বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ - দেবাংশু সরকার

 

ক্লাবের ছেলেরা এবার একঘেয়েমিতে ভুগতে শুরু করেছে। অনেক দিন আগে কালী পুজো হয়ে গেছে। বেশ আনন্দ হয়েছিল। কয়েক মাস আগে সরস্বতী পুজোও হয়ে গেছে। এখন কোনো প্রোগ্রাম নেই। রোজ একঘেয়ে তাস, ক্যারাম খেলতে কার ভালো লাগে? বেশ গরমও পড়েছে। দিনে দিনে ক্লাব ঘরে সদস্যদের আসা কমে যাচ্ছে।    


ব্যাপারটা মোটেই ভালো লাগছে না ক্লাব সেক্রেটারি প্রবীরের। ক্লাব এরকম ফাঁকা থাকলে দেখতে খারাপ লাগে। কিন্তু কোনো আকর্ষণ না থাকলে ক্লাবের ছেলেরা রোজ আসবে কেন? অতব তাদের এনগেজ করতে হবে। উদ্দীপনা বাড়াতে হবে। তবেই ক্লাব জমজমাট হয়ে উঠবে।   

 

একটু চিন্তা করে প্রবীর একটা মিটিং ডাকলো এবং প্রস্তাব দিল, চুপচাপ বসে না থেকে ক্লাবে একটা লটারি খেলার ব্যবস্থা করা হোক। মজাও হবে। ক্লাবের ফান্ডে কিছু টাকাও আসবে। 

 

হৈ হৈ করে লটারির তোড়জোড় শুরু হল। টোটোতে মাইক লাগিয়ে প্রচার শুরু হল। ক্লাবের ছেলেরা টোটোতে চড়ে ঘুরে ঘুরে প্রচার করছে, "প্রথম পুরস্কার বাইক, দ্বিতীয় পুরস্কার স্কুটি, তৃতীয় পুরস্কার ..."। প্রচারের মাঝে মাঝে প্রখ্যাত ব্যান্ডের গান বাজছে - "গাড়ি চলে না, চলে না..."। 

জোর কদমে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। এলাকার সবাই কিনছেন। কিন্তু পাঁচু খুড়ো মুখ ঘুরিয়ে রয়েছেন। একটা টিকিটও কেনেন নি!

 

ক্লাবের ছেলেরা বেশ বিরক্ত পাঁচু খুড়োর ওপর। সুমন বলেই ফেললো, "খুড়ো তুমি সিগারেট খাও না, লটারির টিকিটও কাটছ না। এত টাকা কি করবে?"

- "আমি সিগারেট খাই না কারন সেখানে আছে বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ - ধুমপান স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর

- "আর লটারিতে?"

- "এখানেও তাই। ঐ যে গান হচ্ছে - 'গাড়ি চলে না'তাহলে অচল গাড়ির লোভে লটারির টিকিট কিনব কেন?"  

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন