প্রদ্যোত হাওড়া গ্রামীণ পোষ্ট অফিসে চাকুরি করে। প্রতিদিন তাই বাসে করে খড়গপুর রেলস্টেশন যায়। তারপর সেখান থেকে ট্রেন ধরে হাওড়া যায়। শীত গ্রীষ্ম বর্ষা সব দিন তার চোখে সানগ্লাসটা লাগানো থাকে। তাই দেখে রেলস্টেশনের চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দেওয়া মারুতির ড্রাইভারগুলো খুব হাসাহাসি করে ও মাঝে মাঝে টিটকিরিও দেয়।
একজন ড্রাইভার বলে, "দেখছিস, সরকারী অফিসারদের ঠাটবাট। চোখে সানগ্লাস পরে স্টাইল মারছে।" অপর জন ড্রাইভার তাই শুনে হো হো করে হাসে। আবার কখনো কখনো শিষ মারে।
এপ্রিল
মাস। তাই কাজের চাপটাও খুব বেশী। প্রদ্যোতের সেদিন অফিস থেকে বেরোতে দেরি হয়ে গেল। হাওড়া স্টেশনে আসতেই
সন্ধ্যা হয়ে গেল। তবে একদিকে ভালো হল। ট্রেনের জানলার ধারে সিট পেয়ে গেছে। বেশ
হাওয়া খেতে খেতে ফিরছে। বাইরে তখন গাঢ় অন্ধকার। মাঝে মাঝে স্টেশনে গাড়ি থামছে আর
লোক ওঠা নামা করছে। অবশেষে প্রদ্যোত খড়গপুরে নামলো। কিন্তু
ততক্ষণে শেষ বাসটা ছেড়ে চলে গেছে। প্রদ্যোত মোবাইলটা বের করে
দেখে, তখন সাড়ে ন’টা।
অত রাতে
ক’জন ড্রাইভার
চায়ের দোকানে বসে তাস খেলছে। প্রদ্যোত তাদের কাছে এগিয়ে গিয়ে একটা মারুতি গাড়ি
ভাড়া করলো। ড্রাইভারদের মধ্যে থেকে একজন অতি উৎসাহী ড্রাইভার বলল, "বাবুমশাই, এখন রাত হয়ে গেছে। সানগ্লাসটা
খুলে ফেলুন। "
আর একজন
টিটকারির সুরে বলল, "ভাই, এসব আজকালকার ফ্যাশন। "
কথাগুলো
শুনে প্রদ্যোত মৃদু হেসে সানগ্লাসটা চোখ থেকে নামিয়ে রাখে। তখনি সবাই প্রদ্যোতের প্রায় উপড়ে আসা মনিহীন ঘোলা ডান
চোখটা দেখে শিউরে উঠল।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন