আচ্ছা পৃথিবীতে কি আছে যেটা আমার?
মা , বাবা, দাদা, দিদি, ভাই, বোন নাকি স্বামী ও সন্তান!
কিন্তু সস্পর্কগুলো তো সবই সময় ও স্বার্থের সাথে যায় বদলে।
ঐ পুতুলটা যাকে জড়িয়ে ধরে নিজের ভেবে ঘুমাতাম সেটা আমার!
কিন্তু যখন একটু হলাম বড়ো দেখলাম পুতুলটা রং চটে কেমন কুৎসিত হয়ে গেছে,
পুতুলটার প্রতি কেমন একটা বিতৃষ্ণা জন্মালো,
তাহলে তো আর সে আমার হলো না, তাকে আমিই আমার হয়ে থাকতে দিলাম না।
আমার প্রিয় কুকুর রকি, মামা ছোট্ট রকিকে দিয়ে বলেছিলেন, "এটা তোমার সঙ্গী, একে খুব যত্ন করবে"।
তাই তো করতাম আমি, জানতাম সে শুধুই আমার।
একদিন রাতে হঠাৎ সে অসুস্থ হয়ে পড়ল, তারপর আমায় ছেড়ে চলে গেল চিরদিনের মতো।
আচ্ছা আমার ঐ প্রিয় গোলাপী জামাটা!
আমি যখন ক্লাস ফোরে পড়ি বাবা পুজোয় দিয়েছিলেন, ওটা তো আমারই ছিলো।
কিন্তু যখন ক্লাস ফাইভে উঠলাম কত চেষ্টা করলাম ওটা পরতে কিন্তু কিছুতেই গায়ে ঢুকলো না।
খুব কেঁদেছিলাম সেদিন, পরে জেনেছিলাম মা আমাকে লুকিয়ে ওটা তুলিকে দিয়ে দিয়েছিলেন।
এরপর ভাবলাম আমার বান্ধবী মল্লিকা সে শুধু আমার,
কিন্তু তার বিয়ের পরে সেও তো আর যোগাযোগ রাখলো না।
সেও তো আমার হলো না।
আমারও বিয়ে হলো ভাবলাম স্বামী শুধু আমার,
কিন্তু কিছু বছর পরে দেখলাম সে শুধু তার বান্ধবীদের,
সে কখনোই আমার ছিলো না।
এরপর আমার সন্তান এলো, ভাবলাম আমার সন্তানই শুধু আমার,
যখন সে বড়ো হলো পড়াশুনো শিখে মস্ত চাকরি পেল সে, আমাকে রাখলো বৃদ্ধাশ্রমে।
সেও তো আমার হলো না।
আমার শরীরটা, সে তো শুধুই আমার।
কিন্তু ডাক্তার বললেন হাইপার টেনশন, কিছুতেই কন্ট্রোল হচ্ছে না।
তারপর বললেন কিডনিটাও ঠিকঠাক কাজ করছে না,
এরপর বললেন হার্টের অবস্থাও খারাপ।
শরীরটাকেও নিজের আয়ত্বে রাখতে পারছি না,
মানে আমার শরীরটাও আমার নয়।
এরপরে বুঝলাম আমি,
হয়ত বা আমার বলে এই দুনিয়ায় কিছুই নেই।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন