আকর্ষণ - রঞ্জনা বসু

 


শ্যামলী কে কাছে টেনে নেয় দয়া। তার চওড়া বুকে শ্যামলী নিজেকে মেলে ধরে। গুমটি ঘরের অন্ধকারেও শ্যামলীর চোখে যেন আলোর সমারোহ। দয়া সেই স্পর্শ সুখ মেখে নিতে নিতে ভুলে যায় যে ঘরে তার বউ আছে। 

সাত সকালে বাজার থেকে কিছু চুনোমাছ এনে দাওয়ায় নামিয়ে রেখে আসছি বলে এখনও ফেরেনি ... পথের দিকে চেয়ে চেয়ে পূবালীর দুই চোখ অন্ধ হয়ে যায়। দয়া যে তার কথা ভাবে না তাতে কোনো সন্দেহ নেই। প্রতিবেশী নিতাই সুযোগ খোঁজে। 

এদিকে অন্ধকার সয়ে যেতেই শ্যামলীর মুখটা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে দয়া। ওর শরীর, মনের চাহিদা একমাত্র শ্যামলীই বোঝে। দিদি পূবালীর মতন বরফ ঠান্ডা পাথর সে নয়। শ্যামলীর যুবতী শরীর, মুখের লাবণ্য আর নিপুণ বাঁধন দয়াকে যেন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়েছে। 

পাখিদের ঘুম ভাঙছে। নির্ঘুম রাত শেষে এঁটো বাসনগুলো নিয়ে পুকুর পাড়ে আসতেই দেখতে পেল নিতাই দাঁড়িয়ে... পূবালী উল্টোদিকে ঘুরে বসে। 


--- বলি, দেমাকে যে মাটিতে পা পড়ে না। এদিকে সোয়ামী তো পড়ে থাকে অন্যখানে। 

দু'চোখে আগুন নিয়ে পুকুর ঘাট থেকে ফিরে আসে পূবালী। এক কাপড়ে বেরিয়ে পড়ে। হন হন করে হাঁটা লাগায়। গুমটি ঘরের কাছে এসে দেখে, ভোরের আলো এসে পড়েছে দুটি মুখের ওপর। একজন তার স্বামী। অন্যজন তারই মায়ের পেটের বোন! সন্দেহ করেছিল অনেক আগেই! এবার চাক্ষুষ হল। ওরা দুজনেও ধড়ফড় করে উঠে বসেছে... 

তীব্র উত্তেজনা আর বিষাদের পর এক ধরনের নৈঃশব্দ আসে। পূবালীর শরীরে এখন আর রাগ নেই। সকরুণ দৃষ্টিতে সে তখন ওদের দিকে তাকিয়ে। ভালোবাসা হীনতায় নিজেকে বিছিয়ে দিতে তার আর একটুও ভালো লাগছে না। 

 

 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন