ইরার মনে সবসময়ই নতুন ভাবনার উদয় হয়। আসলে সে যে "লালন" নামক অনাথাশ্রমের ইনচার্জ। বলতে গেলে প্রায় শতাধিক বাচ্চার মা সে। না, গান্ধারীর মতো গর্ভে ধারণ করেনি অবশ্যই। সে অবিবাহিত। এই "লালন"ই তার সংসার আর এই অনাথ শিশুরাই তার সন্তান। আর তাদের ভালো রাখার জন্য, হাসিখুশি রাখার জন্য ও মানসিক বিকাশের জন্যই তার ভাবনা নিত্যদিন আর সেই ভাবনা থেকেই নতুন নতুন পরিকল্পনার উদ্ভব।
এমনই
এক পরিকল্পনা মাথায় আসতেই, সে
"লালনে"র বাকী সহযোগী তথা শিক্ষিকাদের সাথে বরাবরের মতোই তার পরিকল্পনার
কথা খুলে বলল, সবার
মতামত চাইল, তথা
অনুমোদন চাইল। বসে আঁকো প্রতিযোগিতা তো শিশুদের জন্য সর্বত্রই হয়, তাতে
অভিনবত্ব কিছু নেই। কিন্তু
বিষয় নির্বাচনটি সবাইকে ভাবালো। শিক্ষিকাদের মধ্যে দুজন তাই বলেই ফেলল,"ইরাদি, বিষয়
উন্মুক্ত রাখলে হয় না? আসলে
ওরা তো অনাথ, মাকে
কোনোদিন দেখেইনি, চেনেই
না। সেই মাকে কি করে আঁকবে ওরা? বিষয়টি স্পর্শকাতর নয়?"
ইরা বরাবরের মতো স্মিত হাসি বজায় রেখে বলল,"সেটাই
তো দেখার। তাই জন্যই তো বিষয় নির্বাচন করেছি। ওদের ভাবনার বিকাশ ঘটাতে চাই। ওদের
মনে মা বলতে কোন ছবি ভেসে ওঠে। তোমরা তো পড়াচ্ছো ওদের, প্রকৃতি
মা, বাংলা
মা, তাছাড়া
ওরা তোমাদেরও দেখছে, ওদের
মাতৃসম। দেখি না কার মনে কি ঠাঁই পেয়েছে মায়ের প্রতিমূর্তি রূপে।"
প্রতিযোগিতায়
সত্যিই বিভিন্ন রূপ ধরা পড়লো "মা"য়ের। কেউ বাংলা মাকে এঁকেছে, হাতে
শস্যভাণ্ডার, লাল
পেড়ে শাড়িতে। কেউ প্রকৃতি মাকে এঁকেছে নানা রঙে রঙিন করে। কেউ কল্পিত মাকে এঁকেছে।
কেউ বা ইরাকেই এঁকেছে নিজের মতো করে, লিখেছে,"ইরা মা।" তবে সব মায়ের আদলে একটা ভীষণ মিল, তা হলো
সব মায়ের মুখ হাসিতে উজ্জ্বল, স্নিগ্ধ, সৌম্য। শিশু মনে যেমনটা হয় মায়ের প্রতিমূর্তি।
চিত্র সৌজন্যঃ আন্তর্জাল
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন