ডাক্তারি বাসর - কৃপাণ মৈত্র


 
সুন্দর করে বাসর ঘর সাজানো হয়েছে। এত ফুলের সমারোহ, মনে হচ্ছে যেন একটা ফুলদানিতে একটা গোটা বাগান ঠেসে দেওয়া হয়েছে।

বৈরাগ‍্যর ডাক্তার বউ একেবারে পছন্দ ছিল না। কিন্তু ছোট বড় সকলের চাপে তাকে নতি স্বীকার করতে হয়েছে। 

বাসর ঘরের ভিড় সরলে ডাহুক বলে, ‘ডিসগাস্টিং। এত ফুল কেন! আমার তো দম বন্ধ হয়ে আসছে। এখনই সব ফুল সরাও

বৈরাগ্য বাধ্য ছেলের মত সব ফুল ঘরের এক কোণে জমা করল

-  সব জানালা খুলে দাও

বৈরাগ‍্যর দৃষ্টিতে বিস্ময়‌। বাসর ঘরের প্রতি অনেকের বিশেষ কৌতূহল থাকেবৈরাগ্য সব জানালা খুলে ডাক্তার বউয়ের পাশে গিয়ে বসল। সে ডাহুকের হাত নিয়ে খেলতে খেলতে ডাহুককে বুকে টেনে নিল। ডাহুক বাধা দিল না। সে বৈরাগ‍্যর বুকে মাথা রেখে তার বাম হাতের নাড়ীটা চেপে ধরল

তারপর তড়িতাহতের মতো ছিটকে সরে গিয়ে বলল, ‘তোমার হার্টবিট এত দ্রুত কেন! তোমার যে কার্ডিয়াক প্রবলেম আছে, সেটা তো জানাওনি

 বৈরাগ্য দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিছানা থেকে উঠে পড়ল

 -      কী হলো!

 -      বাথরুমে যাব

 -      এইতো এলে। তোমার গণেরিয়া বা ডায়াবেটিস নেই তো! এসব রিপোর্টগুলোও দেখা দরকার ছিল। এই ,ঠিক করে বলতো তোমার আর কী কী সমস্যা আছে?’

বৈরাগ্য রাগে চোয়াল শক্ত করে একটা বালিশ টেনে নিয়ে সোফায় ছুঁড়ে দিয়ে বলে, সমস্যা তোমাকে নিয়ে। তোমাকে কোন ভালো সায়কায়ট্রিস্ট দেখাতে হবে

ডাহুক বৈরাগ‍্যর দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলে, ‘সে তোমার মাথার চুল থেকে পা পর্যন্ত পরীক্ষা করার পর ভাবা যাবে

বৈরাগ্য বাসর রাতের লেলিহান অঙ্গার বুকের মধ্যে চেপে রেখে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আলো নিভিয়ে দিল। ভবিষ্যৎ বিচারাধীন


 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন