কুমারী পূজা – কাকলী কোলে


হর থেকে দূরে একটি ছোট গ্রাম .... নাম পানসে। এই গ্রামটিতে বসতি বেশি নেই। বেশীর ভাগ মানুষ শহরেই কাজ করে সেখানেই থাকে। এই পুজোর আগে গ্রামে আসে। গ্রামটিতে অনাথ বন্ধু ক্লাব আয়োজিত একটি দূর্গা পূজা হয়।  পূজাটি ঠিক গ্রামের পূজার মতো নয়, আয়োজন বেশ ভালো। গ্রামের এক কৃতী ছেলে থাকে সুদূর আমেরিকায়, সেখান থেকে পূজার জন্য বেশ ভালো টাকা পাঠায়, তাতেই মহা আনন্দে পূজা সারা হয়। গ্রামের গরিব মানুষ দের এই চারদিন পেট ভরে খাওয়ানো হয় আর একটা নতুন কাপড় দেওয়া হয়। এই সবই করা হয় ক্লাব থেকে। ওই গ্রামের আর এক প্রান্তে এক ঝুপড়িবাসি  বৃদ্ধা পূজোয় যাবার আয়োজন করছে , আজ অষ্টমী বলে কথা। মায়ের পায়ে দেবে বলে জবা আর শিউলী, দু'চারটে বেলপাতা, সামান্য বাতাসা আর একটা কোন কালের পাঁচ পয়সা রেকাবীতে নিয়ে ঠা ঠা রোদ্দুরে চলে পুজো দিতে। কত পথ হেঁটে সে পৌঁছায় মন্ডপে। 

অষ্টমী পূজার আয়োজন চলছে বৃদ্ধা এগিয়ে দেয় রেকাবী আয়োজক ছেলেটি তখন অন্য পূজা নিতে ব্যস্ত, বৃদ্ধার পূজার থালাটি সরিয়ে রাখে পাশে, বৃদ্ধা জল ছল ছল চোখে চেয়ে থাকে মায়ের দিকে। আজ তার কোনো চিন্তা নেই মায়ের ভোগ পাবে সে, ঘরে ফেরার তাড়া নেই। আজ বড় ধুমধাম করে পূজো চলছে। কুমারী মেয়েকে সাজিয়ে আনা হয়েছে। আট বছরের ফুটফুটে মেয়ে। মেয়েটি কিছুতেই পিঁড়িতে বসতে চাইছে না, কি যেন দেখাচ্ছে আঙ্গুল তুলে, আর কাঁদছে। বাপের কোল থেকে নেমে এক ছুটে বৃদ্ধার রেকাবীর কাছে এসে খেতে থাকে বাতাসা। সবাই অবাক হয়ে দেখল সুদূর আমেরিকায় থাকা ছোট্ট মেয়েটি কান্ড, শুধু বুড়ি দেখলো ছোট্ট উমাকে হেসে হেসে বাতাসা খেতে।

2 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন