নববর্ষের বিশেষ ব্যঞ্জন - বাণী মিত্র



১লা বৈশাখ, নববর্ষ। বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ শুরু হয় বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই। ভেতো বাঙালি, পেটুক বাঙালি, ভোজন রসিকভোজন বিলাসী বাঙালি, অতিথি পরায়ন বাঙালি থেকে শুরু করেশুধু খেয়েই মোলোবাঙালি আহার সম্পর্কীয় যাবতীয় নিন্দা- গঞ্জনাচোখ রাঙানিকে কাঁচকলা দেখিয়ে নতুন বছরের প্রথম দিনেই আহার বিলাসে মত্ত হয়ে নতুন বছরকে আহ্বান করে উৎসব পালনে ব্যস্ত থাকেন। বাংলার ঘরে ঘরে নববর্ষের সূচনায় উৎসব অনুষ্ঠানের সাথে রসনা বিলাস নিয়েও মাতামাতি চলতে থাকে। প্রবাসী বাঙালিরা অন্যান্য অনুষ্ঠানে যোগদান করতে অসমর্থ হলেও আহার ব্যঞ্জনে পিছিয়ে থাকেন না।

নতুন বছরের আহ্বানে বাংলার বিভিন্ন বনেদী বাড়িতেও আহার ব্যঞ্জনের প্রাচুর্যের মধ্যে নতুনত্ব দেখা যায়। এবারের নববর্ষে পাতে থাক এমনই কিছু বনেদী বাড়ির বিশেষ পদ।

 

সাবর্ণ রায়চৌধুরী বাড়ির পুঁই চিংড়িঃ




 উপকরণঃ

  • পুঁই শাক ৫০০ গ্রাম,
  • চিংড়ি ( মাঝারি মাপের) – ১৫ টি
  • আলু ( ছোট টুকরো করে কাটা)  ২০০ গ্রাম
  • কুমড়ো ( ছোট টুকরো করে কাটা)  ২০০ গ্রাম
  • ঝিঙে ( ছোট টুকরো করে কাটা)  ২০০ গ্রাম
  • পাঁচ ফোড়ন চামচ
  • সর্ষে তেল৫০ মিলি
  • কাঁচা লঙ্কা /,
  • হলুদ গুঁড়োপরিমান মত,
  • লঙ্কা গুঁড়ো - পরিমান মত,
  • নুন স্বাদ অনুযায়ী
  • চিনি - স্বাদ অনুযায়ী

প্রণালীঃ
  • রান্না শুরুর আগে পুঁইশাক ভালো করে ধুয়ে কেটে নিতে হবেপাতা ছাড়িয়ে নিতে হবে। এই রান্নায় শুধু পাতা নরম ডাঁটাই ব্যবহৃত হবে।
  • চিংড়ির সঙ্গে সামান্য হলুদ নুন মিশিয়ে তেল দিয়ে হালকা করে ভেজে তুলে রাখতে হবে
  • একটি কড়াইতে তেল গরম করে কাঁচা লঙ্কা পাঁচ ফোড়ন দিয়ে অল্প ভেজে নিয়ে তার মধ্যে আলু, কুমড়ো ঝিঙে মিশিয়ে দিতে হবে।
  • লঙ্কা গুঁড়ো, হলুদ, নুন দিয়ে কষাতে হবে। কিছুক্ষণ নেড়েচেড়ে তাতে পুঁইশাক দিয়ে ঢেকে দিতে হবেজল দেওয়ার প্রয়োজন নেই। শাকের থেকে  বেরোনো জল দিয়েই সবজি সেদ্ধ হয়ে যাবে। 
  • কিছুক্ষণ পড়ে পুঁইশাক সমেত অন্য সব সবজি সেদ্ধ হয়ে গেলে, তাতে ভেজে রাখা চিংড়ি মাছ দিয়ে কষাতে হবে
  • অল্প চিনি দিয়ে নামিয়ে দিতে হবে।    
     

 

চোর বাগান চ্যাটার্জি বাড়ির নিরামিষ চিংড়ি মালাইকারীঃ



 উপকরণঃ

  • গলদা চিংড়ি ( বড় মাপের )  ১৫ টা
  • নারকোল দুধ২০০ মিলি
  • দুধ১০০ মিলি
  • দই১০০ গ্রাম
  • আদা বাটা চা চামচ
  • তেজপাতা/
  • ছোট এলাচ/
  • দারচিনি ইঞ্চি
  • লবঙ্গ/
  • ঘী৫০ মিলি
  • সর্ষে তেল১০০ মিলি
  • কাশ্মীরি লঙ্কা গুঁড়ো চা চামচ
  •  নুন, হলুদ, চিনিপরিমাণ মত

 

প্রণালীঃ 

  • চিংড়ি মাছ ধুয়ে পরিষ্কার করে তেলে হালকা লাল রঙের করে ভেজে তুলে রাখতে হবে
  • মাছ ভাজার তেলেই ঘী দিয়ে তার মধ্যে তেজপাতা, লবঙ্গ, দারচিনি, এলাচ যোগ করে গন্ধ বার হওয়া অবধি ভাজতে হবে।
  • একটি ছোট পাত্রে দই, আদা বাটা, লঙ্কা গুঁড়ো, নুন হলুদ ভালো করে ফেটিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে। ঘী এর মধ্যে মিশিয়ে তেল ছাড়া অবধি কষাতে হবে।
  • আঁচ কমিয়ে দিয়ে দুধ নারকোলের দুধ মিশিয়ে কষাতে হবে।
  • চিংড়ি দিয়ে ঝোল শুকোনো অবধি অপেক্ষা করতে হবে। নামানোর আগে অল্প চিনি গরম মশলা গুঁড়ো মিশিয়ে নামাতে হবে। 
  

 ঠাকুরবাড়ির দুধ কাতলাঃ



 

উপকরণঃ

  •  কাতলা মাছের টুকরো – ৪ টি
  • দুধ ক্রিম – ৫০ মিলি
  • দুধ – ৫০ মিলি
  • আদার রস – ১ চামচ
  • গোটা গরম মশলা – পরিমাণ মত
  • তেজপাতা – ২ টি
  • সর্ষে তেল – ১০০ মিলি
  • ঘী – ২ চা চামচ
  • গরম মশলা গুঁড়ো, নুন ও চিনি  – পরিমাণ মত

 

প্রণালীঃ

  • মাছ ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নুন ও হলুদ মাখিয়ে সর্ষে তেলে লাল রঙের করে ভেজে নিতে হবে।
  • তেলে তেজপাতা ও গোটা গরম মশলা ভালো করে ভেজে নিয়ে আদার রস মিশিয়ে ২-৩ মিনিট কষাতে হবে।নুন ও চিনি যোগ করতে হবে। 
  • ভাজা মাছ মশলায় দিতে হবে। আঁচ কমিয়ে দুধ যোগ করতে হবে।
  • দুধ ও মশলা মিশে গেলে দুধ ক্রিম যোগ করে সাবধানে সব মশলা কষাতে হবে। প্রয়োজনে সামান্য জল দেওয়া যায়, তবে প্রয়োজন হয় না।
  • ৩- ৪ মিনিট কষানো হয়ে গেলে এর মধ্যে ঘী ও গরম মশলা গুঁড়ো মিশিয়ে নামিয়ে দিতে হবে।

চিত্র সৌজন্যঃ আন্তর্জাল  


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন