ভুবনমোহনকান্তি ভট্টাচার্য স্যারকে আমরা ভুবন স্যার
নামে ডাকি। বয়স হয়ে গেছে স্যারের। অগাধ পাণ্ডিত্যের অধিকারী। গ্রামের বিচার-সালিশে
নিমন্ত্রণ পান, পারিবারিক
অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ পান, পূজা-অর্চনা
অনুষ্ঠানে প্রধান কর্তা হন, সাংস্কৃতিক
অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারক হন।
একবার কলেজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের বিচারকার্যের
প্রধান আসন অলংকরণ করে বসেছিলেন তিনি। নৃত্যানুষ্ঠানে যোগদান করেছিলো বেশ কয়েকজন
ছাত্রী। খুব সাদামাটা সাদা শাড়ি পড়ে নেচেছিলো শর্মিলা। সাজগোজের মধ্যে ঠোঁটে একটু
লিপষ্টিক দিয়েছিলো খালি। আর বোষ্টমী সেজেছিলো লাল শাড়িতে, মেকআপ
করেছিলো হাজার পাঁচেক টাকা খরচ করে; দেখতেও লাগছিল দেবী লক্ষ্মীর মতো। এমনিতেই সুন্দর, সাজগোজের
কারণে আরও সুন্দর লাগছিলো তাকে। শর্মিলার চেয়ে নেচেছিলোও সে শতগুণ ভালো। কিন্তু
ভুবন স্যার শর্মিলার নাচই সুন্দর হয়েছে বলে রায় দিয়েছিলেন। প্রথম পুরস্কারটা শর্মিলার
গলাতেই উঠেছিল। বয়স্ক মানুষের পছন্দ বেশি জাজ্বল্যে না গিয়ে সাদামাটা সাজগোজের
দিকেই গিয়েছিল বলে কেউ কেউ বলাবলিও করছিল।
কলেজ ছুটি থাকে না বলে ভুবন স্যার ছেলের জন্য মেয়ে খুঁজতে যেতে পারেন না। একদিন ছুটি নিয়ে তিনটে মেয়ে দেখবেন বলে বের হয়ে পড়লেন পরিবারের কয়েকজনের সাথে। ঘটকের সাথে প্রথম মেয়ের বাড়ি গেলেন। গিয়ে দেখেন শর্মিলা। অল্প একটু সেজেছে। খোলা চুলে তেল না জল দিয়েছে বোঝা দায়। ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক।
এরপর দ্বিতীয় মেয়েটিকে দেখতে গেলেন। মেয়েটির কথা-বার্তা মিষ্টি। ছিপছিপে গড়নের। তেমন সাজেনি। চুলে একটু বিনুনি করেছে। চোখে একটু কাজল দিয়েছে। ভুবন স্যারের যেমন সাদামাটা পছন্দ ঠিক তেমনই। দেখে চুপচাপ ভুবন স্যার পরবর্তী মেয়েটিকে দেখার উদ্দেশ্যে বের হয়ে পড়লেন।
তৃতীয় মেয়ের বাড়ি পৌঁছে গেলেন। গিয়ে দেখেন বোষ্টমী ।
অনেক সেজেছে, হাজার
কুড়ি টাকা তো খরচ করেছেই। ভুবন স্যার ছেলের জন্য বোষ্টমীকে পছন্দ করলেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন