সময় বদলে যায় - সুমন সেনাপতি

 


নার্সিং নিয়ে পড়াশুনো শেষ হওয়ার কিছুদিন পর সুমনা পাকাপাকি ভাবে একটা হাসপাতালে নার্সের চাকরিটা পেল। অন্যান্য সবকিছু ঠিকঠাক হলেও শুধু একটু বেশি খাটুনি এইযা। তবে সুমনার যে মনের জোর আছে তাতে ওর পক্ষে পরিস্থিতিটা সামলে নেওয়া খুব একটা কঠিন নয়। এমনিতেই হাসপাতালে কাজের চাপ তার উপর এখন এই ডেঙ্গির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা কাজের চাপ আরোও বাড়িয়ে দিয়েছে।

এরকম একদিন হাসপাতালে সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনির পর বাড়ি ফিরে একটু বিশ্রাম নিচ্ছিল। হঠাৎ দরজায় টোকা পড়লো। সুমনার মা দরজা খুলে দেখেন, ও পাড়ার রাধিকা সেন বেশ চিন্তিত মুখে দাঁড়িয়ে আছে। সুমনার মা জিজ্ঞেস করে জানতে পারলেন, ওনাদের ছেলের খুব জ্বর এসেছে , ওনাদের পারিবারিক ডাক্তার বাইরে গেছে ; তাই উনি এসেছেন সুমনার কাছে । সুমনা যদি একটু গিয়ে ছেলেটা কে দেখে আসে সুমনা বেশ অবাকই হল, ওর নার্সিং পড়ার জন্য বেশ কিছু টাকার দরকার হয়েছিল তখন ওর বাবা এই রাধিকা সেনের স্বামী নিখিল সেনের কাছে যায়। কিন্তু নিখিল টাকা ধার দেনি উপরন্তু বলেছিলেন, "কি হবে মেয়েকে নার্সিং পড়িয়ে?"। কথাগুলো সুমনার মনে থাকা সত্ত্বেও ও গেল ওদের ছেলে  বুবাইকে দেখতে। গিয়ে দেখলো সাধারণ জ্বর , কয়েকটা ওষুধ খেলেই সেরে যাবে। ওদের বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় নিখিল সেন বললো " তোমার ভিজিটটা নিয়ে যাও " সুমনা বেশ জোর গলায় বলে উঠলো, "থাক কাকু লাগবে না। ওটা আপনি রেখে দিন, বুবাইকে আমার তরফ থেকে ফল কিনে দেবেন। চলি।"

নিখিল সেনের আত্ম-অহংকার সেদিন আর রইলো না;  বরং একটা চক্ষুলজ্জা থেকে গেল। এদিকে সুমনা এতক্ষন ক্লান্ত থাকলেও বেশ একটা আত্মতৃপ্তিগর্ব নিয়ে বাড়ি ফিরে এল

 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন