M


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন