লজ্জা - তমেকা ঘোষ

  



 টিভিতে দেখানো হচ্ছে খবরটা। মায়ের অনেক বারণ সত্তেও থানায় গিয়েছিল দীপ্তি । কোচিং ক্লাস থেকে ফেরার পথে অন্ধকার রাস্তায় কি হয়েছিল তার সাথে, পুরো বিবরণ জানিয়েছিল পুলিশকে । ওসি প্রতাপ চৌধুরি দীপ্তির মাথায় হাত রেখে কথা দিয়েছিলেন বারো ঘন্টার মধ্যে ধরে আনবেন অপরাধীদের। মিডিয়া ঝাঁপিয়ে পড়েছিল দীপ্তির ওপর ।

মা খুব বিরক্ত হয়ে বলেছিলেন, " চুপচাপ যাও বা চাপা দেওয়া যেত খবরটা, উনি প্রতিবাদী হয়ে সারা দেশ জানিয়ে এলেন। ওরে তোর বিয়ে দেব কি করে?"

 কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে তিনটে শয়তানকে পুলিশ জিপে তোলা হচ্ছে । এরপর দেখানো হবে দীপ্তির বয়ান । মিডিয়ার প্রশ্নের উত্তরে দীপ্তি জানিয়েছিল, দোষীরা শাস্তি পেলে সেটা হবে সমস্ত অত্যাচারিতা মেয়ের হয়ে তার নৈতিক জয়। কিন্তু একি! ওর কথা শোনা যাচ্ছে কিন্তু মুখটা ঝাপসা করে দিয়েছে কেন?

 মা ঠাকুর নমস্কার করে বললেন, " যাক বাবা, মুখটা দেখাচ্ছে না। অন্তত কিছুটা হলেও লজ্জার হাত থেকে বাঁচল মেয়েটা। "

দীপ্তির চোখে কিন্তু আগুন। ছুটে পাশের ঘরে গিয়ে ফোন করে ওই টিভি চ্যানেলের অফিসে। 

" আচ্ছা, আপনারা আমার মুখটা দেখাচ্ছেন না কেন? কি কারনে ওই জানোয়ারগুলোর মত আমাকেও মুখ লুকোতে হবে? লজ্জাটা আসলে কার?"

 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন