আশ্চর্য অনুভব - আরিফ মজুমদার



দুপুরের পর থেকেই ঝরছিল বৃষ্টি। তড়িগড়ি করেই দিনের শেষ লঞ্চটা ধরতে হয়েছিল এদিন- বৃষ্টি থামবে সেই অপেক্ষায় কিছুটা সময় নষ্ট করে। চাঁদপুর লঞ্চঘাট থেকে তখন ছেড়ে যাচ্ছিল ঢাকাগামী লঞ্চটি। ঠিক যেন এক মিনিটের জন্যই লঞ্চটি হারাতে হত মাসউদকে। কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহ করে সে নিজের আসনে গিয়ে বসল। যাত্রীর সংখ্যা অনেক কম। লঞ্চের এক তৃতীয়াংশ বসার চেয়ারও খালি! ইতোমধ্যে ঘাট ছেড়ে মাঝ নদী বেয়ে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে লঞ্চটি। মাসউদের পাশের সিটের লোকটি বোধহয় লঞ্চে উঠেই ঘুমিয়ে পড়েছেন কিবা ঘুমের ভান ধরে আছেন। লোকটি ষাটোর্ধ্ব বয়সের। রোগা ও ভগ্নস্বাস্থ্য শরীর। মাসউদ কাঁধব্যাগটা সিটের ওপর রেখে ক্যামেরাটা হাতে নিয়ে নদী দেখছিল লঞ্চের দো-তলার রেলিংয়ে দাঁড়িয়ে। নদী পাড়ের কর্মব্যস্ত মানুষজনের কয়েকটা ছবিও তুলছে সে। তখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। নদীতে হিমেল বাতাস বইতে শুরু করেছে। আলো-আঁধারির এমন ক্ষণে কোথায়ও কোথায়ও নদী পাড়ের মানুষজনের নানামুখী ব্যস্ততাও চোখে পড়ছে। জেলেদের ইলিশ ধরার নৌকাও দেখা যাচ্ছে একটা-দুটা। মাসউদ কিছুক্ষণ পর নিজের আসনে ফিরে দেখে, পাশের সিটের বয়স্ক লোকটা একটা কালো হাতব্যাগ থেকে কাগজপত্রগুলো নেড়েচেড়ে দেখছেন। তিনি ভারী ফ্রেমের চশমায় মাসউদের দিকে একবার তাকিয়ে ধীর গলায় বললেন, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে একটা কাজ আছিল। কালকে কখন গেলে ভালো হয় কইতে পারেন, বাজান ?

মাসউদ তার দিকে তাকিয়ে জবাব দেয়, আপনি সকাল সকাল গেলেই ভালো হবে। লাঞ্চের আগেই হয়তো কাজটা সারতে পারবেন।

- ওহ, আচ্ছা। একটু সময় পর তিনি বললেন, আপনি বোধহয় ঢাকায় থাহেন ?

মাসউদ উনার মুখের দিকে ফের এক নজর চেয়ে বলল, চাচা, ঠিক বলেছেন। আমি ঢাকায়...। হাতের কাগজপত্র ব্যাগে রাখতে রাখতে তিনি বললেন, মেলাদিন পর ঢাকা যাইতাছি। বড় মেয়ের জামাই ঢাকায় থাকে। রামপুরায় চাউলের ব্যবসা করে। আইজ মেয়ের বাসায় যাইব। কালকে সকালে নিজের কাজে বাইর হইব। আপনি কি চাকরি করেন, বাজান ?

- আমি একটা পত্রিকায় কাজ করি, চাচা।

- পত্রিকায় কাজ করেন। সাংবাদিক...?

- জি¦ চাচা।

তিনি উৎফুল্ল ভঙ্গিতে বললেন, খুব ভালো কাজ। মহৎ কাজ। স্বাধীনের কালে দেশ-বিদেশের অনেক সাংবাদিকের ভূমিকা আছিল। আমার নাম জুনায়ের খান। দেশ স্বাধীনের পর মানুষজন সম্মান কইরা ডাহে- মুক্তিযোদ্ধা জুনায়ের খান। মুক্তিযোদ্ধা শব্দটা শুনতে আমার ভীষণ আমোদ লাগে। গর্ব বোধহয়, বাজান!... মাসউদ উনার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, চাচা, আপনি একজন মুক্তিযোদ্ধা জেনে আমারও ভালো লাগছে। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার সুযোগ তো আমার হয়নি। আমার জন্মও হয়নি তখন। তবে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে লেখা বইগুলো পড়তে আমার ভালো লাগে। জুনায়ের খান খুশি গলায় বললেন, খুব ভালো, বাজান। মুক্তিযুদ্ধের অনেক ঘটনা তো আমার জানা। নিজের চোক্ষে দেখা কত-কত ঘটনা! আহা! কত তরতাজা মুক্তিযোদ্ধা গুলি খাইয়া মরল গো! আইজকাল কেউ এইসব ঘটনা শুনতেই চায় না, বাজান। কত মানুষের জানের বদলে, কত মা-বোইনের ইজ্জতের বদলে যে দেশটা স্বাধীন হইল, মানুষজন তা ভুইলা যাইতাছে কী! এখন তো সবাই শুধু অর্থের পিছন লাগছে গো! আমাগো মুখে মুক্তিযুদ্ধের সেসব কথা কেউ শুনতেও আগ্রহ পায় না! নিজের দেখা ঘটনাগুলা, দিনগুলা নিজের মধ্যেই চাইপা রাখছি। বই লেখার অভ্যাস নাই, বাজান। নইলে মুক্তিযুদ্ধের সত্য ঘটনাগুলা দিয়া একখানা বই লেইখা যাইতে পারতাম!...

মাসউদ আগ্রহবোধ নিয়ে বলল, চাচা, আপনার দেখা কিছু ঘটনা আমাকে যদি বলতেন, আমি ডাইরিতে ...। মাসউদের কথায় বৃদ্ধ মানুষটা খুব তৃপ্তবোধ করলেন। চোখ থেকে ভারী ফ্রেমের চশমাটা হাতে নিয়ে উদাস গলায় বললেন, জীবনের মায়া ত্যাগ কইরা গেছিলাম যুদ্ধে, বাজান। দেশ স্বাধীন হইছে অনেক দিন চইলাও গেছে। আমার সহযোদ্ধা ছিলেন সৈয়দ আলী। কিছুদিন আগে মইরাও গেলেন। বড় করুণ মৃত্যু! ট্রেনের নিচে কাটা পইরা মরছেন। যুদ্ধের সময় আমি আর সৈয়দ আলী একসাথে ভারতে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়াছি। মৃত্যুর পর কেউ কেউ বলতাছে, সৈয়দ আলী নাকি আত্মহত্যা কইরাছেন। আগেও তিনি ট্রেনের নিচে আত্মহত্যার চেষ্টা কইরাছেন। স্থানীয় লোকজন তাকে বাঁচিয়া রাখছিল। একটু থেমে বড় করে শ্বাস নিয়ে জুনায়ের খান বললেন, সৈয়দ আলী মানুষটা আমার মতোন অবহেলায় বাঁইচা আছিল, বাজান!  মাঝেমধ্যে আমার সাথে দেখাও হইত। মুক্তিযুদ্ধের সেইসব দিন নিয়া মেলা গল্প হইত। দীর্ঘদিন নানা ব্যরামে ভুগছিলেন। বিভিন্ন হাসপাতালে মেলা টাকা খরচ কইরা ব্যরামের চিকিৎসা করাইছেন। ব্যরামের চিকিৎসা করাইতে গিয়া অনেক টাকা ঋণও নিয়াছিলেন শুনেছি। মুক্তিযোদ্ধা ভাতা দিয়া কোনোমতে চলত তার সংসার। ভাতার টাকার বেশির ভাগই চইলা যাইত ঋণের মাসিক কিস্তিতে। টাকার অভাবে ঠিকমতো চিকিৎসাও করাইতে পারতেন না। শেষকালে ঋণে জর্জরিত হইয়া পড়েছিলেন। সৈয়দ আলীর দুই ছেলে এক মেয়ে। ছেলে দুটা দিনমজুর। মেয়েটার বিয়া হইছিল। সংসার টিকে নাই। বড় কষ্টের জীবন মেয়েটার। মানুষটা মরার পর মেয়ের কান্নাকাটিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দিয়া দিছে পুলিশ। থানায় অপমৃত্যুর মামলাও হইছে। সৈয়দ আলী চইলা গেছেন। আমি আজও বাঁইচা আছি, বাজান। জীবনটাও শেষ হইয়া আইতাছে। আইজকাল যুদ্ধের দিনগুলা খুব স্পষ্ট মনে পড়তাছে। কত ঘটনা! আহা! কত কান্না! যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী আমার চাচাকে গ্রামের হাটে গুলি কইরা মারছে। আমার তখন যৌবনকাল। মুক্তিযুদ্ধে আমার অংশগ্রহণ ঠেকাইতে গ্রামের রাজাকাররা উইঠাপইড়া লাগছিল। তাদের প্ররোচনায় পাকিস্তানি বাহিনীর টার্গেটে পরিণত হইয়া যাই। আমারে হত্যা করার লাইগা পাকিস্তানি সেনারা যখন-তখন গ্রামে ঢুইকা খুঁজত। চাচাকে হত্যার পর মনের ক্ষোভে আমি ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ঢালুতে মুক্তিযোদ্ধাদের সাব-সেক্টরে প্রশিক্ষণ নিতে গোপনে চইলা যাই। সেখানে কয়েকটা দিন প্রশিক্ষণ নিয়া যুদ্ধে যেতে চাইছিলাম। কিন্তু প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে রান্নার লোক না থাকায় আমাকে সাব-সেক্টরে বাবুর্চির দায়িত্ব পালন করতে হইছে। রান্নার হাত ভালো ছিল আমার। গ্রামে বিয়া বাড়ির বাবুর্চির কাজ করতাম। সাব-সেক্টরে আমি প্রত্যেক দিন ভোরে উইঠা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রুটি-চা বানাইতাম। দুপুরে আর রাইতে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ভাত-সবজি রান্না করতাম। নিজের কাজের ফাঁকে ফাঁকে অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণেও যাই। বিভিন্ন যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের গোলাবারুদ সরবরাহ করতাম। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতার কথা জাইনা যায় গ্রামের রাজাকাররা। বাবাকে হত্যার হুমকি-ধামকি দেওয়া শুরু করে। বিভিন্ন মাধ্যমে মা-বাবার অসহায়ত্বের কথা জাইনাও বাড়িতে ফেইরা আসি নাই দেশের স্বার্থে। স্বাধীনতার পর যখন দেশে ফিরলাম। জীবিকার প্রয়োজনে ঢাকায় নানা প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তাকর্মীর চাকরি করেছি তখন। পরে গ্রামে চইলা আসি। গ্রামের হাটে ব্যবসা শুরু করি। কিন্তু আমার দুঃখ তো আইজও গেল না, বাজান। মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাইলাম না! বছরের পর বছর কতজনের দ্বারে দ্বারে ঘুরতাছি। মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় আমার নামটা তোলার জন্য অনেকের কাছেই অনুরোধ করতাছি। কয়েকটা দিন আগেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাইতে আবেদন করেছি। অনেক বয়স হইছে, বাজান। দুই পায়ের হাড় ক্ষয় হইয়া গেছে। হাঁটাচলা করতে খুব কষ্ট হইতাছে। মাসে অনেক টাকার ওষুধ কিনতে হয়। গ্রামের বাজারে চাউলের ব্যবসা কইরা যা আয়, তা দিয়া কোনো মতে বাঁইচা আছি। জীবনের শেষকালেও যদি স্বীকৃতিটা পাইতাম, শান্তিতে মরতে পারতাম!... কথাগুলো বলতে বলতে জুনায়ের খান ডান হাতের উল্টা পিটে চোখের পানি মুছলেন। মুক্তিযোদ্ধা জুনায়ের খানের কথাগুলো ডাইরিতে লিখে নেয় মাসউদ। তাঁর বাড়ির নাম-ঠিকানাও একটা ভিজিটিং কার্ডের উল্টা পাশে লিখে রাখে। ইতিমধ্যে লঞ্চ সদরঘাট টার্মিনালে ভিড়েছে। নামতে শুরু করেছে মানুষজন।

কর্মব্যস্ততায় কয়েকটা সপ্তাহ কেটে যায় মাসউদের। মুক্তিযোদ্ধা জুনায়ের খানের বাড়িতে যেতে তার খুব ইচ্ছে করছিল। মুক্তিযুদ্ধকালীন আরও কিছু ঘটনা জানতে চেয়েছিল। তারপর মাসখানিক পর। মুক্তিযোদ্ধা জুনায়ের খানের গ্রামের বাড়ি যায় মাসউদ। বাড়িতে ঢুকেই একজন তরুণীকে এগিয়ে আসতে দেখল। লাজুক গলায় স্লামুআলাইকুম বলে মেয়েটা জানতে চাইল, আপনি কে? নিজের পরিচয় দেয় মাসউদ। পরিচয় জেনে মেয়েটা আগ্রহভরা নয়নে তাকায়। মেয়েটার মুখের দিকে নজর দেয় মাসউদ। বয়স তেইশ-ব্বিশ বা আরো কমও হতে পারে। চেহারা সুন্দর বলা চলে। সরল ধরনের মুখ। একটা টিপ কপালে। টিপটা ঠিক কপালের মাঝখানে দেওয়া হয়নি। যদিও গ্রামের মেয়েরা টিপ দেওয়ার ব্যাপারে খুব সচেতন। কপালের টিপ একটু এদিক-ওদিক হলেই নাকি জীবনে দুঃখ নেমে আসে! এই মেয়েটা কপালে টিপ দেওয়ার ব্যাপারে গ্রাম্য কুসংস্কারটা জানে না হয়তো! মাথার চুল ওড়নায় ঢাকা। চোখে কাজলও দিয়েছে। গায়ের রঙ সাদা বলে চোখের কাজলটা নজর কাড়ছে। কেউ কেউ বলে ফর্সা মেয়েদের চোখে কাজল নাকি খুব একটা ভালো দেখায় না! কিন্তু এই মেয়েটাকে তো চমৎকার লাগছে! মাসউদ নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে দেখে মেয়েটা জানতে চায়, আপনি কি কাজে আসছেন ? কথাটা এমন ভাবে বলল যেন খুব বিরক্তবোধ করছে মেয়েটা।

মাসউদ ধীর গলায় বলল, আমি মুক্তিযোদ্ধা জুনায়ের খানের খোঁজে এসেছি।

মেয়েটা আহত গলায় বলল, মুক্তিযোদ্ধা জুনায়ের খান, মানে আমার দাদু তো বাঁইচা নাই। সপ্তাহখানিক আগেই চইলা গেছেন।

- চইলা গেছেন মানে ! মাসউদ অবাক গলায় বলল।

মেয়েটা বলল, চইলা গেছেন মানে, তিনি মইরা গেছেন!

মাসউদ অস্তির গলায় বলল, মুক্তিযোদ্ধা জুনায়ের খান মারা গেছেন!

মেয়েটা দৃঢ় গলায় বলল, জি¦। আমি তো তাই কইতাছি! আরো জানতে চান? তিনি চিকিৎসায় ছাড়া মইরা গেছেন। ব্রেইন স্ট্রোক করেছিলেন। কেউ উনার চিকিৎসায় আগাইয়া আসে নাই। বড় অসহায় ভাবে মইরা গেছেন। মেয়েটার চোখে পানি চলে আসে। মাসউদ হতবাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে দেখে মেয়েটা বলল, কী ভাবতাছেন ? উনাকে নিয়া আরো কিছু জানতে চান ? উনাকে নিয়া পত্রিকায় নিউজ করতে চান ?... কথাগুলো বলতে বলেতে মেয়েটা শব্দ করেই কেঁদে দেয়।

মাসউদ ভেজা গলায় বলে, না, না। আমি নিউজ করতে আসি নি। উঁনার কবরটা কোনদিকে একটু বলবেন, প্লিজ। উঁনার কবরের পাশে কিছুক্ষণ দাঁড়াতে ইচ্ছে করছে। মাসউদের দিকে চেয়ে মেয়েটা বলল, আসেন, এইদিকে আসেন।

গ্রামের কাঁচা রাস্তার পাশে ছোট্ট গোরস্থান। তিন-চারটার মতো কবর। মুক্তিযোদ্ধা জুনায়ের খানের নয়া কবরের পাশে দাঁড়িয়ে হাতের ডাইরির পাতা উল্টায় মাসউদ। সেদিনের কথাগুলোর অসমাপ্ত লাইনে চোখ আটকে যায়। মাসউদের দুকানে কথাগুলো বাজছে যেন! দুচোখ জলে ভরে উঠে। চোখ তুলে তাকিয়ে দেখে একটু দূরে দাঁড়িয়ে কৌতুহলী নয়নে চেয়ে আছে মেয়েটা। হঠাৎ বজ্রসহ ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি শুরু হয়। হয়তো আকাশের গর্জনে মেয়েটা দ্রুত পায়ে বাড়ির দিকে ফিরে যায়। কিন্তু মাসউদের বুকের ভেতর আকাশের গর্জনের চেয়ে আরও কঠিন গর্জন। বৃষ্টির ফোঁটার সাথে চোখের জল মিশে যায়। গুড়িগুড়ি বৃষ্টিতে মেঠোপথে সামনে হাঁটতে থাকে মাসউদ। কিছু দূর এগিয়ে পিছন ফিরে দেখে গোরস্থানের কাছটায় যেন দাঁড়িয়ে আছেন মুক্তিযোদ্ধা জুনায়ের খান! দৃষ্টিভ্রমে থমকে দাঁড়ায় মাসউদ। তার বুকের মাঝখানটা কেমন মোছড়ে উঠে! গোরস্থানের দিকে ফিরে যাবে কিনা ভাবছে...। ততোক্ষণে বৃষ্টি থেমে যায়। একটা দুধেল গাভি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা জুনায়ের খানের বাড়ির দিকে যাচ্ছে একজন। চেহারায় অনেকটা মুক্তিযোদ্ধা জুনায়ের খানের মিল! সহোদর ভাই হয়তো। ফের গোরস্থানের দিকে চোখ ফিরিয়ে দেখে, ছাতা হাতে দাঁড়িয়ে আছে তরুণী মেয়েটা। তখন বৃষ্টিভেজা নরম রোদের আমেজ।

মেয়েটার দিক থেকে চোখ সরিয়ে সামনে পা বাড়ায় মাসউদ। কেমন একটা চাপা অস্থিরতা বাড়তে থাকে তার বুকের ভেতর। খুব আশ্চর্য কিছু একটা অনুভব হচ্ছে; সঙ্গে যে কেউ হাঁটছে যেন..., মাসউদ এদিক-ওদিক চোখ ফিরায়- কখনো অনুভূত হয় তরুণী মেয়েটা কখনো বা অনুভূত হয় মুক্তিযোদ্ধা জুনায়ের খান!

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন