স্বীকৃতি - কৃপাণ মৈত্র

 


বাংলার বিখ্যাত সাহিত্যিসভা আলো করে বসে আছেন কবি লেখকেরা। কবি লেখকেরা সৃষ্টি সুখ বিলিয়ে দিয়ে মিষ্টি হাসির পুরস্কার নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। ক্যামেরায় সুখমুহূর্ত বন্দি হচ্ছে

সিদ্ধার্থ নিজেকে বঞ্চিত করে তিল তিল সঞ্চয় করা অর্থে একখানা বই করেছে। তার বিশ্বাস কেবলমাত্র জহুরী তার প্রতিভার মূল্য দিতে পারেন। এত বড় লেখক যখন নিশ্চয় তার অনাদর করবেন না। সে লেখকের হাতে বইটি ধরিয়ে দিয়ে নত হয়ে পা ছুঁইলো।মৃদুস্বরে তার লেখাটি পড়ে দেখার অনুরোধ করল।তার নগদ প্রাপ্তি লেখকের সঙ্গে মিষ্টি হাসির ছবি।দারিদ্র্যের কড়া প্রহার এখন তার সুখস্মৃতির কাছে যেন কুসুমাঘাত

তিন মাস পর সিদ্ধার্থ লেখকের বাড়িতে গেল এবং তার মতামত জানতে চাইলো। লেখক স্বভাবসিদ্ধভাবে বললেন, এখনো পড়া হয়নি। পড়ে জানাবো। সিদ্ধার্থ বলল, "ওই বইটায় একটা মূল্যবান কথা লেখা আছে। বলতে পারলে বিশ হাজার টাকা।প্লিজ..."

সিদ্ধার্থ চলে গেলে লেখক অনেক খুঁজে কেজিদরে কেনা বই খাতার ক্রেতালোকটির সন্ধান করে সিদ্ধার্থের বইটি বাড়িতে আনলেন।খুঁটিয়ে পড়লেন। খুব ভালো লেখা। এক জায়গায় লেখা আছে - 'যারা সুপ্ত বীজের বৃক্ষের সম্ভাবনাকে স্বীকৃতি দিল না তারা মানুষ নয়, খুনী।'

লেখক মর্ম যন্ত্রনায় কিছুক্ষণের জন্য চোখ বন্ধ  করলেন। তিনি সিদ্ধার্থকে ডেকে পাঠালেন। তার পিঠ চাপড়ে খুব প্রশংসা করলেন। তাকে এক বড় প্রকাশকের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিয়ে বিনা পয়সায় বই ছাপা এবং রয়্যালটির ব্যবস্থা করে দিলেন। সিদ্ধার্থ  সারনাথের স্নিগ্ধতায় আপ্লুত হয়ে হাওয়ায় ভেসে সেই মহান দিনটির অপেক্ষায় রইল



কলমে - কৃপাণ মৈত্র 

 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন