মেয়েবেলা - মৌপ্রিয়া কুন্ডু দাস



মেয়েবেলার পুতুলখেলার

          খেলনা বাটির দিন,

স্মৃতির পাতায় যত্নে মোড়া

          আজও অমলিন।

 

পুতুল বিয়ে, লুচি ভাজা

         নানান রকম খেলা,

মনের কোণে আছে গোপনে

          মিষ্টি মেয়েবেলা।

 

বিকেল বেলায় এক দৌড়ে

        খেলার মাঠে যাওয়া,

এলাটিং বেলাটিং, চু কিত কিতে

        মুখরিত মেয়েবেলা।

 

গোধূলি বেলায় শাঁখের আওয়াজ

          হুড়মুড়িয়ে বাড়ি,

 হাত পা ধুতে ভাই বোনেতে

           খুনসুটি মারামারি।

 

মায়ের বকায় মুখটি বুজে

        আড়ালে ভেংচি কাটা,

মেয়েবেলার সুখ সাগরে

         জোয়ার ভাটায় ভাসা।

 

পল্লী গ্রামের সন্ধ্যেগুলোয়

      হ্যারিকেন নিয়ে হাতে,

 ভাই আর আমি একসাথে

        যেতাম পাঠশালাতে।

 

ঝগড়াঝাঁটি, মারামারির

        বদলা নিতে হলে,

ফেরার পথে একলা ফেলে

         যেতাম পালিয়ে।

 

একটু পরেই ভাইয়ের মুখ

          পড়ত যখন মনে,

এক ছুট্টে যেতাম আমি

        ভাইয়েরই সন্ধানে।

 

গিয়ে দেখতাম ভাইটি

         আমার একলাটি দাঁড়িয়ে,

চোখের জলে কচি মুখখানি

          যাচ্ছে তখন ভেসে।

 

বুকের ভেতর স্নেহের ভার

          উঠতো তখন বেড়ে,

ছোট্ট ভাইকে বুকের মাঝে

           নিতাম জড়িয়ে।

 

তারপরে আরও কতো শত কথা

          মনের মাঝে জমা,

ভাইটি কখন হারিয়ে গেলো

          হয়নি চাওয়া ক্ষমা।

 

কাজলা দিদি, অপু দুর্গার

          গল্প মিথ্যে করে,

রইলাম আমি, ভাইটি আমার

           কোথায় গেলো চলে।

 

অনেক বছর পেরিয়ে এখন

           জীবন শেষের ক্ষণে,

অলস দুপুরে আলতো ঘুমে

          ভাইকে পড়ে মনে।

 

আজও মনে গাঁথা ভাইয়ের সাথে

          সকল ছেলেখেলা,

ভাইয়ের রঙে রঙিন আমার

           মিষ্টি মেয়েবেলা।

 


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন