ব্লক - বর্ণালী ভৌমিক দে

 



রেডি হয়ে ড্রাইভারকে আসার জন্য ফোন করেই মিতালী মুখবই দেখতে বসল। একবার ঘুরে এলো সৌভিকের প্রোফাইলটাতে। ব্যস্ত ডাক্তার মিতালীর মনে পড়লো ত্রিশ বছর আগে বাবা মায়ের কিছু কথোপকথন

বাবা হতাশার সুরে মাকে বলেছিলেন,"সৌভিকের বাবাকে আজ বলেছিলাম আমার মেয়েকে তুমি নেবে? আমার শরীরটা ভালো না"

কি বললেন দাদা?" উদ্বিগ্ন মুখে জানতে চেয়েছিল মা

"এক লাখ টাকা চাইছে। আমার পক্ষে এত টাকা দেওয়া সম্ভব নয়।"

বাবা কিছুদিন পরেই মারা যান ক্যান্সারে। মিতালী অজগ্রাম থেকে চলে আসে এই শহরে মামার বাড়ি। তারপর অনেক কষ্টের পথ পার করেছে মিতালী। আজ বড় ডাক্তার ও, বিয়ে হয়েছে ডাক্তারের সাথেই। দুটি ফুটফুটে ছেলে নিয়ে সুখের সংসার। 

সৌভিকের প্রোফাইলটা খুঁজে পাওয়ার পর টুকটাক কথা চলতো ওদের। সৌভিক সচ্ছল হলেও মিতালী জীবনে এগিয়ে গেছে অনেকদুর। অনেক দিন পর সৌভিককে অন দেখে মিতালী ম্যাসেঞ্জারে লেখে,"কেমন আছো?”

"ভালোই। তোমার এত ঐশ্বর্য, এত ভালো আছ দেখে ভালো লাগে। সুখে থেকো"

"ভাগ্যিস এক লাখ টাকার জন্য আমার স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছিল, তাই এতসব হল"

যদিও মিতালী যা চেয়েছিল তা গোপন রেখেই আহত সাপিনির মতো বিষ ঢেলে দিল খানিক

"তোমাকে দেখলে আমার নিজেকে খুব ছোট মনে হয়, আফসোস হয়, করুণা হয় নিজের ওপর।"

গাড়ী চলে আসায় মিতালী ফোন বন্ধ করে হাসপাতালের পথে রওনা দেয়, O.T. আছে। কাজ শেষে আবার মুঠোফোনে সৌভিককে খোঁজে কিন্তূ প্রোফাইলটা আর খুঁজে পায় না। ব্লক করেছে সৌভিক। মিতালী মুচকি হেসে ভাবে কিছু কিছু ব্লকে জিতে যাওয়ার কাহিনী লুকিয়ে থাকে।"

 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন