পথের ঠিকানা - উৎপল গুহ

 


আমি যে অনেক অনেক দূর..

যেতে চেয়েছিলাম, যেতে চাই

অথচ ঠিক যে কতটা দূর —

আমি কিন্তু নিজেই জানি না।

 

কখনও 'আল' এর পথ সর্পিল

যতদূর দু'চোখ যায়..

দু'পাশে ধান্য সবুজের মেলা,

কিংবা কখনও সবুজ ছাপিয়ে

ঢেউ তোলে সর্ষের ফুল —

কাঁচা হলুদের— বসন্ত বেলা।

 

কখনও রাঙামাটি পথে..

দু'পাশে মহুয়ার গন্ধে স্নাত

মুগ্ধ পলাশের রক্তিম আবেগ,

কখনও বা ছায়া ছায়া পথে —

অর্জুন, পিয়াল, জারুলের ভীড়ে

ঝরে পড়া অফুরান শাল-পল্লব।

 

কখনও বা সোঁদাগন্ধী মেঠো পথ

নদীটির গ্রামীণ কুল ঘেঁষে..

চলে যায় এঁকে বেঁকে ,

দূর — আরও বহুদূর থেকে

মেঘের শীতল সজল গন্ধ

ভেসে আসে সাগরের ডাকে।

 

কখনও পাকদন্ডী - উর্ধমুখী

গা ছমছম পাহাড়ী খাদ ঘেঁষে

ছেয়ে থাকা রডোডেনড্রন ফুলে,

পাশে রেখে দেবদারু-পাইন —

আর হিম-হিম ঘন কুয়াশারা

হারিয়ে যায় স্তব্ধ অন্তহীন নীলে।

 

কখনও বা দিশেহারা সেই পথে

ঘুরে - ফিরে কাজুবন, মিলে যায়

সৈকতে – ঝাউ বীথি তলে ,

উদ্বেল তরঙ্গ আর উত্তাল..

হাওয়ার মিছিল, সাঙ্গ হয় —

কুলহারা — অথৈ-অতলে।

 

হাজার বছর ধ'রে..

দূর - দূর..বহুদূর হেঁটে,

জানা আর হ'লো কই—অজানা 

পথের - সেই শেষের ঠিকানা?

কত পথ যেতে হবে আরও

আমি যে তা নিজেও জানি না।


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন